নোটিশ

বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১০

নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা কোনো ভুলই করেননি

আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হলো- ‘কোনো নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা কখনো কখনো ভুল করেননি। ইচ্ছাকৃত তো নয়ই, অনিচ্ছাকৃতও নয়।’ অর্থাৎ নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা কোনো ভুলই করেননি। (শরহে আক্বাইদে নসফী, ফিক্বহে আকবর, তাকমীলুল ঈমান, আক্বাইদে হাক্কাহ)। অর্থাৎ নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারা সকলেই হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ও মনোনীত বান্দাহগণের অন্তর্ভুক্ত। উনারা প্রত্যেকেই ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

কুরআন শরীফ-এর একাধিক স্থানে ইরশাদ হয়েছে, “আমি উনাদের (নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের) প্রতি ওহী পাঠাতাম।” (সূরা ইউসূফ : আয়াত শরীফ- ১০৯, নহল : আয়াত শরীফ- ৪৩, আম্বিয়া : আয়াত শরীফ- ৭) অর্থাৎ নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের যাবতীয় কার্যাবলীই ওহীর দ্বারা (মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক) পরিচালিত হতো।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে, “সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণ উনারা মা’ছূম বা নিষ্পাপ।” তিনি আরো বলেন, “আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণ উনারা সকলেই ছগীরা, কবীরা, কুফরী, শিরকী এবং অপছন্দনীয় কাজ হতেও পবিত্র।” তিনি বলেন, যারা নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের ভুল সম্পর্কে বলে থাকে, আক্বাইদ সম্পর্কে অজ্ঞতা ও সঠিক ইতিহাস না জানার কারণেই তারা তা বলে থাকে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারীদেরকে রাবী বলা হয়। এই রাবীগণ উনাদের মধ্যে যাঁরা প্রথম শ্রেণীর, উনাদেরকে বলা হয় ছিক্বাহ রাবী। হাদীছ বিশারদগণ উনারা, ছিক্বাহ রাবী হওয়ার জন্য যে মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন, তার মধ্যে মূল বিষয় হচ্ছে- (১) আদালত ও (২) জবত। জবত হচ্ছে- প্রখর স্মরণশক্তি। তা এমন যে, একবার শুনলে আর ভুলে না।

আর আদালত-এর মধ্যে চারটি শর্ত রয়েছে। তার মধ্যে প্রধান হলো দুটি। যথা- (ক) তাক্বওয়া, (খ) মুরুওওয়াত।
(ক) তাক্বওয়া হচ্ছে- কুফরী, শিরকী, বিদয়াতী, ফাসিকী মিথ্যা কথা ও মিথ্যা বলা ইত্যাদি কাজ থেকে বেঁচে থাকার সাথে সাথে কবীরা গুনাহ থেকে, এমনকি ছগীরাহ গুনাহও বার বার করা থেকে বেঁচে থাকা। (খ) আর মুরুওওয়াত হচ্ছে- অশালীন, অশোভনীয়, অপছন্দনীয়, এমনকি দৃষ্টিকটু কাজ ও কথা থেকে বিরত থাকা। যেমন- রাস্তায় হেঁটে হেঁটে খাদ্য খাওয়া, রাস্তায় অট্টহাস্য করা, চিৎকার করা, রাস্তা-ঘাটে যেখানে সেখানে ইস্তিঞ্জা করা ইত্যাদি। (তাদরীবুর রাবী, মুকাদ্দামাতুশ শায়খ, মীযানুল আখবার)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, এখন ফিকিরের বিষয় এই যে, হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী ছিক্বাহ রাবী যদি এত গুণ ও যোগ্যতাসম্পন্ন এবং তাক্বওয়াধারী হন অর্থাৎ হাদীছ বিশারদ উম্মতে হাবীব উনার নিকট যদি ছিক্বাহ রাবী হিসেবে হাদীছ বর্ণনাকারী হওয়ার জন্য ছগীরাহ গুনাহ বার বার না করা ও দৃষ্টিকটু সাধারণ অপছন্দনীয় কাজ করা ও কথাও না বলা শর্ত হয়, তাহলে যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হবেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম বর্ণনা করবেন, উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি কি মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন বা উনাদের ক্ষেত্রে কতটুকু মা’ছূম ও মাহফুজ হওয়া নির্দিষ্ট করেছেন তা অনুধাবনীয়।