নোটিশ

শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১১

সাইয়্যিদুল খুলাফা, আল-মানসুর হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার অনবদ্য অভূতপূর্ব তাজদীদ “আত-তাক্বউইমুশ শামসি” বা সৌর ক্যালেন্ডার

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে আ'যম, গাউছুল আ'যম, আওলাদে রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সুযোগ্য আওলাদ ছানীয়ে মুজাদ্দিদে আ'যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, খলীফাতুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহযাদা হুজুর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এক অনবদ্য যুগান্তকারী তাজদীদ "আত-তাক্বউইমুশ শামসি" অর্থাৎ সৌর বৎসর ক্যালেন্ডার।


"
আত-তাক্বউইমুশ শামসি" এর উদ্দেশ্য এবং গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে এর পার্থক্য গুলি পড়ুন:

·         উদ্দেশ্য:
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, "তোমরা কাফির, মুশরিক, তথা ইহুদী-নাছারা ও মুশরিকদেরকে অনুসরণ অনুকরণ করোনা। এছাড়াও হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, "যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।" আর সে কারণেই যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদুয যামান, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক দোয়া এবং পৃষ্ঠপোষকতায় উনার খাছ আওলাদ আওলাদে রসূল, কুতুবুল আলম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সঙ্গে গভীর নিছবতের কারণে এই মুবারক ক্যালেন্ডার রচনা করেন। যেন কাফিরদের গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ না করে এই মুবারক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা যায় অর্থাৎ কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর পূর্ণ অনুসরণ করা যায়।

গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: ইউরোপের খৃস্টানরা ২১শে মার্চ ইস্টার দিবস পালন করতো (যেদিন দিন-রাত সমান হয়)। কিন্তু দেখা গেলো জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করলে ইস্টার ডে চলে আসে ১২ই মার্চ। ফলে তারা তাদের এই ইস্টার ডে পালনের জন্যই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার সংশোধন করে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার করে। উল্লেখ্য ইস্টার ডে হচ্ছে কাফিরদের কাছে সেই দিন, যেদিন তারা মনে করে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম নাকি ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার তিনদিন পর এই দিনে আবার ফিরে আসেন। নাঊযুবিল্লাহ!


·         প্রবর্তন এবং নামকরণ:
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: এই সৌর ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন এবং নামকরণ করেছেন খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।

গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: খৃস্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক, দুশ্চরিত্র (যার বিবাহ বহির্ভূত একটি সন্তান ছিল) পোপ গ্রেগরীর নামানুসারে।


·         উৎস:
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: এই সৌর ক্যালেন্ডার পৃথিবীর কোন ক্যালেন্ডারের অনুকরণে তৈরী না করে বরং খাছ খোদায়ী মদদে ইলহাম, ইলকার মাধ্যমে তৈরী করা হয়েছে।

গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: কুসংস্কারাচ্ছন্ন রোমানদের ক্যালেন্ডার থেকে।


·         শুরুর সময়কাল:
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বিছাল শরীফ-এর বছর ১১ হিজরী এবং সে বছরের পবিত্র ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ, মাসের ১ম দিন থেকে এই আত-তাক্বউইমুশ শামসি ক্যালেন্ডারের ০ বছর ১ম মাস ১ম দিন শুরু হয়েছে। (জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৮ই জুন এবং গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১১ই জুন ৬৩২ ঈসায়ী।)

গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: জুলিয়ান ক্যালেন্ডারকে সংশোধন করে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার করা হয়েছে। ফলে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের শেষ তারিখ ছিল ৪ঠা, অক্টোবর, ১৫৮২, বৃহস্পতিবার আর ১০ দিন সংশোধন করে ১৫ই অক্টোবর, ১৫৮২ শুক্রবার থেকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ১ম তারিখ গণনা করা হচ্ছে।


·         শুরুর সময়কালের তাৎপর্য:
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই শরীফ, সোমবার শরীফ বিছাল শরীফ লাভ করেছেন। ফলে শামসী ক্যালেন্ডার শুরু করা হয়েছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফ-এর বৎসর থেকে এবং এই ক্যালেন্ডারের ১ম বৎসরের ১২ তারিখ হচ্ছে মুবারক ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ, সোমবার।

গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের শুরুর কোন তাৎপর্য নেই বরং গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের মূল উৎস হচ্ছে রোমান ক্যালেন্ডার। অর্থাৎ রোমান ক্যালেন্ডার থেকে জুলিয়ান এবং জুলিয়ান থেকে হয়েছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। আর এই রোমান ক্যালেন্ডার ছিল কুসংস্কারে ভরা। তারা জোড় নাম্বারকে অশুভ মনে করতো। ফলে মাস গণনা করতো ২৯ ও ৩১ দিনে। ৩০ দিনে কোন মাস ছিল না। ব্যতিক্রম ছিল শুধু ফেব্রুয়ারী মাস যা ২৮ দিনে গণনা করা হতো। বর্তমান গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার এখনো ২৮ দিন থেকে মুক্ত নয়।


·         বৎসরের মাসের নামকরণ:
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: এই ক্যালেন্ডারের মাসের নামকরণ করা হয়েছে আরবী পদ্ধতি অনুযায়ী যেমন আরবীতে প্রথমকে বলা হয় আউয়াল। এভাবে প্রথম মাস থেকে ১২তম মাস পর্যন্ত নাকরণ করা হয়েছে- আউয়াল, ছানী, ছালিছ, রবি', খামিছ, সাদিছ, সাবি', সামিন, তাসি, 'শির, হাদি আ'শির এবং সানী আ'শির এভাবে।

গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: এই ক্যালেন্ডারের ৫টি মাসের নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে, ৫টি মাসের নামকরণ হয়েছে রোমান শব্দ থেকে আর দুইটি মাসের নামকরণ করা হয়েছে দুই রোমান সম্রাটের স্মরণে।


·         দিনের নামকরণ
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: আরবী মাসের প্রতিটি দিনের নামানুসারেই নামকরণ করা হয়েছে।
গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: রোমানরা গ্রহের সাথে দেবতার সম্পর্ক করতো এভাবে
Sunday- Day of God (বিধাতার দিন) Monday- Moon's day (চাঁদের দেবীর সাথে মিলিয়ে)
Tuesday - দেবতা Tyr এর নাম থেকে
Wednesday - Mercury দেবতার নাম থেকে
Thursday - Thor দেবতার নাম থেকে
Friday - দেবী Frigg এর নাম থেকে
Saturday - শনি গ্রহের (Saturn) সম্মানে।
মুসলমানদের জন্য কখনোই এভাবে গ্রহ-নক্ষত্র, দেব-দেবীর নামানুসারে দিনের নাম ব্যবহার করা উচিত নয়।


·         মাস গণনা পদ্ধতি
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: প্রতিটি বিজোড়তম মাস ৩০ দিনে এবং জোড়তম মাসগুলো ৩১ দিনে শুধু ব্যতিক্রম হবে ১২তম মাস। কিন্তু লিপইয়ারে (৪ দ্বারা বিভাজ্য সালগুলো) ৩১ দিনে হবে। তবে প্রতি ১২৮ বছরে ১টি লিপইয়ার বাদ যাবে।
গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: ফেব্রুয়ারী, এপ্রিল, জুন, সেপ্টেম্বর, নভেম্বর এই মাসগুলো বাদে বাকী সব মাস ৩১ দিনে। আর এপ্রিল, জুন, সেপ্টেম্বর, নভেম্বর মাস ৩০ দিনে। কিন্তু ফেব্রুয়ারী মাস ২৮ দিনে। তবে লিপইয়ারে (৪ দ্বারা বিভাজ্য সালগুলো) ২৯ দিনে হবে। প্রতি ১০০ বছরে ১টি লিপইয়ার বাদ যাবে, আবার প্রতি ৪০০ বছরে অতিরিক্ত ১টি লিপইয়ার যোগ হবে।


·         বাৎসরিক বিচ্যুতি
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: ০.২ সেকেন্ডেরও কম।
গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: প্রায় ২৭ সেকেন্ড।


·         লিপইয়ার পদ্ধতি
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: বছরের শেষের দিন লিপইয়ার হওয়াতে পরিবর্তন লক্ষণীয় নয়। কেননা নতুন বছর শুরু হয়ে যায়।
গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: ফেব্রুয়ারী মাস ২৮ দিনে, লিপইয়ারে ২৯ দিনে। বছরের দ্বিতীয় মাসে লিপইয়ার হওয়াতে বাকী ১০ মাসই ১ দিন পিছিয়ে যায়।


·         অনুসরণের ফল
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: এই ক্যালেন্ডারে কাফিরদের অনুসরণ হয় না বরং মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্মরণ হয়। ফলে মুসলমানগণ রহমত, বরকত, সাকীনা লাভ করবে।
গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: কাফিরদের তৈরী ক্যালেন্ডার ফলে শুধু কাফিরদের স্মরণ হয় যা মুসলমানদের জন্য হারাম এবং এর অনুসরণ পরিত্যাজ্য। এর অনুসরণে কল্যাণ নেই বরং অকল্যাণ রয়েছে।


·         মুসলমানগণের শ্রেষ্ঠত্ব
আত-তাক্বউইমুশ শামসি: কাফিররা মুসলমানদের অনুসরণ করবে, কারণ এদের সৃষ্টি হয়েছে মুসলমানদের খিদমতের জন্য। এই শামসি ক্যালেন্ডার তৈরীর ফলে এর ব্যাপক প্রচার প্রসার হলে ধীরে ধীরে কাফিররা এর অনুসরণ করবে। মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব ও আভিজাত্য বৃদ্ধি পাবে।
গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার: মুসলমানগণ কাফিরদের অনুসরণ এবং এর অনুসরণের বদ তাছির থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন এবং কাফিররা তাদের ক্যালেন্ডারের ত্রুটিগুলো অনুধাবন করবে এবং হীনমন্যতায় ভুগবে।

 তথ্যসূত্রঃ আত-তাক্বউইমুশ শামসি