“যে সব মাওলানা টিভি চ্যানেলে অনুষ্ঠান করে তারাই উলামায়ে ‘ছূ’ তথা আল্লাহ
পাক-এর যমীনে সর্বনিকৃষ্ট প্রাণী।”
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও
মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আ’ইম্মাহ, কুতুবুল আলম,
আওলাদে
রসূল, সাইয়্যিদুনা
ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এক ক্বওল
শরীফ-এ এসব কথা বলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, উলামায়ে ‘ছূ’রা টেলিভিশনকে
পানি ও আয়নার সাথে তুলনা করে বলে থাকে যে, টেলিভিশনে যা
দেখানো হয় তা হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত ছবি নয়। (নাঊযুবিল্লাহ)
মূলতঃ তারা এতটাই জাহিল যে, শরীয়তের
দৃষ্টিতে কোনটা ছবি আর কোনটা ছবি নয় তাই তারা জানে না।
ছবির শরীয়তসম্মত সংজ্ঞা উল্লেখ করে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আলোর প্রতিফলন
বা প্রতিসরণ ব্যতীত অন্য যে কোন পদ্ধতিতেই হোক না কেন, যদি কোন বস্তু
বা প্রাণী (যেমন মানুষ, পশু-পাখি, মাছ ইত্যাদি) যে
কোন স্থানে আকার আকৃতিতে দৃশ্যমান হয়, তবে সেই আকার আকৃতিটিকে শরীয়তের
দৃষ্টিতে ঐ বস্তু বা প্রাণীর ছবি বলে। পক্ষান্তরে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন বস্তু বা
প্রাণী (যেমন, মানুষ, পশু-পাখি, মাছ ইত্যাদি) যেখানেই যে অবস্থায় থাকুক আলোর
প্রতিফলন বা প্রতিসরণ বা উভয়ের মাধ্যমে যদি তা যে কোন স্থানে আকার আকৃতিতে
দৃশ্যমান হয় তবে সেই আকার আকৃতিটি ছবি নয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কোন জানদার বা
প্রাণীর ছবি আঁকা, ছবি তোলা, ছবি তৈরি করা, রাখা, দেখা, ছাপান শরীয়ত অনুযায়ী
সম্পূর্ণ নাজায়িয, হারাম। আর টেলিভিশনে যা দেখানো হয়, তা আলোকচিত্রেরই
উন্নত সংস্করণ।
অনেকে বলে থাকে যে, ছবি আঁকা হারাম করা হয়েছে কিন্তু তোলা সম্বন্ধে
তো এ রকম কোন উল্লেখ নেই এবং তাদের মতে আঁকা ও তোলা এক নয়।
এর জবাবে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, তোলা
প্রকৃতপক্ষে আকারই বৈজ্ঞানিক রূপ। কেননা কোন বস্তু বা প্রাণীর ছবি হাতে তৈরি করাকে
আঁকা বলে। আর আলোর দ্বারা, যন্ত্রের দ্বারা রাসায়নিক পদ্ধতিতে বা যে কোন
প্রকারের আধুনিক পদ্ধতিতে কোন বস্তু বা প্রাণীর ছবি তৈরি করাকে তোলা বলে, কাজেই হাতে আঁকা
বা তোলার মধ্যে মূলতঃ কোন পার্থক্যই নেই। পার্থক্য শুধু আধুনিকতার।
অনেকে আরো বলে থাকে যে, টেলিভিশনে অনেক ইসলামী প্রোগ্রাম হয় বা
ওয়াজ ভিডিও করে দেখানো হয়, তাতে কি আমাদের ইল্মে দ্বীন হাছিল হয় না?
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক
নিজেই উল্লেখ করেছেন যে, মদ ও জুয়ার মধ্যে ফায়দা রয়েছে। মদ পান করলে
স্বাস্থ্য ভাল হয়, জুয়া খেললে রাতারাতি অনেক টাকা পাওয়া যায়। তথাপি এগুলোর মধ্যে ফায়দার
চেয়ে গুনাহ বেশি বলে এগুলোকে হারাম করা হয়েছে। সুতরাং মদ ও জুয়ার মধ্যে উপকারিতা
থাকা সত্ত্বেও এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়, এগুলো হারাম। মদ ও জুয়ার মধ্যে
উপকারিতার জন্য কেউ যদি এটাকে জায়িয মনে করে তবে সে কুফরী করল। ঠিক তদ্রুপ ছবির
উপকারিতার জন্য যদি কেউ এটাকে (ছবিসহ ইসলামী অনুষ্ঠানকে) জায়িয মনে করে, তবে সেও কুফরী
করল।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, টেলিভিশন,
ভিসিআর,
ভিসিপি,
ভিডিও
ইত্যাদির মধ্যে যদি ইসলামী প্রোগ্রাম হয়ও কিন্তু তার মূলই হল ছবি যা স্পষ্টত নাজায়িয
ও হারাম। (এছাড়াও বর্তমানে টেলিভিশনের অন্যান্য অশ্লীলতার কারণেও এগুলো শরীয়তের
দৃষ্টিতে হারামের পর্যায়ে পড়ে) কেননা আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ ফরমান,
“তোমরা
সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না।” অর্থাৎ ভালোকে খারাপের সাথে মিশ্রিত
করো না। অন্যত্র আল্লাহ পাক বলেন, “তোমরা কিতাবের কিছু অংশ মানবে, আর কিছু অংশ
মানবে না, তা হবে না।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, টিভিতে বা
ভিসিআর এ তথাকথিত ইসলামী বা জ্ঞানমূলক অনুষ্ঠান প্রচার বা দেখার মধ্যে বাহ্যত কিছু
উপকারিতা থাকলেও যেহেতু এসবের মূলই হচ্ছে ছবি; যার ফায়দার চেয়ে
গুনাহই বড়। তাই টিভি এবং ভিডিওতে কোন অনুষ্ঠান করা বা দেখা অবশ্যই হারাম ও
নাজায়িয।