সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন,
নূরে
মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন,
‘তোমরা
খুশি মনে, ইখলাছ বা আন্তরিকতার সাথে কুরবানী কর।’
প্রত্যেক ছাহিবে নিছাব বা সামর্থ্যবান পুরুষ বা মহিলার জন্যই খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে কুরবানী করা
ওয়াজিব।
ইখলাছবিহীন কোন আমলই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কবুলযোগ্য নয়।
তাই প্রত্যেক কুরবানীদাতার জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে-
একমাত্র খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাস্সাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দী হাছিলের লক্ষ্যেই কুরবানী
করা।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ,
মুজাদ্দিদে
আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল,
সাইয়্যিদুনা
ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘সূরা কাওছার’-এর মধ্যে সামর্থ্যবান
বান্দা-বান্দীকে কুরবানী করার জন্য সরাসরি নির্দেশ প্রদান করেছেন। যেমন, খালিক্ব মালিক রব
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, আপনার রব তায়ালা উনার সন্তুষ্টির জন্য নামায আদায়
করুন এবং কুরবানী করুন।
আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন,
নূরে
মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরবানীর
গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে ইরশাদ করেন, সামর্থ্য থাকার পরও যে ব্যক্তি কুরবানী করে না;
সে যেন
ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। অর্থাৎ সামর্থ্য থাকার পরও যারা কুরবানী করে না তাদের উপর
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন
নাবিইয়ীন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা কঠিন অসন্তুষ্ট হন। নাঊযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন, শরীয়তের
ফায়সালা হলো, পবিত্র যিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ ছুবহে সাদিক থেকে ১২ তারিখ মাগরিব পর্যন্ত
সময়ে যে পুরুষ বা মহিলা নিছাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হবে তাদের প্রত্যেকের জন্যই কুরবানী
করা ওয়াজিব হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন, সকলের
উচিত কেবলমাত্র খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দির উদ্দেশ্যে কুরবানী
করা। এর মধ্যে যেন কোন রকম গাইরুল্লাহ বা রিয়া তথা লৌকিকতা স্থান না পায়।
অথচ আজকাল
দেখা যায় অনেকে কুরবানীর পশুর, কুরবানী করার, গোশত কাটা ও গোশত
বণ্টন করাসহ সমস্ত কিছুই ভিডিও করে লোক প্রদর্শনের জন্য। নাউযুবিল্লাহ! যা প্রকৃতপক্ষে
রিয়ার অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ কুরবানী অগ্রহণযোগ্য হওয়ার কারণ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন, মহান
আল্লাহ পাক তিনি ‘সূরা বাইয়্যিনাহ’-এর ৫ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তাদেরকে (ঈমানদারদেরকে)
শুধু এ নির্দেশই দেয়া হয়েছে যে, তারা যেন খালিছভাবে অর্থাৎ ইখলাছের সাথে খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করে।”
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই সকল আমল কবুল করবেন না; যা ইখলাছের সাথে
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য করা না হয়।”
(নাসায়ী
শরীফ)
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের আকৃতি বা ধন-সম্পদের প্রতি লক্ষ্য করেন না,
বরং
তোমাদের অন্তরের (ইখলাছের) দিকে লক্ষ্য করেন।” (বুখারী শরীফ)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন, ইখলাছবিহীন
কোন ইবাদত-বন্দিগীই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কবুলযোগ্য নয়। তাই হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ
হয়েছে, আখিরী
রসূল, হাবীবুল্লাহু
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইখলাছের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে
বলেন, “ক্বিয়ামতের
দিন তিনজন লোককে প্রথমে বিচারের জন্য আনা হবে। প্রথম যে ব্যক্তিকে আনা হবে,
সে হলো
একজন শহীদ। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, হে ব্যক্তি! তোমাকে আমি এত শক্তি-সামর্থ্য দিলাম,
তা দিয়ে
তুমি কি করেছ? সে বলবে, আল্লাহ পাক! আমি জিহাদ করতে করতে আপনার জন্য শহীদ
হয়েছি। আল্লাহ পাক তিনি বলবেন, মিথ্যা কথা, তুমি আমার জন্য জিহাদ
করনি। মানুষ তোমাকে বড় পালোয়ান বা শক্তিশালী বলবে, সে জন্য তুমি জিহাদ
করেছ, যুদ্ধ
করেছ। মানুষ তোমাকে শহীদ বলেছে। (তোমার বদলা তুমি পেয়েছ) তখন খালিক্ব মালিক রব মহান
আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের বলবেন, হে হযরত ফেরেশ্তা
আলাইহিমুস সালামগণ! এ লোকটাকে চুলে ধরে জাহান্নামে নিক্ষেপ করুন, তাই করা হবে।
দ্বিতীয় আরেকজন লোককে আনা হবে, যাকে ইলম দান করা
হয়েছে এবং সে তা অন্যকে শিক্ষা দিয়েছে এবং কুরআন শরীফ ছহীহ শুদ্ধভাবে পড়তে শিখেছে।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে বলবেন, হে আলিম ও ক্বারী
ছাহেব! তোমাকে এত ইলম দেয়া হয়েছিলো, শুদ্ধ করে কুরআন শরীফ পাঠ করতে শিক্ষা দেয়া
হয়েছিলো, তুমি কি করলে? সে ব্যক্তি বলবে, আয় আল্লাহ পাক! আমি
আপনার জন্য ইলম শিক্ষা করেছি এবং তা অন্যকে শিক্ষা দিয়েছি, আর আপনার জন্যই আমি
কুরআন শরীফ শুদ্ধ করে পাঠ করেছি।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলবেন, মিথ্যা কথা। বরং
মানুষ তোমাকে বড় আলিম, বড় ক্বারী ছাহেব বলবে, সে জন্যেই তুমি ইলম
অর্জন করেছ, কুরআন শরীফ শুদ্ধ করে তিলাওয়াত করতে শিখেছ। কাজেই মানুষ তোমাকে বড় আলিম,
বড় ক্বারী
ছাহেব বলেছে (তোমার বদলা তুমি পেয়েছ)। তখন আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস
সালাম উনাদের বলবেন, হে হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালামগণ! আপনারা এ লোকটাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ
করুন। তখন তার চুল ধরে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এরপর তৃতীয় আরেকজনকে আনা হবে, যাকে অনেক সম্পদ
দান করা হয়েছে। তাকে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলবেন, হে ব্যক্তি তোমাকে
আমি দুনিয়াতে অনেক সম্পদের মালিক করেছিলাম, তার বিনিময়ে তুমি
কি আমল করলে? সে ব্যক্তি বলবে, আয় আল্লাহ পাক! আমি আপনার পছন্দনীয় এমন কোন পথ নেই;
যে পথে
দান করিনি। অর্থাৎ আপনি যতগুলো রাস্তা পছন্দ করতেন মসজিদ, মাদ্রাসা,
লঙ্গরখানা,
ইয়াতীমখানা,
গরীব-মিসকীন,
রাস্তাঘাট
ইত্যাদি সমস্ত ক্ষেত্রেই আমি কমবেশি দান করেছি। কোন প্রার্থীকে আমি খালি হাতে ফিরিয়ে
দেইনি। সবাইকে কমবেশি দান করেছি- একমাত্র আপনার সন্তুষ্টির জন্য।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলবেন, মিথ্যা কথা। তুমি
এ জন্য করেছো যে, লোকে তোমাকে দানশীল বলবে, তোমাকে তা বলা হয়েছে। খালিক্ব মালিক রব
মহান আল্লাহ পাক তিনি তখন বলবেন, হে হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালামগণ! এ দানশীল ব্যক্তিকে
জাহান্নামে নিক্ষেপ করে দিন। তখন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা তাকে চুলে ধরে
জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন, বর্ণিত
হাদীছ শরীফ-এর মাধ্যমে এটাই প্রতিভাত হয় যে, ইখলাছ ব্যতীত পাহাড়সম
আমলও কোন উপকারে আসবে না। তাই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রেযামন্দী হাছিল
করতে হলে অবশ্যই অন্তরে ইখলাছ পয়দা করতে হবে। কেননা, ইখলাছ অর্জন করা
ফরয। আর সেজন্য হক্কানী-রব্বানী শায়খ বা মুর্শিদ উনার নিকট বাইয়াত হয়ে, ছোহবত ইখতিয়ার করে
জরুরত আন্দাজ ইলমে তাছাউফ অর্জন করাও ফরয।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন, খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা পশুর কোন কিছুই গ্রহণ করেন না। এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক
তিনি বলেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট গোশত ও রক্ত কোনটাই পৌঁছেনা
বরং তোমাদের তাকওয়া বা অন্তরের বিশুদ্ধতা অথবা ইখলাছ পৌঁছে থাকে। অর্থাৎ উনারা দেখেন,
কে উনাদের
সন্তুষ্টির জন্য উনাদের নির্দেশ মুতাবিক কুরবানী করলো। আর কে গাইরুল্লাহ’র জন্য নিজের খেয়াল-খুশি
মতো কুরবানী করলো।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি
বলেন, মূলকথা
হলো, প্রত্যেক
ছাহিবে নিছাব বা সামর্থ্যবান পুরুষ বা মহিলার জন্যই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক
উনার ও উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন,
নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি
হাছিলের লক্ষ্যে কুরবানী করা ওয়াজিব। কাজেই সামর্থ্য থাকার পরও যারা কুরবানী করবে না
তারা কবীরা গুনাহে গুনাহগার হওয়ার সাথে সাথে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার
ও উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন,
নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অসন্তুষ্টির
পাত্র হবে।