নোটিশ

সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১০

আশূরার মাহাত্ম্য ও সংশ্লিষ্ট বিশেষ ঘটনাসমূহ

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, বারোটি মাসের মধ্যে চারটি হারাম বা সম্মানিত মাস। তন্মধ্যে ‘মুহররমুল হারাম’ হচ্ছে অন্যতম তাৎপর্য ও ফযীলতপূর্ণ মাস। আগত মাসটিই ‘মুহররমুল হারাম’ যা সকলের জন্যই রহমত, বরকত, ছাকীনা ও মাগফিরাত-এর মাস। তাই সকলের জন্যই দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে- মুহররমুল হারাম মাসে বেশি বেশি ইস্তিগফার করে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি হাছিলের কোশেশ করা।

আরবী বছরের প্রথম মাস মুহররম। আরবী বারোটি মাসের মধ্যে যে চারটি মাসকে হারাম বা সম্মানিত বলে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এ ঘোষণা করা হয়েছে, মুহররম মাস তার মধ্যে অন্যতম। আসমান-যমীন সৃষ্টিকাল হতেই এ মাসটি বিশেষভাবে সম্মানিত হয়ে আসছে।

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা মুহররম মাসকে এবং এর মধ্যসি'ত আশূরার দিনকে সম্মান কর। যে ব্যক্তি মুহররম মাস তথা আশূরার দিনকে সম্মান করবে, আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত দ্বারা সম্মানিত করবেন এবং জাহান্নাম থকে মুক্তি দান করবেন।”

মুহররম মাসেরই দশ তারিখ অর্থাৎ ১০ই মুহররম “আশূরা” দিনটি বিশ্বব্যাপী এক আলোচিত দিন। সৃষ্টির সূচনা হয় এই দিনে এবং সৃষ্টির সমাপ্তিও ঘটবে এ দিনেই। বিশেষ বিশেষ সৃষ্টি এ দিনেই করা হয় এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা এ দিনেই সংঘটিত হয়। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুরু করে প্রথম নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম পর্যন্ত প্রায় সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোনো না কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা এদিনে সংঘটিত হয়েছে। সঙ্গতকারণেই এ দিনটি সবার জন্য এক মহান আনুষ্ঠানিকতার দিন, রহমত, বরকত, ছাকীনা, মাগফিরাত হাছিল করার দিন।

এ দিনেই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মর্যাদা, সম্মান ও খুছূছিয়ত ও হাবীবুল্লাহ হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়।
এ দিনে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার দোয়া কবুল করা হয়।
এ দিন মহান আল্লাহ পাক রব তায়ালা তিনি হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম উনাকে আকাশে তুলে নেন।
এ দিন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিস্তিকে জুদি পাহাড়ে ভিড়িয়েছিলেন।
এ দিন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত শরীফ হয় এবং এই দিন উনাকে খলীল উপাধি দেয়া হয় এবং উনাকে নমরূদের আগুন থেকে বের করে আনা হয় অর্থাৎ হিফাযত করা হয়।
এ দিন হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়।
এ দিন হযরত আইয়ূব আলাইহিস সালাম তিনি অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করেন।
এ দিন হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার সাথে মহান আল্লাহ পাক তিনি কথা বলেছিলেন এবং তাওরাত শরীফ নাযিল করেছিলেন। এ দিনেই হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ও উনার সম্প্রদায় লোহিত সাগর পার হয়েছিলেন।
এ দিন হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম তিনি মাছের পেট থেকে বের হয়েছিলেন।
এ দিনই হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
এ দিনেই মহান আল্লাহ পাক তিনি দুনিয়া সৃষ্টি করেন এবং এ দিনেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।
এ দিনেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম যমীনে বৃষ্টি নাযিল করেন।
এ দিনেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি রহমতসহ সর্বপ্রথম যমীনে নাযিল হন।

মূলকথা হলো- মুহররমুল হারাম মাস সকলের জন্যই রহমত, বরকত, ছাকীনা ও মাগফিরাত-এর মাস। তাই সকলের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে মুহররমুল হারাম মাসে বেশি বেশি ইস্তিগফার করে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি হাছিলের কোশেশ করা।