হে আমার হাবীব! আপনি উম্মতদেরকে বলুন, তোমরা যদি আল্লাহ্ পাক-এর মুহব্বত প্রত্যাশী হও; তবে আমার ইত্বায়াত বা অনুসরণ-অনুকরণ কর। তাহলে আল্লাহ্ পাক তোমাদেরকে ভালবাসবেন। তোমাদের গুনাহ্খাতা সমূহ ক্ষমা করে দিবেন এবং আল্লাহ্ পাক তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু হয়ে যাবেন।” (সূরা আলে ইমরান-৩১)
আর হাদীছ শরীফে সাইয়িদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “যে ব্যক্তি আখিরী যামানায় আমার একটি সুন্নতকে পালন করবে, সে ব্যক্তি একশত শহীদের সমান ছওয়াব পাবে।” (বাইহাক্বী, মিশকাত)
উপরোক্ত পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াতে কারীমাসমূহ এবং হাদীছ শরীফের মাধ্যমে সুন্নত পালনের ফাযায়িল-ফযীলত সমন্ধে বুঝতে পারলাম।
আর সুন্নত পালন না করার ভয়াবহতা সমন্ধে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “আমার প্রত্যেক উম্মত বেহেশ্তে যাবে একমাত্র সেই ব্যক্তি ব্যতীত যে আমাকে অস্বীকার করেছে। প্রশ্ন করা হলো, কে এই অস্বীকারকারী? তিনি বললেন, যে আমাকে অনুসরণ করলো, সে বেহেশ্তে যাবে, আর যে ব্যক্তি আমাকে অনুসরণ করলো না, সেই ব্যক্তি হচ্ছে অস্বীকারকারী, সে জাহান্নামে যাবে।” (বুখারী শরীফ)
আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “যে আমার সুন্নতকে তরক (অস্বীকার) করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”(বুখারী, মুসলিম)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফের মাধ্যমে আমরা সুন্নত পালন না করার ভয়াবহতা সমন্ধে জানতে পারলাম।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ যে, ইছমিদ সুরমা চোখে ব্যবহার করা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
ইছমিদ সুরমা
মূলতঃ চোখে সুরমা ব্যবহার করা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। তিনি রাতে ঘুমানোর আগে চোখ মুবারকে সুরমা ব্যবহার করতেন।
এ প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়াল আনহু হতে একটি হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি সুরমাদানি ছিলো। তিনি ঘুমানোর পূর্বে তা থেকে প্রত্যেক চোখে তিনবার সুরমা ব্যবহার করতেন। আর আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ছিল ইছমিদ সুরমা। এ প্রসঙ্গে হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত আছে, “রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ‘ইছমিদ’ নামক সুরমা ছিলো। তিনি ঘুমানোর পূর্বে প্রত্যেক চোখে তিনবার লাগাতেন।” (শামায়িলে তিরমিযী)
মূলতঃ ‘ইছমিদ’ নামক সুরমার বহুবিধ উপকারিতার কথা জানা যায়। হাদীছ শরীফে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমাদের সুরমার মধ্যে ‘ইছমিদ সুরমা’ সর্বোত্তম। যা চোখের দৃষ্টিশক্তিকে সতেজ করে এবং চোখের পাতা উজ্জল করে। এতদ্ব্যতীতও সুরমা ব্যবহারে মন, মেধা শক্তিশালী হয় এবং চোখ সকল প্রকার রোগমুক্ত থাকে।
সুরমা ব্যবহারের নিয়ম:
হাদীছ শরীফ থেকে জানা যায়। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেজোড় সংখ্যায় সুরমা লাগাতেন, প্রত্যেক চোখে তিনবার অথবা এক চোখে তিনবার এবং অপর চোখে দু’বার।
মূলতঃ মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফে ‘আজওয়া খেজুর ও ইছমিদ সুরমা’ পাওয়া যায়। আমাদের দেশ হতে প্রতিবছর অনেক লোক হজ্জব্রত পালন উপলক্ষে পবিত্র মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফে গমন করে থাকেন। তাদের প্রত্যেকের উচিত সুন্নত পালনের লক্ষ্যে আজওয়া খেজুর এবং ইছমিদ সুরমা নিয়ে আসা। ফলশ্রুতিতে তারাও আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দু’টি সুমহান সুন্নত পালন করে অশেষ নেকীর ভাগীদার হতে পারবেন এবং তাদের ওসীলায় আরও অনেক মুসলমান নর-নারী এই মহান দু’টি সুন্নত পালনের সুযোগ পাবেন। (আমীন)