নোটিশ

শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০১১

ইসলামের নামে ‘হরতাল’করা সম্পূর্ণই হারাম

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আযম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করোনা। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়কে অনুসরণ করবে সে তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। ইসলামের নামে হরতালকরা সম্পূর্ণই হারাম। কারণ হরতালের কারণে একদিক থেকে যমীনে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি হয়; আরেক দিক থেকে বিধর্মীদের নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা হয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- যমীনে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারী ও বিজাতীয় নীতি হরতাল পালন করা থেকে বেঁচে থাকা।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যেই উত্তম আদর্শ রয়েছে।(সূরা আহযাব/২১) অর্থাৎ তিনিই অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং উনার তর্জ-তরীক্বা, নিয়ম-পদ্ধতি, অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। উনার খিলাফ কোনো কাজই করা যাবে না। তাই আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র আরো বলেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন (নিয়ম-নীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।(সূরা আলে ইমরান/৮)

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে- হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, একদিন হযরত উমর ইবনে খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, (ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমরা ইহুদীদের নিকট থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, ওটার কিছু আমরা লিখে রাখবো কি? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তোমরাও কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছো? যে রকম ইহুদী নাছারারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি তোমাদের নিকট পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার দ্বীন নিয়ে এসেছি। হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনিও যদি দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে উনাকেও আমার অনুসরণ করতে হতো।(মুসনদে আহমদ, বায়হাক্বী)

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, সুতরাং উক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ হতে বুঝা গেল যে, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস ছাড়া অন্য কোন বিজাতীয় পন্থার অনুসরণ করা হারাম।

হরতালশব্দের অর্থ বিশৃঙ্খলা, অত্যাচার, স্বেচ্ছাচার, অবাধ্যতা, অরাজকতা, প্রতিবন্ধকতা, প্রতিরোধ ইত্যাদি অর্থাৎ এক কথায় ফাসাদ সৃষ্টি করা। হরতালের ব্যাখ্যায় বলা হয়, বিক্ষোভ প্রকাশের জন্য যানবাহন, হাটবাজার, দোকানপাট, অফিস-আদালত ইত্যাদি বন্ধ করা। হরতাল গুজরাটি শব্দ। হরঅর্থ প্রত্যেক। তালঅর্থ তালা। অর্থাৎ প্রতি দরজায় তালা। কাজেই যার অর্থই বিশৃঙ্খলা, অত্যাচার, স্বেচ্ছাচারিতা, অবাধ্যতা, বিক্ষোভ, প্রতিরোধ অর্থাৎ এক কথায় ফাসাদ সৃষ্টি করা। তা কি করে ইসলামের নামে জায়িয হতে পারে? কারণ মুসলমানের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “মুসলমান ওই ব্যক্তি যার যবান ও হাত থেকে অন্য মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে।(বুখারী)

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হরতালের উদ্ভাবক ও প্রবর্তক হচ্ছে- ভারত উপমহাদেশের কুখ্যাত মুসলিম বিদ্বেষী মুশরিক পাপাত্মা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। ব্রিটিশদের রাউলাট আইন বাতিল করার জন্য সে তার প্রতিবাদে যে পদ্ধতি অবলম্বন করে সে পদ্ধতির নাম দেয় সে হরতাল। এই হরতাল পালিত হওয়ার কথা ছিল ১৯১৮ সালের ৩০শে মার্চ। পরে এই তারিখ পিছিয়ে ৬ই এপ্রিল করা হয়। ফলে কোন স্থানে ৩০ মার্চ আবার কোন স্থানে ৬ই এপ্রিল সর্বপ্রথম হরতাল পালিত হয়।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হরতাল গুজরাটি শব্দ। পাপাত্মা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দুর প্রবর্তিত হরতাল হারাম হওয়ার উৎস ও কারণ হলো-

(১) বিজাতীয়দের উদ্ভাবিত পন্থা

(২) জন-জীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি।

(৩) জান-মালের ক্ষতি।

(৪) একজনের অন্যায়ের শাস্তি অন্যকে দেয়া।

(৫) হারাম পন্থায় ইসলাম কায়েমের চেষ্টা।

(৬) অর্থাৎ এক কথায় ফাসাদ সৃষ্টি করা।

অথচ আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “তোমরা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করোনা।কারণ আজকে আমি তোমাদের দ্বীনকে কামিল করলাম এবং তোমাদের উপর নিয়ামতকে পূর্ণ করলাম এবং আমি তোমাদের দ্বীন ইসলামের উপর সন্তুষ্ট রইলাম।(সূরা মায়িদা: আয়াত শরীফ- ৩)

অতএব, হারাম হরতালকে জায়িয ও জরুরী বলা কাট্টা কুফরী। যদি কেউ বিধর্মী বা বিজাতীয়দের অনুসরণ ও অনুকরণ করে তবে তাদের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ পাক, উনার রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথে হবে।(মিশকাত)

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো- ইসলামের নামে হরতালকরা সম্পূর্ণই হারাম। কারণ হরতালের কারণে একদিক থেকে যমীনে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি হয়; আরেক দিক থেকে বিধর্মীদের নিয়ম নীতি অনুসরণ করা হয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- যমীনে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারী ও বিজাতীয় নীতি হরতাল পালন করা থেকে বেঁচে থাকা।

আর প্রত্যেক মুসলমানের উচিত, ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি না করা এবং বিধর্মীদের অনুসরণ না করে পরস্পর শরীয়তসম্মতভাবে আলোচনা করে ফায়ছালা করে নেয়া।