নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা ইহুদী-নাছারা, মজুসী ও
মুশরিকদের খিলাফ করো।
থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনের নামে বেপর্দা, বেহায়াপনা, হুজ্জোতি করা, বেলেল্লাপনা, মাতলামি করা
সম্পূর্ণরূপে হারাম ও কুফরী। ইংরেজি নববর্ষ, ফসলী সনের নববর্ষ ও আরবী নববর্ষ বা নওরোজ ইত্যাদি সবই ইহুদী-নাছারা, মজুসী-মুশরিকদের তর্জ-তরীক্বা। যা পালন করা থেকে বিরত থাকা সকল
মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব।
যামানার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা
মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, “থার্টি ফার্স্ট
নাইট পালনের নামে বেপর্দা, বেহায়াপনা, বেলেল্লাপনা, মাতলামি করা
সম্পূর্ণরূপে হারাম ও কুফরী। ইসলামের দৃষ্টিতে নওরোজ বা যে কোনো ধরনের নববর্ষ পালন
করা সম্পূর্ণ হারাম ও কুফরী।”
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের হুজ্জোতি ও হুজুগ প্রসঙ্গে এক
প্রতিক্রিয়ায় রাজারবাগ শরীফ-এ তিনি এসব কথা বলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, আল্লাহ পাক তিনি “সূরা আলে ইমরানের” ১৯ নম্বর আয়াত
শরীফ-এ বলেন, “নিশ্চয়ই ইসলামই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে একমাত্র দ্বীন।” অর্থাৎ ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে আল্লাহ পাক উনার রসূল
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত, একমাত্র পরিপূর্ণ, সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত, নিয়ামতপূর্ণ, অপরিবর্তনীয় ও
মনোনীত দ্বীন। যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবত থাকবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, আল্লাহ পাক তিনি “সূরা মায়িদার” ৩ নম্বর আয়াত
শরীফ-এ আরো ইরশাদ করেন, “আজ আমি তোমাদের
দ্বীনকে (দ্বীন ইসলামকে) কামিল বা পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত তামাম বা পূর্ণ করে দিলাম এবং আমি
তোমাদের দ্বীন ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, আল্লাহ পাক তিনি
দ্বীন ইসলামকে শুধুমাত্র পরিপূর্ণ সন্থষ্টিপ্রাপ্ত ও নিয়ামতপূর্ণ করেই নাযিল
করেননি সাথে সাথে দ্বীন ইসলামকে মনোনীতও করেছেন। তাই দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য
সমস্ত ধর্ম যা ওহী দ্বারা নাযিল করা হয়েছিলো যেমন, তাওরাত শরীফ, যাবূর শরীফ, ইনজীল শরীফ ও ১০০ খানা ছহীফা এবং মানব রচিত মতবাদ যা পূর্বে ছিলো এবং
বর্তমানে যা রয়েছে ও ভবিষ্যতে যা হবে সেগুলোকে তিনি বাতিল ঘোষণা করেছেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ
উল্লেখ করা হয়েছে, “হযরত জাবির
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
থেকে বর্ণনা করেন যে, একদিন হযরত উমর
ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ইহুদীদের কাছ থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা
শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, এর কিছু আমরা লিখে রাখবো কি? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তোমরাও কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছো? যে রকম ইহুদী-নাছারারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি তোমাদের নিকট পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার দ্বীন নিয়ে এসেছি। হযরত মূসা কালীমুল্লাহ
আলাইহিস সালাম তিনিও যদি দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে উনাকেও আমার অনুসরণ করতে হতো।” (মুসনাদে আহমদ, বাইহাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ ইত্যাদি)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, থার্টি ফার্স্ট
নাইট বা ১লা জানুয়ারি পালনের ইতিহাস ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত নয়। এটা পালন
মুসলমানদের কাজ নয়। ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ সালে জুলিয়াস সিজার
সর্বপ্রথম ইংরেজি নববর্ষ বা থার্টি ফার্স্ট নাইট উৎসবের প্রচলন করে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, সাধারণভাবে
প্রাচীন পারস্যের পরাক্রমশালী সম্রাট জমশীদ খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ সালে এই নওরোজের
প্রবর্তন করেছিলো এবং এ ধারাবাহিকতা এখনো পারস্য তথা ইরানে নওরোজ ঐতিহ্যগত
নববর্ষের জাতীয় উৎসব পালিত হয়। ইরান থেকেই ইহা একটি সাধারণ সংস্কৃতির ধারা
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মুসলিম দেশ এবং ভারত উপমহাদেশে প্রবেশ করে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, পহেলা জানুয়ারি
পাকাপোক্তভাবে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট হয় ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান
ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর। ধীরে ধীরে শুধু ইউরোপে নয় সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নববর্ষ পালন করা হচ্ছে। ইরানে নববর্ষ বা নওরোজ
শুরু হয় পুরনো বছরের শেষ বুধবার এবং উৎসব চলতে থাকে নতুন বছরের ১৩ তারিখ পর্যন্ত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, বাদশাহ আকবরের
ফরমান অনুযায়ী আমীর ফতেহ উল্লাহ শিরাজী উদ্ভাবিত বাংলা ফসলী সাল চালু হয় ১০
মার্চ ১৫৬৩। ইংরেজ আমলে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হলেও রাজস্ব আদায়ে ও
অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলা সাল বেশি ব্যবহার করা হতো।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, বর্ষবরণের সাথে
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুভূতি যোগটা সে শুরু থেকেই ছিলো বা বর্ষবরণকারীরা ধর্মীয়
বিশ্বাসের আলোকেই তা করতো। অথবা বর্ষবরণকে তাদের বিশেষ ধর্মীয় আচার বলে বিশ্বাস
করতো। মজুসী বা অগ্নি উপাসকরা এখনো বর্ষবরণকে সরকারিভাবেও ব্যাপক জাঁকজমকভাবে পালন
করে থাকে। একে তারা তাদের ধর্মীয় অনুষঙ্গ মনে করে এবং একে নওরোজ বা নতুন দিন বলে
অভিহিত করে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, ফসলী সনের পহেলা
বৈশাখ বা নববর্ষ উপলক্ষে শহরে ও গ্রামে যে ভোজ, মেলা উৎসব হয় তাও ইরানের নওরোজ হতে পরোক্ষভাবে এদেশে এসেছে। মোগল
পূর্ববর্তী আমলে এদেশে নওরোজ বা নববর্ষ পালনের রীতি প্রচলিত ছিলো না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, ফসলী সনের নববর্ষ
হিন্দুদের খাছ ধর্মীয় উৎসবের দিন। এর আগের দিন তাদের চৈত্র সংক্রান্তি। আর পহেলা
বৈশাখ হলো ঘট পূজার দিন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, হযরত ইমাম আবু
হাফস কবীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নওরোজ বা নববর্ষ উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে তার ৫০ বৎসরের
আমল থাকলে তা বরবাদ হয়ে যাবে। অর্থাৎ নওরোজ বা নববর্ষ পালনের কারণে তার জিন্দেগির
সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, আজকে অনেক
মুসলমান থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করছে। ইংরেজি নববর্ষ, ফসলী সনের নববর্ষসহ বিভিন্ন নববর্ষ পালন করছে। আর এতে করে তারা
বিজাতি ও বিধর্মীদের সাথেই মিল মিশ রাখছে। তাদেরই অনুসরণ অনুকরণ করছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, কালামুল্লাহ
শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই সমস্ত
প্রাণীর মাঝে আল্লাহ পাক উনার নিকট কাফিররাই নিকৃষ্ট, যারা ঈমান আনেনি।” (সূরা আনফাল :
আয়াত শরীফ ৫৫)।
আর নববর্ষ পালনের দ্বারা সে কাফিরদেরই অনুসরণ-অনুকরণ করা হয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ
ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার
হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (সুনানে আহমদ, সুনানে আবূ দাউদ)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, বর্তমান যামানার
উলামায়ে ‘ছূ’রা এবং
রাজাকারদের মুখপত্র তথাকথিত ইসলামী দৈনিকগুলো নববর্ষকে আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত
বলে তা পালন করার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে অথচ এটা সম্পূর্ণ কুফরী কাজ।
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ
রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, উলামায়ে ‘ছূ’ তথা ধর্মব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তারাই
বেশরা-বিদয়াত কুফরীর দিকে আহ্বান করছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা পরস্পর
পরস্পরকে নেক কাজ ও পরহিযগারীর মধ্যে সাহায্য করো; পাপ ও শত্রুতার মধ্যে সাহায্য কর না। (এ বিষয়ে) তোমরা আল্লাহ পাক
উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।” (সূরা মায়িদা : আয়াত শরীফ ২)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত
উলামায়ে ‘ছূ’ তথা ধর্মব্যবসায়ীদের
নিশ্চিহ্ন ও নির্মূল করা না যাবে ততোক্ষণ পর্যন্ত মুসলমানদের আমল নিরাপদ নয়।
ধর্মব্যবসায়ীরা সৃষ্টির নিকৃষ্ট। এদের নির্মূল করলেই মুসলমান সত্যিকার ইসলামী
চেতনা ও আক্বীদা ফিরে পাবে। তাদের আমল ইছলাহ হবে। পহেলা জানুয়ারি ও পহেলা বৈশাখের
মতো হারাম আমল ও মুসলমানদের আবহ থেকে মুসলমানরা নাজাত পাবে।