নোটিশ

বুধবার, ১৫ জুন, ২০১১

সব সময় পাগড়ী পরা সুন্নত

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, সব সময় পাগড়ী পরা সুন্নত; অবজ্ঞা করা কুফরী।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, অনেকেই পাগড়ীর সঠিক আহ্‌কাম ও ফযীলত না জানার কারণে পাগড়ীকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে থাকে এবং পাগড়ী পরিহিত ব্যক্তিকে ঠাট্টা বা বিদ্রুপ করে থাকে। অথচ এটা সুস্পষ্ট কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, অনেকেই অজ্ঞতা হেতু বলে থাকে যে, পাগড়ী পরা দায়িমী সুন্নত নয় বরং শুধুমাত্র নামাযের মধ্যে পরলেই চলে। আবার কেউ কেউ সুন্নত স্বীকার করলেও নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরার সুন্নত ও ফযীলতকে অস্বীকার করে থাকে। অথচ তাদের এসব বক্তব্য শুধু শরীয়ত বিরোধীই নয় বরং মনগড়া, অজ্ঞতামূলক ও বিভ্রান্তিকরও বটে। কারণ পাগড়ী পরা নামাযের বাইরে ও ভিতরে উভয় অবস্থায়ই সুন্নত ও ফযীলতের কারণ। নামাযের বাইরে পাগড়ী পরা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে হাদীছ শরীফের সহীহ্‌‌ কিতাব “হাশিয়ায়ে তিরমিযী শরীফের” উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,“নিঃসন্দেহে পাগড়ী পরা (দায়িমী) সুন্নত।” নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরার ফযীলত সম্পর্কে কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে, “নিশ্চয়ই পাগড়ী পরে দু’রাকাত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, পাগড়ীর ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরূম না হয় সে জন্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, “তোমরা পাগড়ী পর। নিশ্চয়ই পাগড়ী ইসলামের নির্দশন এবং তা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্যকারী।”


“হযরত উবাদাহ্‌ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বর্ণিত হাদীছ শরীফ উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “তোমরা পাগড়ী পর। এতে সহনশীলতা ও গাম্ভীর্যতা বৃদ্ধি পায়।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, পাগড়ী পরা হচ্ছে আখিরী নবী ও রসূল, দো’জাহানের রসূল, ফখরে মওজুদাত, সরকারে কায়িনাত, নূরে মুজাস্‌‌সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ তথা “দায়িমী সুন্নত”। শুধু তাই নয় পূর্ববর্তী নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ সকলেই পাগড়ী পরেছেন এবং মহান আল্লাহ পাক-এর ফেরেশ্‌তাগণও দায়িমীভাবে পাগড়ী পরে থাকেন।

পাগড়ীর সুন্নতি পরিমাপ সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অধিকাংশ সময়ের (ঘরের ভিতরে) ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল তিন হাত দীর্ঘ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল সাত হাত। আর জুমুয়া, ঈদের দিন এবং কোন দেশের প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাতের সময় ব্যবহার করতেন বার হাত লম্বা পাগড়ী মুবারক। \


পাগড়ী বাঁধার সুন্নত তরিকা:
পাগড়ী বাঁধার সুন্নত তরিকা সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, “রসূলুল্লাহ্‌‌ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে পাগড়ী বাঁধতেন? “উত্তরে তিনি বলেছিলেন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ীর একটি প্রান্ত মাথা মুবারকে পেঁচাতেন ও তারই শেষ প্রান্ত পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর পাগড়ীর শামলা উভয় কাঁধের মাঝখানে ঝুলাতেন।”


পাগড়ীর রং:

পাগড়ীর রং সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, সাদা, সবুজ ও কালো -এই তিন রংয়ের পাগড়ী পরা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। লাল, কুসুম, হলুদ ও জাফরানী রংয়ের ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান করা হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্‌ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাগড়ী ছিল তিন ধরনের। যথা (ক) তিন হাত, (খ) সাত হাত,ও (গ) বার হাত লম্বা। আর প্রস্থ ছিল অর্ধ হাত, এক হাত, দেড় হাত এবং দুই হাত। কোন কোন বর্ণনায় পাগড়ীর প্রস্থ ছিল অর্ধ হাত বা এক বিঘত।

পাগড়ীর শামলা সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, পাগড়ী বেঁধে তার শামলা ঝুলানো খাছ সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। পাগড়ীর শামলা কমপক্ষে চার আঙুল আর ঊর্ধ্বে এক হাত পরিমাণ হওয়াই সুন্নত। এর চেয়ে কম-বেশি হওয়া সুন্নতের খিলাফ। তবে প্রায় একহাত পরিমাণ ঝুলানোই আফযল বা সর্বোত্তম।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, পাগড়ীর শামলা পিছনে পিঠের উপর উভয় কাঁধের মাঝখানে ও সামনের ডান দিকে ছিনার উপর ঝুলিয়ে দেয়া সুন্নত। তবে আফযল তথা অধিক উত্তম হলো, দু’কাঁধের মাঝখানে পিঠের উপর ঝুলানো। মনে রাখতে হবে, সামনের বাম ছিনার উপর শামলা ঝুলানো বিদয়াত।

পাগড়ী বাঁধার সুন্নত প্রসঙ্গে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” বলে পাগড়ী পরা, পাগড়ী পরে দোয়া পড়া, নতুন পাগড়ী বাঁধতে হলে জুমুয়ার দিন থেকেই শুরু করা, পাগড়ী দাঁড়িয়ে বাঁধা, টুপির উপর পাগড়ী পরা সুন্নত।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, সিজদার স্থানকে পাগড়ীর পেঁচ থেকে মুক্ত রাখতে হবে। কেননা, আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক পাগড়ীর উপর সিজদা করা মাকরূহ। গোলাকার করে মাথার উপরিভাগকে ফাঁকা রেখে পাগড়ী বাঁধা মাকরূহ। দিস্তারবন্দী তথা পাগড়ী বেঁধে দেয়া সুন্নতে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর পাগড়ী বেঁধে নেয়া সুন্নতে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মাথার রুমাল, গামছা, তোয়ালে বা কোন কাপড়ের টুকরা দিয়ে পাগড়ীর সুন্নত আদায় হবে না। কেননা, তাতে একই সাথে পাগড়ীর মত দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও রং উপস্থিত থাকে না। পাগড়ীর উপর রুমাল পড়া খাছ সুন্নত। পাগড়ী মওজুদ থাকা সত্ত্বেও আলস্যবশতঃ পাগড়ী ছাড়া নামায আদায় করা মাকরূহ।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, অসংখ্য দলীলের দ্বারা প্রমাণিত যে, পাগড়ী পরা দায়িমী সুন্নত। কেননা, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হায়াত মুবারকের অধিকাংশ সময়েই পাগড়ী মুবারক পরেছেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী সকলকে পাগড়ীর সঠিক আহকাম জেনে পরিপূর্ণ সুন্নত পালনের আহ্বান জানান।