যামনার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আ’ইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউছুল আ’যম, আফযালুল আউলিয়া, ছহিবু সুলতানিন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম, রাজারবাগ শরীফের মামদুহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এক ক্বওল শরীফে বলেছেন- সারা বছর নামায পড়ে না, রোযা রাখে না, এখন শবে বরাতে একদিন নামায-কালাম পড়ে কি হবে? এ কথা বলা কুফরী।
বদ মাযহাব যারা রয়েছে, বাতিল আক্বিদাভুক্ত ওহাবী, সালাফী ও খারিজী বাতিল ফিরকার যারা রয়েছে, এরা বলে থাকে, শবে বরাতের রাতে ইবাদত বন্দেগী করতে হবে তার দলীল কোথায় রয়েছে?
ওহাবী-খারেজী, সালাফী, মাওদুদীবাদী, তাবলীগী বাতিল ফিরকার লোকদের এরূপ ভ্রান্ত কথার জবাবে মুজাদ্দিদে আযম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, পেঁচাতো সূর্যকে দেখে না, তাকে দলীল দেয়া যাবে কিন্তু দলীল বুঝার ও মানার যোগ্যতা তো তার নেই। এদের অবস্থা হয়েছে সে রকমই। এ সমস্ত জাহিল, মূর্খ, গুমরাহদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ করেছেন, “তাদের চোখ আছে কিন্তু তারা দেখে না, তাদের কান আছে কিন্তু তারা শ্রবণ করে না, তাদের অন্তর আছে কিন্তু তারা উপলদ্ধি করে না।”
মুজাদ্দিদে আযম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশ এ রাতে তোমরা জেগে জেগে ইবাদত-বন্দেগী করো। “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন শা’বান মাসের ১৫ তারিখ উপস্থিত হয় তখন ঐ রাত্রিতে তোমরা নামায পড়বে এবং দিনে রোযা রাখবে।” (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ শবে বরাতে ইবাদত-বন্দেগী করার ও দিনে রোযা রাখার অসংখ্য সুস্পষ্ট নির্দেশ থাকার পরও কিছু গুমরাহ লোক সাধারণ মানুষদেরকে উক্ত রাতে ইবাদত করতে নিরুৎসাহিত করে বলে থাকে যে- ‘সারা বছর নামায নেই, রোযা নেই, ইবাদত-বন্দিগী নেই; শুধু শবে বরাতে নামায-কালাম পড়ে ও রোযা রেখে কী হবে’ তাদের এ কথা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত হবে। কারণ, যে যতটুকু নেক আমল করবে সে ততটুকুরই ফায়দা পাবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “যে এক বিন্দু পরিমাণ বা জাররা পরিমাণ নেকী করবে সে তার বদলা পাবে।” তাহলে এটাতে বাধা দেয়ার অর্থই হচ্ছে তাকে মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তথা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে ফিরিয়ে দেয়া। এটা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। যদি এ পবিত্র শবে বরাত-এর রাত্রিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে কবুল করে নেন তাহলেই তো সে কামিয়াব হয়ে গেলো।
মুজাদ্দিদে আযম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে এসেছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “তোমরা কোন নেক কাজকে ছোট মনে করো না বা নেকীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করো না।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি পূর্ববর্তী যামানার একটি বিশেষ রাতের ফযীলতের কথা বর্ণনা করে বলেন, পূর্ববর্তী যামানার উম্মতদেরকে ক্ষমা করার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি বিশেষ একটি রাত্রি দিয়েছিলেন। একবার সেই বিশেষ রাতটি যখন আসলো তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বলে পাঠালেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আজকে রহমতের রাত্রি, বরকতের রাত্রি, মাগফিরাতের রাত্রি। আপনি যমীনে গিয়ে দেখে আসেন আমার বান্দারা কে কি অবস্থায় রয়েছে? হযরত জিবরীল আলাইহিস্ সালাম তিনি সারা যমীন ঘুরে বান্দাদের অবস্থা দেখে মহান আল্লাহ পাক উনাকে জানালেন, বারে ইলাহী! আপনার বান্দাদের জন্য আফ্সুস! সমস্ত বান্দারা ঘুমিয়ে রয়েছে। কেবল এক হিন্দু ঠাকুর, সে এক মন্দিরে মূর্তির সামনে বসে ছনম ছনম অর্থাৎ মূর্তি মূর্তি বলে জপছে। সে হিন্দু ঠাকুরের গলায় পৈতা, পরনে ধুতি, মাথায় টিকি। বারে ইলাহী! আপনি যদি ইজাযত দেন তাহলে আমি সেই হিন্দু ঠাকুরকে মন্দির ও মূর্তিসহ উল্টিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে দিয়ে আসি। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! অপেক্ষা করুন। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি অপেক্ষা করতে লাগলেন।
পরবর্তী বৎসর আবার যখন সেই রহমতের রাত্রি, বরকতের রাত্রি, মাগফিরাতের রাত্রি আসলো তখন পুনরায় মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে ডেকে বললেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! এবারও যমীনে গিয়ে দেখে আসুন বান্দারা কে কি অবস্থায় রয়েছে? মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ পেয়ে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সারা যমীন ঘুরে এসে মহান আল্লাহ পাক উনাকে জানালেন, বারে ইলাহী! আপনার বান্দাদের জন্য আফ্সুস! এবারও সমস্ত বান্দারাই ঘুমিয়ে আছে। তবে একজন বান্দাকে পাওয়া গেছে ইয়া আল্লাহ পাক! যে এক ইবাদতখানায় বসে আপনার নাম মুবারক ‘ছমাদ’ (বেনিয়াজ) ‘ছমাদ’ (বেনিয়াজ) বলে যিকির করছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি কি সেই বান্দাকে চিনতে পেরেছেন? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, বারে ইলাহী! আপনার লক্ষ-কোটি বান্দাদের মধ্যে সবাইকে তো আমার পক্ষে চেনা সম্ভব নয়। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনার কি স্মরণে আছে সেই হিন্দু ঠাকুরের কথা! যাকে আপনি মন্দির ও মূর্তিসহ উল্টিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, বারে ইলাহী! সেই কথা তো আমার স্মরণে আছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, এই বান্দা তো সেই বান্দা। হযরত জিবরীল আলাইহিস্ সালাম তিনি বললেন, বারে ইলাহী! সেই বান্দা এখানে কি করে আসলো? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, সেই রহমতের রাত্রিতে, বরকতের রাত্রিতে, মাগফিরাতের রাত্রিতে হিন্দু ঠাকুরের জবান পিছলিয়ে হঠাৎ ছনমের পরিবর্তে সে একবার ‘ছমাদ’ বলে ফেলেছিলো আর তৎক্ষণাৎ আমি তার ডাকে সাড়া দিয়ে বলেছিলাম, লাব্বাইকা ইয়া আবদী- হে আমার বান্দা তুমি কোথায়! তোমার বয়স নব্বই হয়ে গেছে। পিঠ বাঁকা হয়ে গেছে। আর কতকাল তুমি ছনম ছনম (মূর্তি মূর্তি) বলে ডাকবে? তোমার মূর্তি তো একবারের জন্যেও তোমার ডাকে সাড়া দেয়নি। কাজেই, তুমি তওবা করে ফিরে আসো। তখন সে বান্দা তওবা করে মূর্তিকে আছাড় দিয়ে ভেঙে মন্দির থেকে বের হয়ে গলার পৈতা ছিড়ে, মাথার টিকি কেটে, ধুতি পাল্টিয়ে লুঙ্গি, কোর্তা, টুপি, পাগড়ী পরিধান করে ইবাদতখানায় প্রবেশ করে ‘ছমাদ’ ‘ছমাদ’ যিকিরে মশগুল হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ এসেছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা কোন নেক কাজকে ছোট মনে করো না বা কোন নেকীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করো না।” কাজেই ‘সারা বছর নামায পড়ে না, রোযা রাখে না, এখন শবে বরাতে একদিন নামায-কালাম পড়ে কি হবে’ এরূপ কথা বলে পবিত্র শবে বরাতে ইবাদত-বন্দেগী থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা, নিরুৎসাহিত করা হারাম ও কুফরী হবে। অর্থাৎ নেক কাজকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা, অবজ্ঞা করা, ছোট মনে করা গুমরাহী, কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি কবুল করে নেন তাহলে ছোটটাই বড় হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, বর্তমানে বাতিল ফিরক্বার লোকেরা আরেকটা কাজ করে থাকে, তা হলো তাড়াতাড়ি ইশার নামায পড়েই মসজিদ বন্ধ করে দেয়। অথচ মসজিদগুলো খোলা রাখা উচিত ছিল। মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “ঐ ব্যক্তির চাইতে বড় জালিম কে? যে মসজিদে মানুষকে ইবাদত-বন্দিগী, যিকির-ফিকির করতে বাধা দেয় এবং বিরান করার জন্য সাহায্য করে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই বলেন, “তোমরা নেকীতে, পরহেযগারীতে সাহায্য করো, শত্রুতা ও পাপের মধ্যে সাহায্য করো না।” কাজেই বরাতের রাতে ইবাদতকারীকে বাধা দিলে তারা তো নেক কাজে সাহায্যকারী হলোই না বরং তারা বদ কাজে সাহায্যকারী হলো। আর মসজিদ বন্ধ করে রাখার কারণে, মসজিদ বিরান করার দায়ে দায়ী হয়ে তারা জালিমের অন্তর্ভুক্ত হবে। তাই এ সমস্ত জাহিল, মূর্খ, ওহাবী, সালাফী, দেওবন্দী, মওদুদী, তাবলীগি বাতিল ফিরক্বার লোকদের থেকে এবং তাদের গুমরাহীমূলক বক্তব্য থেকে। সকলকে সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে।
কাজেই ‘সারা বছর নামায পড়ে না, রোযা রাখে না, এখন শবে বরাতে একদিন নামায-কালাম পড়ে কি হবে’? এরূপ বলে পবিত্র শবে বরাতে ইবাদত-বন্দেগী থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা, নিরুৎসাহিত করা হারাম ও কুফরী হবে। অর্থাৎ নেক কাজকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা, অবজ্ঞা করা, ছোট মনে করা গুমরাহী, কেননা আল্লাহ পাক যদি কবুল করে নেন ছোটটাই বড় হয়ে যাবে।
আখিরী যামানার ফিৎনা সৃষ্টিকারী বাতিল ফিরকা ও তাদের গুমরাহীমূলক বক্তব্য সম্পর্কে মুজাদ্দিদে আযম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আখিরী যামানায় একদল মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে। তারা এমন সব কথা বলবে যা তোমরা শোননি, তোমাদের বাপ-দাদা চৌদ্দ পুরুষ শুনেননি। তোমরা তাদের কাছে যেও না, তাদেরকে তোমাদের নিকট আসতে দিও না। তাহলে তারা তোমাদেরকে গুমরাহ করতে পারবে না।”
মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মূলতঃ এ সমস্ত জাহিল, মূর্খ ওহাবী, সালাফী, বাতিল ফিরকার লোকেরা এই হাদীছ শরীফের মিছদাক। তারা পবিত্র শবে বরাত থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখতে বর্তমানে এমন সব মনগড়া বক্তব্য পেশ করছে যা পূর্বে কখনও শোনা যায়নি।