এখানে কেবল কয়েকটি জরুরী মাসয়ালা দেয়া হল।
১। সারাবিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ শুরু হতে পারে না। কারণ একই দিনে সারাবিশ্বে চাঁদ দৃষ্টিগোচর হওয়া অসম্ভব। অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের সময়ের ব্যবধান অনুযায়ী চাঁদের হুকুম হবে এবং চাঁদ দেখা যাবে।
২। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দুই-চার জন ব্যক্তি চাঁদ দেখাতে চাঁদ প্রমাণিত হবে না এবং রোযা বা ঈদ করা চলবে না। বহু সংখ্যক লোকের দেখা আবশ্যক।
৩। আকাশ পরিষ্কার না থাকলে একজন দ্বীনদার মুসলমান পুরুষ বা নারী ২৯শে শা’বান রমাদ্বান শরীফ-এর দিবাগত সন্ধ্যায় চাঁদ দেখেছেন বলে সাক্ষ্য দিলে সকলেরই রোযা রাখতে হবে।
৪। আকাশ পরিষ্কার না থাকলে ঈদের চাঁদে একজনের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। সে যত বড় দ্বীনদারই হোক না কেন। কমপক্ষে দুইজন দ্বীনদার মুসলমান পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন নারীকে চাঁদ দেখেছে বলে সাক্ষ্য দিতে হবে, তবেই ঈদ পালন করা যাবে। অন্যথায় রমাদ্বান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ করতে হবে।
৫। কেউ চাঁদ দেখতে পেরেছে বলে দাবি করছেন। কিন' টেলিগ্রাম, টেলিফোন ও রেডিও দ্বারা জানা গেল, চাঁদ দেখা গেছে। এতে বিশ্বাস করে রোযা রাখা বা ঈদ করা যায় কিনা তা জানার জন্য প্রথমে জানা আবশ্যক যে, খবর বা সংবাদ এবং সাক্ষ্য এক কিনা? উভয়ে এক নহে। তবে সাক্ষ্যের জন্য আবশ্যক হলো- (ক) সাক্ষীর সাক্ষ্যস'লে হাজির থাকা যাতে আবশ্যক অনুসারে তাকে জেরা করা যেতে পারে বা তার চেহারা সুরত বা হালচাল দেখে তার কথার সত্যতা অনুধাবন করা যেতে পারে এবং (খ) ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি’-এই বলে শপথ করা। সুতরাং সাক্ষাতের ক্ষেত্রে ঐ সকল যন্ত্রের ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়। দুনিয়ার কোন আদালতই ইহা গ্রহণ করে না। অবশ্য উপযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা চাঁদের সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ করার পর উহার প্রচারে ঐ সকল যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি যদি টেলিগ্রাম প্রভৃতিকে প্রচারে ব্যবহৃত বলে মনে করেন, তবে আপনার জানতে হবে যে, এর সাক্ষ্য গ্রহণকারী কে বা কারা এবং শরীয়ত অনুযায়ী সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে কিনা?
৬। চাঁদ চর্ম চোখে দেখা গেল না কিন্তু যন্ত্র দ্বারা যথাঃ দূরবীক্ষণ ও অণূবীক্ষণ দ্বারা দেখা গেল। এতে রোযা রাখা বা ঈদ করা জায়িয হবে না।
৭। কেউ রোযার চাঁদ দেখল কিন্তু সাক্ষ্য গ্রহীতার নিকট তার সাক্ষ্য গৃহীত হল না। তার পক্ষে রোযা রাখা ফরয। তার ঈদের তারিখে অন্য সকলে রোযা রাখলে সেও রোযা রাখবে এবং পরদিন সকলের সাথেই ঈদ করবে।
৮। কেউ একা ঈদের চাঁদ দেখল (যা গ্রহণযোগ্য নয়) ‘ইহতিয়াত’ বা সতর্কতামূলকভাবে পরদিন রোযা রাখবে।
৯। ২৯শে শা’বান মেঘলা আকাশের কারণে চাঁদ দেখা না গেলে পরদিন দুপুর পর্যন্ত পানাহার না করে থাকা মুস্তাহাব। ইতোমধ্যে চাঁদের খবর পাওয়া গেলে রোযার নিয়ত করতে হবে, কিন্তু এমনি নফল রোযা বা সন্দেহ করে রোযা রাখা যাবে না। ইহা মাকরূহ তাহরীমী। তবে যার কোন নির্দিষ্ট দিনে নফল রোযা রাখার অভ্যাস আছে। আর ইহা সেই দিন হয়, তার পক্ষে নফল নিয়তে রোযা রাখা উত্তম। বাস্তবে চাঁদ উঠলে তার উহা ফরযে পরিণত হবে।