মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, হে মহিলারা!
তোমরা নিজ ঘরে অবস্থান কর, অর্থাৎ পর্দায়
থাক। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, মহিলাদের জন্য নামাযের উত্তম স্থান হচ্ছে নিজ গৃহের গোপন প্রকোষ্ঠ। শরীয়ত মহিলাদের জন্য যেরূপ জুমুয়া ও ঈদের নামায আবশ্যকীয় করেনি
তদ্রুপ জুমুয়া, ঈদ, পাঁচ ওয়াক্ত ও তারাবীহ নামাযের জামায়াতে শরীক হওয়ার নির্দেশও দেয়নি। বরং শরীয়তের ফায়ছালা হলো- মহিলাদের জন্য জুমুয়া, ঈদ, তারাবীহ, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ যে কোন নামাযের জামায়াতে উপস্থিত হওয়া আম ফতওয়া
মতে মাকরূহ তাহরীমী বা হারাম; আর খাছ ফতওয়া
মতে কুফরী।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও
মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা
মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, ইমাম, মুজতাহিদগণ উনারা পর্দার গুরুত্ব, মহিলাদের ঘরে
নামায পড়ার উৎসাহ ও ফযীলতপূর্ণ হাদীছ শরীফ ও হযরত উমর ফারূক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার নিষেধাজ্ঞা ও উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার সমর্থনের কারণে আমভাবে মহিলাদের জামায়াতের
জন্য মসজিদে যাওয়াকে মাকরূহ তাহরীমী ফতওয়া দেন এবং উক্ত ফতওয়ার উপর উম্মতের ইজমা
তথা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা লাভ করে, বিশেষ করে
হানাফী মাযহাবের ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের মধ্যে। যেমন এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা
হয়, “মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া মাকরূহ
তাহরীমী হওয়ার ব্যাপারে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, যেখানে বিশ্বের
অসংখ্য ইমাম, মুজতাহিদ উনারা একমত হয়ে মহিলাদের
মসজিদে যাওয়াকে নাজায়িয অর্থাৎ মাকরূহ তাহরীমী বলে ফতওয়া দিয়েছেন, সেখানে এর বিরোধিতা করে এটাকে জায়িয বলা কুফরী ছাড়া কিছুই নয়। কেননা
মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “কারো নিকট
হিদায়েত বিকশিত হবার পর রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বিরুদ্ধাচরণ করবে, আর মু’মিনদের পথ রেখে ভিন্ন পথের অনুসরণ করবে, আমি তাকে
সেদিকেই ফিরাবো যেদিকে সে ফিরেছে। এবং আমি তাদেরকে জাহান্নামে পৌঁছাবো। যা
নিকৃষ্ট স্থান।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, শায়খ হযরত আহমদ
ইবনে আবু সাঈদ মুল্লা জিউন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে উল্লেখ
করেন- “এ আয়াত শরীফ-এ মু’মিনদের
বিরোধিতাকে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা হিসেবে
আখ্যায়িত করা হয়েছে। অতএব, রসূলে পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ শরীফ-এর মতো তাদের ইজমাও অকাট্য ও
প্রামাণ্য দলীল বলে পরিগণিত হবে।” (নুরুল আনোয়ার)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, আয়াত শরীফ ও তার
তাফসীর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, ইমাম-মুজতাহিদগণের
মতের বিরোধিতা করার অর্থ হলো, আল্লাহ পাক ও
উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করা; যা সুস্পষ্টই কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। আর এটাও জেনে রাখা দরকার যে- ইমাম, মুজতাহিদ উনারা যে ফতওয়া দিয়েছেন, তা কুরআন শরীফ ও
সুন্নাহ শরীফ-এর বিপরীত নয় বরং কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ ভিত্তিক। কাজেই কুরআন
শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও কিয়াসের
দৃষ্টিতে সঠিকভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ইমাম-মুজতাহিদ
উনাদের কোন মাসয়ালার বিরোধিতা করা (সেটা যে কোন মাযহাবেরই হোক না কেন) মূলতঃ কুরআন
শরীফ, হাদীছ শরীফ-এরই বিরোধিতা করা। তাই খাছ ফতওয়া
মতে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদ বা ঈদগাহে যাওয়া বা যাওয়াকে জায়িয বলা কুফরী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, মহিলাদের জন্য
জামায়াতে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী বা নিষিদ্ধ হওয়ার উপর
উম্মতের তথা ইমাম মুজতাহিদগণ উনাদের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং যুগ যুগ ধরে সারা
বিশ্বে তা অনুসৃত হয়ে আসছে। ইজমা ও ক্বিয়াস যেহেতু কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এরই
অন্তর্ভুক্ত ও সমর্থিত, সেহেতু উক্ত
ইজমাকে অস্বীকার করা বা মু’মিনগণের প্রচলিত
পথের বিরোধিতা করা কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দৃষ্টিতে প্রকাশ্য কুফরী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, ইমাম-মুজতাহিদ
উনারা যে মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়াকে নিষেধ করেছেন তা প্রায় সকল
নির্ভরযোগ্য কিতাবেই উল্লেখ আছে। যেমন- ওমদাতুল ক্বারী শরহে বোখারী ৫ম জিলদ ১৫৬
পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “হিদায়ার লেখক
বলেন, যুবতী মহিলাদের জামায়াতে যাওয়া মাকরূহ তাহরীমী।
তিনি আরো বলেন, জামায়াত বলতে
এখানে (পাঁচ ওয়াক্তসহ) জুমুয়া, ঈদাইন, কুসূফ, ইস্তিস্কা
ইত্যাদি সবই অন্তর্ভুক্ত। আমাদের ফকীহগণ বলেন- কেননা তাদের (মহিলাদের) জামায়াতের
জন্য বের হওয়ায় ফিতনার আশঙ্কা রয়েছে, আর ফিতনা
হারামের অন্তর্ভুক্ত। আর যা হারাম কাজে সহায়তা করে তাও হারাম। এ কারণেই মাকরূহ
তাহরীমীর দ্বারা মূলতঃ মহিলাদের জামায়াতে যাওয়া হারাম বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হওয়াই
উদ্দেশ্য।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, ফায়জুল বারী শরহে
বোখারী ২য় জিলদ ৩২২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “উলামায়ে
মুতাআখখিরীন উনারা মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষেধ বলে মত প্রকাশ
করেন। কেননা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে মরফূ
হিসেবে হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে যে, ‘মহিলাদের মসজিদে
নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়া সর্বোত্তম এবং ঘরের চেয়ে গোপন প্রকোষ্ঠ
সর্বোত্তম।’ উপরোক্ত হাদীছ শরীফ-এর আলোকে শরীয়ত এই
মতই ব্যক্ত করে যে, মহিলাগণ
জামায়াতের জন্য মসজিদে যাবে না।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এর
কিতাব দাইলামী শরীফ-এ উল্লেখ আছে, “মহিলাদের জন্য
মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়ার মধ্যে ২৫গুণ বেশি ফযীলত।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, মায়ারিফে
মাদানিয়াহ, শরহে তিরমিযী ৮ম জিলদ ১০৮ পৃষ্ঠায়
উল্লেখ আছে, “হযরত ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি বলেন, মহিলাদের ইসলামের প্রথম যুগে জামায়াতে
যাওয়ার অনুমতি প্রদান করার কারণ হলো বেদ্বীনদের সম্মুখে মুসলমানগণের জনসংখ্যা ও
জনশক্তি বৃদ্ধি করা। হযরত আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সে যুগ ফিতনা ফাসাদ থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা
একেবারেই বিপরীত। ‘বাদায়ের’ লেখক বলেন, যুবতী মহিলাদের
(পাঁচ ওয়াক্তসহ) জুমুয়া, ঈদাইন ইত্যাদিতে
যোগদান করার অনুমতি নেই। কেননা আল্লাহ পাক তিনি বলেন, ‘(হে মহিলাগণ)
তোমরা ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থাক।’ এ ছাড়াও
মহিলাদের ঘর থেকে বের হওয়ার মধ্যে ফিতনার আশঙ্কা রয়েছে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল
আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো-
হযরত ইমাম-মুজতাহিদ উনারা যদিও আমভাবে মহিলাদের জুমুয়া, ঈদ, তারাবীহ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ সর্বপ্রকার নামাযের জামায়াতের জন্য
বের হওয়াকে মাকরূহ তাহরীমী বা হারাম ফতওয়া দিয়েছেন কিন্তু খাছ ফতওয়া মতে তা কুফরী
বলে সাব্যস্ত হয়। কারণ মহিলাদের জন্য জুমুয়া, ঈদ, তারাবীহ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ সর্বপ্রকার নামাযের জামায়াতের জন্য
মসজিদে যাওয়া বা যাওয়াকে জায়িয বলার অর্থ হলো- শরীয়ত অস্বীকার করা ও কুরআন শরীফ-এ
বর্ণিত ‘উলিল আমর’ অর্থাৎ হযরত
ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বিরোধিতা করা। যা কুফরীর
অন্তর্ভুক্ত। তাই খাছ ফতওয়া মতে মহিলাদের জুমুয়া, ঈদ, তারাবীহ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ সর্বপ্রকার নামাযের জামায়াতের জন্য
মসজিদে বা ঈদগাহে যাওয়া বা যাওয়াকে জায়িয বলা কুফরী।
তিনি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ১৩তম
সংখ্যা পাঠ করার জন্য বলেন।