নোটিশ

সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০১১

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সা’দুল খলায়িক্ব, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুখ মুবারক-এর পবিত্র লালা মুবারক-এ অভাবনীয় বরকত!


ছহীহ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে। হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, খন্দকের জিহাদের সময় আমরা পরিখা খননের কাজে লিপ্ত ছিলাম। হঠাৎ একটি বড় পাথর দেখা দিলো। আমরা কেহই উহাকে স্থানান্তর করিতে পারিতেছিলাম না। ফলে খনন কাজ ব্যাহত হতে ছিলো। সংবাদ পেয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীব্ল্লুাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তথায় তাশরীফ নিলেন এবং কুড়ালের এক আঘাতেই ওই বিরাট পাথরটিকে গুঁড়িয়ে দিলেন। অথচ যাহিরীভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তিন দিনের অভুক্ত অবস্থায় ছিলেন। উনার পেট মুবারক-এ তখন পাথর বাঁধা ছিলো।


হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তখন নিজ বাড়িতে গিয়ে উনার আহলিয়াকে বললেন, “আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালল্লাম উনাকে অভুক্ত দেখে এসেছি। আমাদের ঘরে কোনো খাবার আছে কি?” তখন হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঘরে অর্ধ সের যবের আটা ও ছোট একটি ছাগলের বাচ্চা ছিলো।
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, ছাগলের ছোট বাচ্চাটিকে যবেহ করার পর আমার আহলিয়া পাত্রে গোশত চড়িয়ে রুটি তৈরি করার উদ্যোগ নিলেন। এই সুযোগে আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট গমন করে চুপে চুপে বললাম, হে আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কয়েকজন ছাহাবী উনাদেরকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে চলুন। ছোট একটি ছাগলের বাচ্চা যবেহ করা হয়েছে আর সামান্য কিছু যবের আটা আছে।

কিন্তু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার স্বল্প আয়োজনের দাওয়াত পেয়ে উচ্চস্বরে ঘোষণা করলেন, হে পরিখা খননকারী দল! হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আপনাদেরকে দাওয়াত করেছেন। দ্রুত আপনারা হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়িতে চলুন।
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, এই ঘোষণা দিয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বললেন: আমি না আসা পর্যন্ত গোশতের পাত্রের ঢাকনা খুলবেন না এবং রুটি তৈরিও শুরু করবেন না। অবশেষে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার বাড়িতে তাশরীফ নিলেন এবং স্বীয় মুখ মুবারক-এর লালা আটা ও পাত্রের গোশতের সাথে মিশিয়ে দোয়া করিলেন। অতঃপর তিনি রাঁধুনীকে ডেকে এনে বললেন, চুলা হতে পাত্র নামাবেন না এবং পেয়ালা বা থালা ভরে সকলকে পরিবেশন করতে থাকুন। তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশ পালন করলেন।

হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, পরিখা খনন কাজে আমরা ১৪ শত ছাহাবী নিযুক্ত ছিলাম। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! সকলে তৃপ্তি সহকারে খাবার গ্রহণ করার পরও পাত্র ভর্তি খাবারে বলক আসতেছিলো এবং রুটি তৈরির আটাতেও কোনো কমতি দেখা দেয়নি। সুবহানাল্লাহ! 

এই ঘটনা যার সামান্য খাবারের অভাবিত বরকত এবং উহার পূর্বে সাইয়্যিদুল মুসরালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক আঘাতে সুবিশাল প্রস্তরখ- চূর্ণ-বিচূর্ণ হওয়া- এসবই উনার মুবারক মু’জিযা ছিলো। তা ছাড়া আগুনের ধর্ম হলো আদ্র বস্তুকে শুকিয়ে ফেলা এবং শুষ্ক বস্তুকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়া। কিন্তু আমরা উপরোক্ত মুবারক মু’জিযা শরীফ-এ কি দেখতে পেলাম? সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক মুখের পূত-পবিত্র লালা মুবারক-এর বরকতে হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খাবার পাত্র চুলার উপর রেখে অনবরত জ্বাল দেয়ার পরও উহা শুষ্ক হওয়া কিংবা জ্বলে যাওয়ার কোনো লক্ষণই প্রকাশ পেলো না। উপরন্তু উহা হতে ১৪ শত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা খাবার গ্রহণ করার পরও যেমন খাবার তেমনই রয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ!

- মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ বিশেষ সংখ্যা-১৪৩২ হিজরী