নোটিশ

বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১১

হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী করার জন্য যমীনে শোয়ায়ে ছিলেন


মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে (হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম) উনাকে বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম আপনাকে যবেহ করতেছি, আপনি কি বলেন? তখন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার সম্মানিত পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা করুন অর্থাৎ যবেহ করুন। অবশ্যই আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, আমি দুই যবেহ অর্থাৎ হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম ও হযরত খাজা আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের আওলাদ। হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী করার জন্য যমীনে শোয়ানো হয়েছিলো এবং উনারই পরিবর্তে একটি দুম্বা কুরবানী করা হয়েছিলো।’ এটাই কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফদ্বয়ের বর্ণনা। আর হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কিত বর্ণনাটি ইসরাইলী তথা ইহুদীদের বর্ণনা, যা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও পরিত্যাজ্য।


যামানার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আযম, আওলাদুর রসূল, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হাদীছ শরীফ-এর বিশুদ্ধ কিতাব মুসতাদরাক লিল হাকিম-এর বরাত দিয়ে বলেন, হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমরা একদা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে উপস্থিত ছিলাম। তখন এক গ্রাম্য আরবী লোক এসে বললেন, হে দুই যবীহ উনাদের সন্তান! এ সম্বোধন শুনে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুচকি হাসলেন। হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করার পর উপস্থিত জনতার মধ্য থেকে জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, যবীহদ্বয় কে কে? হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, এক যবীহ হলেন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম আর দ্বিতীয়জন হলেন উনার পূর্ব পিতা হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম।


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি তাফসীরে জালালাইন শরীফ-এর বরাত দিয়ে বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘আমি দুই যবীহ উনাদের পুত্র এ হাদীছ শরীফখানার তাৎপর্য হচ্ছে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আপন পিতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার পিতা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি কুরবানীর জন্য মানত করেছিলেন। অতঃপর তৎকালীন জ্ঞানী-গুণীগণের পরামর্শক্রমে উনার প্রাণের বিনিময়ে একশত উট সদকা (কুরবানী) করেছিলেন। সুতরাং এক যবীহ পাওয়া গেল। আর অনিবার্যভাবেই অপর যবীহ হলেন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি। কেননা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার বংশের অন্তর্ভুক্ত। আমি দুই যবীহ উনাদের সন্তানহাদীছ শরীফখানাকে হযরত ইবনুল জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ তথা বিশুদ্ধ বলেছেন।


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,নিশ্চয়ই কুরবানী করা হয়েছিল হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে।অনুরূপ রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে। যেমনটি হাদীছ শরীফ-এর বিশুদ্ধ কিতাব আল মুসতাদরাক লিল হাকিম-এ উল্লেখ আছে। একইভাবে বিশিষ্ট তাবিয়ী হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এতে কোন সন্দেহ নেই যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী করতে নির্দেশ করেছিলেন।


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে (হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম) উনাকে বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম আপনাকে যবেহ করতেছি, আপনি কি বলেন? তখন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার সম্মানিত পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা করুন অর্থাৎ যবেহ করুন। অবশ্যই আমাকে ধৈর্য্যশীল পাবেন। এ প্রসঙ্গে তাফসীরে মাযহারী কিতাবে উল্লেখ আছে, এ কথা সুনিশ্চিত যে, সূরা ছফফাত-এর ১০১ নম্বর আয়াত শরীফ-এ উদ্ধৃত ধৈর্যশীল পুত্রবলে বুঝানো হয়েছে- হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে। আর উনাকেই কুরবানী করার নির্দেশ পেয়েছিলেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। অর্থাৎ তিনিই ছিলেন যবীহ’ (উৎসর্গকৃত)। কিন্তু ইহুদী, খ্রিস্টানরা বলে, ‘যবীহছিলেন হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম। তাদের এ উক্তি যে অসত্য, তা বলাই বাহুল্য

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলত হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কিত যে বর্ণনা রয়েছে তা ইসরাইলী বা ইহুদীদের বর্ণনা। ইহুদীরা হিংসার বশবর্তী হয়েই এরূপ মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে ও করছে।


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি তাফসীরে মাযহারীকিতাবের বরাত দিয়ে আরো বলেন, হযরত ইমাম বাগবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেছেন, খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার এক পুণ্যবান নব মুসলমানকে (যিনি পূর্বে ছিলেন ইহুদী) জিজ্ঞেস করলেন, বলুন তো, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস তিনি উনার কোন পুত্রকে কুরবানী করার জন্য আদিষ্ট হয়েছিলেন? তিনি বললেন, হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে। তিনি আরো বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! ইহুদীরা এ কথা জানে। কিন্তু হিংসাবশত তারা স্বীকার করতে চায় না।


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি তাফসীরে মাযহারীকিতাবের বরাত দিয়ে বলেন, হযরত আসমায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি একবার হযরত আবু আমর ইবনে আলা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, বলুন তো, ‘যবীহুল্লাহছিলেন কে- হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম, না হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম? তিনি বললেন, তোমার কি জ্ঞান-বুদ্ধি আছে? হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম তিনি আবার মক্কা শরীফ-এ ছিলেন কবে? (হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম তিনি তো সিরিয়াতে বসবাস করতেন)


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি তাফসীরে মাযহারী কিতাবের বরাত দিয়ে আরো বলেন, এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, কুরবানীর উক্ত ঘটনাটি মক্কা শরীফ-এর পাশে মিনায় সংঘটিত হয়েছে। আর এটা তো জানা কথা যে, হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনিই মক্কা শরীফ-এ বসবাসরত ছিলেন। হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম তিনি নন। (কারণ তিনি তো সিরিয়াতে বসবাস করতেন।) সুতরাং হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনিই যবীহছিলেন।


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর অকাট্য দলীল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী করার জন্য যমীনে শোয়ায়ে ছিলেন। যা বিশ্বখ্যাত, সুপ্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য সমস্ত তাফসীর, হাদীছ শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ, ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবসমূহে বর্ণিত রয়েছে। যেমন- তাফসীর-এর কিতাব: (১) কুরতুবী, (২) বাইযাবী, (৩) রুহুল মায়ানী, (৪) খাযিন, (৫) ইবনে কাছীর, (৬) বাগবী, (৭) মাদারিক, (৮) ফতহুল ক্বাদীর, (৯) রুহুল বয়ান, (১০) মাযহারী, (১১) কবীর, (১২) দুররে মানছূর, (১৩) তাবারী, (১৪) আবী সউদ, (১৫) ছফওয়াতুত তাফাসীর, (১৬) জালালাইন, (১৭) কামালাইন, (১৮) গরায়িব, (১৯) যাদুল মাছীর, (২০) আল মুহাররারুল ওয়াজিয, (২১) মাওয়াহিব, (২২) হাশিয়ায়ে শিহাব, (২৩) ইবনে আব্বাস, (২৪) দুররে মাছুন, (২৫) কাশশাফ, (২৬) তাফসীরে হক্কানী, (২৭) দ্বিয়াউল কুরআন, (২৮) আহকামুল কুরআন, (২৯) লুবাব, (৩০) নাজমুদ দুরার, (৩১) কাসিমী, (৩২) মীযান, (৩৩) মাওয়ারদী, (৩৪) নূরুল ইরফান, (৩৫) তাফহীমুল কুরআন, (৩৬) মাআরিফুল কুরআন।
হাদীছ শরীফ-এর কিতাব: (৩৭) বুখারী শরীফ, (৩৮) মুসলিম শরীফ, (৩৯) মিশকাত শরীফ।
হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ: (৪০) উমদাতুল ক্বারী, (৪১) ফতহুল বারী, (৪২) ইরশাদুস সারী, (৪৩) তাইযীরুল ক্বারী, (৪৪) ফয়জুল বারী, (৪৫) শরহে নববী, (৪৬) ফতহুল মুলহিম, (৪৭) মিরকাত, (৪৮) লুময়াত, (৪৯) আশয়াতুল লুময়াত, (৫০) মুযাহিরে হক, (৫১) মিরআতুল মানাজীহ, (৫২) তালীকুছ ছবীহ।
ফতওয়া ও ফিক্বাহর কিতাব: (৫৩) ফতওয়ায়ে আলমগীরী, (৫৪) ফতওয়ায়ে শামী, (৫৫) ফতওয়ায়ে কাযীখান, (৫৬) ফতওয়ায়ে তাতারখানিয়া, (৫৭) ফতওয়ায়ে সিরাজিয়া, (৫৮) বাদায়ে, (৫৯) বাহরুর রায়েক, (৬০) মারাকিউল ফালাহ, (৬১) ফতহুল ক্বাদির, (৬২) শরহে বিক্বায়া, (৬৩) হেদায়া, (৬৪) দেরায়া ইত্যাদি।


মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো- ছহীহ এবং গ্রহণযোগ্য ফতওয়া হচ্ছে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী করার জন্য যমীনে শোয়ায়ে ছিলেন। আর হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কিত বর্ণনাটি মূলত ইসরাইলী তথা ইহুদীদের বর্ণনা, যা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য। তাই যারা ইসরাইলী বর্ণনায় বিশ্বাসী তাদের প্রতি প্রকাশ্য বাহাছের চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করে তিনি বলেন, যদি তাদের হিম্মত থাকে তাহলে যেনো বাহাছের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে।