হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, পাঁচ মহিমান্বিত রাত্রিতে বিশেষভাবে দুআ কবুল হয়ে থাকে। তার মধ্যে একটি রাত্রি হচ্ছে ঈদুল ফিতর-এর রাত্রি অর্থাৎ আমাদের দেশে যে রাত চাঁদ রাত হিসেবে পরিচিত সেই রাত্রি। কাজেই এই রাত্রিতে সকলের উচিত বিশেষভাবে তওবা-ইস্তিগফার করা, ইবাদত বন্দেগী করা যেরূপ শবে বরাত, শবে ক্বদরে করা হয়ে থাকে।
ঈদুল ফিতর-এর হুকুম-আহকামঃ
ঈদ অর্থ খুশি, আনন্দ। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এর এক মাস রোযার পর শাওওয়াল মাসের প্রথম তারিখ কুল-মুসলিমের জন্য খুশির দিন হিসেবে আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিয়া করেছেন। সর্বপ্রথম ফজর নামাযের পর গোসল করে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড় পরে আতর-সুরমা মেখে খুব সকাল সকাল ঈদগাহে গিয়ে ঈদুল ফিতর-এর দু’রাকাআত নামায আদায় করার মধ্য দিয়েই এই ঈদ শুরু হয়। নামায শেষে মুছাফাহা-মু’আনাকা করে পরস্পরে কুশল বিনিময় করে, যথাসাধ্য ভাল খাদ্য খেয়ে এদিন মু’মিন-মুসলমানগণ ঈদ উদযাপন করে থাকেন। ঈদুল ফিতরের দিন বিজোড় সংখ্যক খুরমা-খেজুর খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া, তাকবীর বলতে বলতে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং ফিরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে বাড়িতে ফেরা খাছ সুন্নত।
হাদীছ শরীফ-এ রয়েছে, ঈদুল ফিতর-এর নামায আদায় করে ফিরার পথে ফেরেশতাগণ রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে রোযা পালনকারীকে এই বলে ইস্তিক্ববাল জানাতে থাকেন যে, “হে আল্লাহ পাক উনার বান্দা! আপনাদেরকে ক্ষমা করা হলো। আপনাদের গুনাহ-খতা মাফ করা হলো। আপনাদেরকে কবুল করা হলো।” সুবহানাল্লাহ!
ঈদুল ফিতরের নামায আদায়ের নিয়মঃ
এ দিন সূর্যোদয়ের পর হতে দ্বিপ্রহরের পূর্বে জামাআতের সাথে অতিরিক্ত ছয় তাকবীরসহ দু’রাকাআত নামায আদায করা ওয়াজিব। ঈদের নামাযে খুৎবা পাঠ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। অতিরিক্ত ছয় তাকবীর বলার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাআতে তাকবীরে তাহরীমার পর তিন বার আল্লাহু আকবার বলে প্রথম দু’বার হাত ছেড়ে দিবে অতঃপর তৃতীয় তাকবীরে হাত বেঁধে যথারীতি প্রথম রাকাআত আদায় করবে। দ্বিতীয় রাকাআতে যথারীতি সূরা-ক্বিরায়াত আদায় করে রুকুতে যাওয়ার পূর্বে তিন তাকবীর বলবে এবং প্রত্যেক তাকবীরেই হাত ছেড়ে দিবে। চতুর্থ তাকবীর বলে রূকূতে যাবে। এরপর যথারীতি নামায শেষ করবে।
ঈদুল ফিতর-এর নামাযের নিয়তঃ
نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة العيد الفطر مع ستة تكبرات واجب الله تعالى اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر .
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রকা’আতাই ছলাতিল ঈদিল ফিতর মা’আ সিত্তাতি তাকবিরতি ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা ইক্বতাদাইতু বি হা-যাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল ক্বা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবার।
বাংলায়: আমি ক্বিবলামুখী হয়ে আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য ছয় তাকবীরের সাথে ঈদুল ফিতর-এর ওয়াজিব নামায এই ইমামের পিছনে আদায় করছি- আল্লাহু আকবার।
তথ্যসূত্রঃ আহ্কামু শাহরি রমাদ্বান