মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আলিমুল গইব। তিনি উনার মনোনীত রসূলগণ উনাদের ব্যতীত কারো নিকট ইলমে গইব প্রকাশ করেন না।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, আমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয়ের সমস্ত ইলম হাদিয়া করা হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রকার ইলমসহই সৃষ্টি হয়েছেন।
অসংখ্য আয়াত শরীফ ও ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই তা অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
যা অস্বীকার করা আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফকেই অস্বীকার করার শামিল। অর্থাৎ কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘গইব’ হচ্ছে এরূপ এক অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়; যা মানুষ চোখ, নাক, কান ইত্যাদি ইন্দ্রিয়সমূহের সাহায্যে উপলব্ধি করতে পারে না এবং যা কোনো দলীল-প্রমাণ ব্যতীত সুস্পষ্টভাবে ইলমের আওতায়ও আসে না। যেমন- জিন, ফেরেশতা, বেহেশত, দোযখ ইত্যাদি আমাদের জন্য গইব বা অদৃশ্য। কেননা এগুলোকে ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অথবা বিনা দলীলে শুধুমাত্র বিবেক বুদ্ধির দ্বারা অনুভব করা যায় না।
আসন্ন সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর অর্থাৎ কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪৩৩ হিজরী-এর গুরুত্ব ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা ও ফাযায়িল-ফযীলত আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘গইব’ দুই প্রকার। যথা- ১. যা যুক্তি প্রমাণভিত্তিক অর্থাৎ প্রমাণাদি দ্বারা অনুভব করা যায়। যেমন- বেহেশত, দোযখ মাখলুকাত, মহান আল্লাহ পাক উনার জাত, গুণাবলী এবং কুরআন শরীফ-এর আয়াতসমূহ দেখে এ সম্পর্কে অনুভব করা যায়। ২. যা দলীলের দ্বারাও অনুভব করা যায় না। যেমন- ক্বিয়ামত কখন হবে, মানুষ কখন মারা যাবে ইত্যাদি। আর এ দ্বিতীয় প্রকার গইবকেই ‘মাফাতীহুল গইব’ বলা হয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত ‘আল্লাহ পাক উনার নিকটেই রয়েছে গইবের চাবিকাঠি’ এ আয়াত শরীফ দ্বারা এরূপ গইবকেই বুঝানো হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, গইব যতো প্রকারই হোক না কেনো মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি হচ্ছেন (আলিমুল গইব) অর্থাৎ সর্বপ্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়ের ইলম মহান আল্লাহ পাক উনার রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ছাড়াই ইলমে গইবের অধিকারী। আর এরূপ ইলমে গইব সম্পর্কেই মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইলমে গইব নেই।” (সূরা নমল : আয়াত শরীফ ৬৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইলমে গইব তা শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনারই রয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পক্ষান্তরে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বপ্রকার ইলমে গইব হাদিয়া করেছেন। মুলত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রকার ইলমসহই সৃষ্টি হয়েছেন। যা অসংখ্য আয়াত শরীফ দ্বারা তো প্রমাণিত আছেই। সাথে সাথে অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারাও তা অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ-এর ‘সূরা জিন’-এর ২৬ ও ২৭ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তিনি (মহান আল্লাহ পাক) আলিমুল গইব, উনার ইলমে গইব উনার মনোনীত রসূল ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না।” অর্থাৎ রসূলগণ উনাদেরকে তিনি ইলমে গইব হাদিয়া করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ “তাফসীরে খাযিন ও বাগবী শরীফ”-এ উল্লেখ আছে যে, “যাঁকে উনার নুবুওওয়াত ও রিসালতের জন্য মনোনীত করেন, উনাকে যতটুকু ইচ্ছা ইলমে গইব হাদিয়া করেন। উনার ইলমে গইব উনার নুবুওওয়াতের প্রমাণস্বরূপ এবং উনার মু’জিযাও বটে।” শাব্দিক কিছু পার্থক্যসহ অনুরূপ ব্যাখ্যা তাফসীরে রুহুল বয়ান, জালালাইন, ছাবী ও আযীযীতেও উল্লেখ আছে। এছাড়া আরো অসংখ্য আয়াত শরীফ ও তার ব্যাখ্যায় সুস্পষ্টভাবেই উল্লেখ আছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলমে গইবের অধিকারী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এর বিখ্যাত ও মশহর কিতাব ‘মিশকাত শরীফ’-এ উল্লেখ আছে, “হযরত আব্দুর রহমান বিন আইশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আমি আমার রব উনাকে উত্তম ছুরত মুবারক-এর দেখেছি। আমার রব তিনি আমাকে বললেন, (হে আমার হাবীব!) মুকাররব ফেরেশতাগণ উনারা কোন বিষয়ে আলোচনা করছেন? আমি বললাম, আপনিই অধিক জানেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রহমতের হাত মুবারক আমার দু’কাঁধ মুবারক-এর মধ্যখানে রাখলেন। আমি উনার ফয়েজের শীতলতা আমার মধ্যে অনুভব করলাম। অতঃপর আসমান-যমীনের সকল বিষয় ও বস্তুর ইলম আমার অর্জিত হয়ে গেলো।”
মূলত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত ইলমসহই সৃষ্টি হয়েছেন এবং পরবর্তীতে যমীনে তাশরীফ এনেছেন। উক্ত হাদীছ শরীফ-এ যেটা বলা হয়েছে সেটা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। অর্থাৎ উনি যে সর্বপ্রকার ইলমসহ সৃষ্টি হয়েছেন উল্লিখিত হাদীছ শরীফ-এর মাধ্যম দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন তিনি নবী-রসূল হিসেবেই সৃষ্টি হয়েছেন তবে ৪০ বৎসর বয়স মুবারক-এ আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রকাশ করা হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আবূ মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয়ের সমস্ত ইলম হাদিয়া করা হয়েছে।” (ত্ববারানী, ইবনে আবি শাইবা, আবু ইয়ালা, কানযুল উম্মাল ৩১৯২৬) এছাড়াও আরো অনেক হাদীছ শরীফ রয়েছে যা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবশ্যই ইলমে গইব-এর অধিকারী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফসমূহের বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয় বা বস্তুর বিস্তারিত ও পরিপূর্ণ ইলম হাদিয়া করেছেন। মুলত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বপ্রকার ইলমসহই সৃষ্টি হয়েছেন। তাই তিনি পরিপূর্ণ ইলমে গইব-এর অধিকারী। যা উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলতের মধ্য থেকে একটি বিশেষ ফযীলত। কাজেই তিনি ‘ইলমে গইব’-এর অধিকারী নন’ একথা বলা- সরাসরি আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফকেই অস্বীকার করার শামিল। আর কোনো মুসলমান আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফকে অস্বীকার করলে সে ঈমানদার থাকতে পারে না বরং সে কাফিরের অন্তর্ভুক্ত হবে।