সুন্নতি পাগড়ী মুবারক:
পাগড়ী পরিধান করা
দায়েমী সুন্নত। মহান
আল্লাহ পাক
উনার রসূল,
হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা
পাগড়ী মুবারক
পরিধান করতেন। মক্কা
শরীফ বিজয়ের
সময়ে প্রিয়
নবীজীর মাথা
মুবারকে কাল
পাগড়ী মুবারক
ছিল।
তিনি পাগড়ীর
নিচে এবং
পাগড়ী ব্যতীত
শুধু টুপিও
ব্যবহার করেছেন।
ফজিলত:-
*.পাগড়ী সম্বন্ধে হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি
বলেন, “মানুষ
যখন পাগড়ী
পরা ছেড়ে
দিবে, তখন
তাদের থেকে
দ্বীন চলে
যাবে।”
.অন্যত্র এরশাদ ফরমান,
“পাগড়ী বাঁধ-
যা ইসলামের
নিদর্শন, মুসলমান
ও কাফেরদের
মধ্যে পার্থক্যকারী।”
*.পাগড়ী পরে নামাজ
পড়লে ৭০
গুণ বেশী
সওয়াব লাভ
করা যায়। (শামায়েলে
তিরমিযী শরীফ,
সিহাহ্ সিত্তাহ্,
মিরকাত, মাদারেজুন
নুবুওওয়ত, সিরাতুন নবী, জামউল ওসায়েল
ইত্যাদি)
*পরিমাপ:- হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিকাংশ
সময় যে
পাগড়ী মুবারক
ব্যবহার করতেন
তা ছিল
সাত হাত
লম্বা।
ঘরের মধ্যে
ব্যবহার করতেন
তিন হাত
এবং ঈদ,
জুমুয়া ও
দূতদের জন্যে
ব্যবহার করতেন
১২ হাত
লম্বা পাগড়ী
মুবারক।
(আদাবুন নবী)
*রং :- হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কালো,
সবুজ, সাদা,
ধূসর ইত্যাদি
বিভিন্ন রংয়ের
পাগড়ী মুবারক
পরিধান করতেন। তবে
কালো পাগড়ী
মুবারকই বেশী
ব্যবহার করতেন। (শামায়েলে
তিরমিযী শরীফ,
জামউল ওসায়েল
ও সীরত
গ্রন্থসমূহ)
*সিমলা:- সিমলা ১
বিঘত থেকে
১ হাতের
মধ্যে হওয়া
বাঞ্ছনীয় এবং তা দু’কাঁধের
মধ্যখানে ঝুলিয়ে
রাখা উত্তম। তবে
কখনো বা
সম্মুখ ভাগের
ডান দিকে
ঝুলিয়ে রাখাও
দুরস্ত আছে। (শামায়েলে
তিরমিযী শরীফ,
জামউল ওসায়েল)
সুন্নতি টুপি মুবারক :
চার টুকরা বিশিষ্ট
গোল, সাদা,
সুতি কাপড়ের
তৈরী সুন্নতি
টুপি মুবারক
মহান আল্লাহ্ পাক,
হযরত জিব্রাঈল
আলাইহিস সালাম
কর্তৃক জান্নাত
হতে এনে
হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
যে টুপি
মুবারক পরিধান
করতে দিয়েছিলেন,
তা ছিল
চার টুকরা
বিশিষ্ট এবং
গোল।
অর্থাৎ উপরে
এক টুকরা
এবং চারদিকে
তিন টুকরা
দ্বারা বেষ্টিত,
যা সাদা,
সূতী এবং
মাথার সাথে
লেগে থাকে। তা
পরিধান করা
খাছ সুন্নতের
অন্তর্ভূক্ত। (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত
শরীফ, মিরকাত
শরীফ, ইসরারুল
আওলিয়া, আনিসুল
আরওয়াহ্, দলিলুল আরেফীন)
টিকা:- হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো
কিস্তি টুপি,
চোক্কা বা
উঁচু টুপি
পরিধান করেননি। এমনকি
এর পক্ষে
কেউ কোন
প্রমাণও পেশ
করার যোগ্যতা
রাখেনা এবং
এসব টুপি
পরিধান করা
মাকরূহ্।
(আলমগীরী, এতাবীয়া)
গোল গুটলি বিশিষ্ট, কোনা বন্ধ সুন্নতি কোর্তা মুবারক:
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোর্তা
মুবারক পরিধান
করতেন; যা
হাঁটু ও
গিরার মাঝামাঝি
পর্যন্ত লম্বা
ছিল এবং
আস্তিন কব্জি
পর্যন্ত বিলম্বিত। তা
গুটলি যুক্ত,
কোনা বন্ধ
(গোল)।
তিনি সাদা
এবং (মিশরীয়)
সূতী বেশী
পছন্দ করতেন। তবে
অন্যান্য রংয়ের
কোর্তাও পরিধান
করতেন।
(বোখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ ও নাসাঈ শরীফ
(বোখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ ও নাসাঈ শরীফ
টিকা :- হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে
কখনো কোনা
ফাঁড়া কোর্তা
বা পাঞ্জাবী
পরিধান করেননি। বর্তমান
কালের অনেক
আলেম
নামধারী লোকেরা পরে
থাকে।
মূলত: এটা
দলীল-প্রমাণবিহীন,
স্রেফ মনগড়া
আমল মাত্র। এমনকি
তিনি কখনো
গেঞ্জিও পরিধান
করেননি।
সুন্নতি মিম্বার শরীফ এবং লাঠি মুবারক:
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুত্বা দেয়ার
সময় খেজুর
গাছের কাঠ
দ্বারা নির্মিত
লাঠি মুবারক
ব্যবহার করতেন। যা
স্বীয় কাঁধ
মুবারক পর্যন্ত
বিলম্বিত ছিল। (আবূ
দাউদ শরীফ,
গায়াতুল আওতার,
মুহীতে সারাখ্সী এবং
সীরত গ্রন্থসমূহ)
কালো রং-এর সুন্নতি জুব্বা মুবারক:
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ঈদ, জুমুয়া
এবং বিশেষ
বিশেষ অনুষ্ঠানে
জুব্বা মুবারক
পরিধান করতেন। যার
জেব এবং
আস্তিনের উপর
এমন কি
নিম্নাংশেও সুক্ষ্ম রেশমের কার্বকার্য ছিল।
(তিরমিযী শরীফ, আবূদাউদ
শরীফ ও
সীরত গ্রন্থসমূহ
টিকা :- হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
যামানায় মুজিব
কোর্ট, ওয়েষ্ট
কোর্ট, শেরওয়ানী
ইত্যাদির প্রচলন
ছিলনা, এগুলো
স্পষ্টতই বিদ্য়াতের অন্তর্ভূক্ত
শাল, সেগুন, শীল কড়ই কাঠে তৈরী সুন্নতি চকি মুবারক:
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-উনার
চকি মুবারক
ছিল চার
পায়া বিশিষ্ট
এবং কাঠের
তৈরী।
এছাড়াও চারপায়া
ছিল দড়ির
তৈরী, যার
ফলে কখনো
কখনো দেহ
মোবারকে দাগ
পড়ে যেত।
পরিমাপ :- একাকী ব্যবহারের
জন্যে সাড়ে
চার হাত
লম্বা ও
আড়াই হাত
চওড়া এবং
আরেকটি সাড়ে
চার হাত
লম্বা এবং
প্রায় সাড়ে
তিন হাত
চওড়া ছিল। (সীরাতুন
নবী, এবং
আরো অন্যান্য
সীরত গ্রন্থসমূহ)
চামড়ার তৈরী দুই ফিতা বিশিষ্ট ক্রস সুন্নতি না’লাইন শরীফ:
হযরত আবূ হুরায়রা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম
দু’ফিতা
বিশিষ্ট চামড়ার
জুতা (স্যান্ডেল
বা নালাইন
শরীফ) পরিধান
করতেন।
(শামায়েলে তিরমিযী শরীফ, জামউল ওসায়েল,
আদাবুন নবী)
অর্থাৎ উনার জুতা
(স্যান্ডেল) মুবারক ছিল দু’ফিতা
যুক্ত (ক্রস
বেল্ট), যা
সম্পূর্ণ (তলা’ও) চামড়ার দ্বারা
নির্মিত এবং
তা লাল-খয়েরী রংয়ের
ছিল।
সুন্নতি চিরুনী মুবারক:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
ব্যবহৃত চিরুনী
মুবারক ছিল
হাতির দাঁত
অথবা হাড়
দ্বারা তৈরী।
হাতির দাঁত বা
হাড় দ্বারা
তৈরী খাছ
সুন্নতি চির্বনী
মুবারক
সুন্নতি বালিশ মুবারক:
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-উনার
বালিশ মুবারক
ছিল চামড়ার। ভিতরে
তুলার পরিবর্তে
খেজুরের পাতা
ও ছোবড়া
ভর্তি ছিল। (সীরত
গ্রন্থসমূহ)
খেজুর গাছের পাতা
ও তার
ছাল ভর্তি
চামড়ার তৈরী সুন্নতি
বালিশ মুবারক
কাঠের তৈরী সুন্নতি প্লেট, বাটি, পেয়ালা, নিমকদানী, চামচ ও চামড়ার তৈরী দস্তরখানা:
পান পাত্র মুবারক
:- হযরত সাবেত
রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন- হযরত
আনাস ইব্নে মালেক
রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু লোহার
পাত লাগানো
কাঠের মোটা
একটি পাত্র
দেখিয়ে বললেন,
ওহে সাবেত,
এটা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-উনার
পান পাত্র
মুবারক।
(তিরমিযী শরীফ,
শামায়েলে তিরমিযী শরীফ, জামউল ওসায়েল)
দস্তরখান মুবারক :- হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -উনার
দস্তরখান মুবারক
ছিল চামড়ার
এবং তা
হাল্কা
লাল (খয়েরী)
রংয়ের ছিল। (শামায়েলে
তিরমিযী শরীফ,
আনিসুল আরওয়াহ্,
জামউল ওসায়েল)
পেয়ালা মুবারক :
হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু বলেন, আমি এ (উপরে বর্ণিত) পেয়ালা (পান পাত্র) দ্বারা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পান করার যাবতীয় বস্তু যেমন- পানি নাবীয, মধু এবং দুধ পান করিয়েছি। খাওয়ার বাসন (পেয়ালা) বলতে ছিল- লোহার পাত যুক্ত কাঠের একটি পেয়ালা। (শামায়েলে তিরমিযী শরীফ, জামউল ওসায়েল)ঐতিহাসিক সুন্নতি মসজিদ, রাজারবাগ শরীফ
এটি হচ্ছে সেই
সুন্নতি মসজিদ-এর ভেতরের
দৃশ্য।
যে মসজিদ
স্বয়ং নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মুবারক দিক
নির্দশনায় নির্মান করেছিলেন বর্তমান ১৫
শতকের মুজাদ্দিদ,
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামে আ’যম, গাউসূল
আ’যম,
খলিফাতুল্লাহ, খলিফাতু রসূলিল্লা, ঢাকা রাজারবাগ
শরীফ-এর
মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা
আলাইহিস সালাম।
তথ্যসূত্রঃ সুন্নতে হাবীবী ছল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম
তথ্যসূত্রঃ সুন্নতে হাবীবী ছল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম