জাম্মু ও কাশ্মীর পরিচিতিঃ
জম্মু ও কাশ্মিরকে জালিম
রাষ্ট্র ভারত এখনও তার সর্ব উত্তরের প্রদেশ হিসেবে বলবৎ রেখেছে। এর অধিকাংশই হিমালয়
পাহাড়ে অবস্থিত। এ প্রদেশের তিনটি অঞ্চল রয়েছে- জাম্মু, কাশ্মির ভ্যালি ও লাদাখ (ছোট তিব্বত)। কাশ্মিরের কিছু অংশ
ভারত নিয়ন্ত্রিত ও কিছু অংশ পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত ছিল।
কাশ্মিরের ইতিহাসঃ
১৯২৫ সালে হরি সিং নামক
এক হিন্দু কাশ্মিরের সিংহাসনে বসে। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের সময়েও মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মির
সেই হিন্দু রাজার শাসনে ছিলো। সে সময় কাশ্মিরের ৭৭% মানুষ ছিল মুসলমান। দেশ বিভাগের
সময় সেও কাশ্মিরের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। তা হতেও পারতো। কিন্তু হঠাৎই ১৯৪৭ সালের
২০ অক্টোবর পাকিস্তানি পার্বত্য পাঠান দস্যুদের আক্রমণের শিকার হয় দুর্ভাগা কাশ্মিরের
অধিবাসীরা। সে সময় পাঠানদের হাত থেকে বাঁচতে ও ভারতীয় সেনাদের সাহায্য লাভের আশায়
ভারতের সঙ্গে যোগ দেয় হরি সিং, অথচ কাশ্মিরের
প্রায় ৮০% মুসলমান পাকিস্তানের সাথেই যোগ দেওয়ার পক্ষে ছিল। হরি সিং এর সেই ভারতের
সাথে হাত মিলানোর অঘটন আজো কাশ্মিরিদের গলার কাঁটা হয়ে আছে। যে কাঁটা দূর করেতে ব্যর্থ
ভারতের মতো বিশ্বের বৃহৎ ও উদার গণতন্ত্র। ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর মহারাজা হরি সিং ‘ Instrument of
Accession’ এ স্বাক্ষর করে যা পরের
দিন ভারতের সাধারণ রাজ্যপশাসক কর্তৃক গৃহীত হয়েছিল। এই স্বাক্ষরের পরই হামলাকারীদের
উচ্ছেদ করার জন্য ভারতীয় সৈন্যরা কাশ্মীরে প্রবেশ করে। কিন্তু তীব্র শীত থাকায় তারা
সবাইকে বিতাড়িত করতে পারে নি। এমতাবস্থায়, ভারত বিষয়টিকে জাতিসংঘের নিকট উপস্থাপন করে। জাতিসংঘ তখন পাকিস্তান ও ভারত উভয়কেই
তাদের দখলকৃত ভূমি খালি করে দিয়ে গণভোটের আয়োজন করতে বলে। কিন্তু ১৯৫২ সালে ভারত এ
গণভোটকে নাকচ করে দেয়, কারণ তারা জানত যে গণভোটে
জনগণের রায় ভারতের বিপক্ষেই যেত।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে
সম্পর্কের টানাপোড়ন শুরু থেকেই ছিল। সেই দ্বন্দ্ব ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের
মধ্যে যুদ্ধে রূপ নেয়। ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। ১৯৬২
সালে ইন্ডিয়ার অধীনে জাম্মু ও কাশ্মিরের ৬০% অঞ্চল (জাম্মু, কাশ্মির ভ্যালি ও লাদাখ) ছিল, পাকিস্তানের অধীনে ৩০% (গিলগিত-বালতিস্তান ও আজাদ কাশ্মির)
এবং চীনের অধীনে ১০% অঞ্চল (আকসাই চিন) ছিল।
কাশ্মিরের দুর্ভাগ্যের কারণ ও ইতিহাসঃ
তবে কাশ্মিরীদের বর্তমান
গোলামী দশার জন্য শুধু ভারতই দায়ী নয়, কাশ্মিরীরাও। বিশেষ করে তাদের নেতারা। স্বাধীনতা খয়রাতের মাল নয়, এটি অতি কষ্টে অর্জনের বিষয়। এজন্য অপরিহার্য হল, যোগ্য ও সৎ নেতৃত্ব এবং জনগণের কোরবানি। মুসলমানদের অপূরণীয়
ক্ষতি শুধু অমুসলিম শত্র“রাই করেনি। বড়
বড় ক্ষতি করেছে মুসলমান নামধারি সেকুলার ও ইসলামে অঙ্গিকাহীন জাতিয়তাবাদী নেতারা।
আজ মুসলিম বিশ্ব যেরূপ বিভক্ত, শক্তিহীন ও ইজ্জতহীন
তার কারণ তো তারাই। বাংলা, পাঞ্জাব, সিন্ধু, সীমান্ত প্রদেশ
ও বেলুচিস্তানের মুসলমানদের ন্যায় কাশ্মিরীদেরও স্বাধীন হওয়ার মোক্ষম সুযোগ এসেছিল।
ভারতবর্ষের বুকে মুসলমানদের জন্য স্বাধীন দেশ রূপে যারা পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখতেন
তারা কাশ্মির নিয়ে যতটা ভাবতেন কাশ্মিরীদের নিজেদের নেতারাও ততটা ভাবেনি। ক্যাম্ব্রিজের
ছাত্র চৌধুরি রহমত আলী তার আবিস্কৃত পাকিস্তান শব্দটির ‘ক’ অক্ষরটি নিয়েছিলেন
কাশ্মিরের প্রথম অক্ষর থেকে। কিন্তু ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার একমাত্র যে ট্রেনটি নতুন
স্বপ্নের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে সেটি ধরতে তারা দারুন ভাবে ব্যর্থ হয়। এর জন্য দায়ী
তাদের ইসলামে অঙ্গিকারহীন সেকুলার নেতারা। এ নেতাদেরই একজন হলেন শেখ আব্দুল্লাহ।
কাশ্মিরের অমুসলিম ডোগরা
রাজার বিরুদ্ধে তুমুল গণ আন্দোলনের সূত্রাপাত হয় ১৯৩১ সালে। এবং সেটি জম্মুতে রাজার
সৈন্যদের দ্বারা পবিত্র কোরআনের অবমাননা হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তখন আন্দোলনে নেতৃত্ব
দিচ্ছিল মুসলিম কনফারেন্স এবং তার নেতা ছিলেন শেখ আব্দুল্লাহ। তিনি ছিলেন চিন্তা-চেতনায়
সেকুলার এবং ইসলামে অঙ্গিকার শুণ্য। পাকিস্তানের
স্বপ্ন তার ভাল লাগেনি। অথচ পাকিস্তান গড়ার কাজ চলছিল তার ঘরের পাশে। তার ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব ছিল কংগ্রেস নেতা জওহার লাল
নেহেরুর সাথে। নেহেরুও ন্যায় তিনিও মুসলিম লীগের দ্বি-জাতি তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন
না। বিশ্বাসী ছিলেন ভারতীয় এক জাতি তত্ত্বে। ফলে মুসলিম লীগের সাথে স¤পর্ক না গড়ে তিনি সম্পর্ক গড়েন কংগ্রেসের সাথে। তার কাছে
যেটি অধিক গুরুত্ব পায় সেটি কাশ্মিরের মুসলমানদের ঐক্য নয়, বরং সেটি কাশ্মিরের হিন্দু পন্ডিতদের সাথে একাত্ব হওয়া।
ফলে দুই টুকরায় বিভক্ত হয় কাশ্মিরী মুসলমানেরা। ১৯৩৯ সালের ১১শে জুনে শেখ আব্দুল্লাহ
মুসলিম কনফারেন্সের নাম পাল্টিয়ে রাখেন ন্যাশনাল কনফারেন্স। এভাবে একতার গুরুত্ব যে
সময়টিতে সর্বাধিক ছিল তখন অনৈক্যই তীব্রতর হয়। মুসলিম কনফারেন্স দ্বিখন্ডিত হয়ে
যায়। ন্যাশনাল কনফারেন্সের বিপরীতে মুসলিম কনফারেন্সের নেতৃত্ব দেন চৌধুরি গোলাম আব্বাস
এবং মির ওয়াইজ ইউসুফ শাহ। মুসলিম কনফারেন্স পাকিস্তানে যোগ দেওয়ার পক্ষে জোর দাবী
জানায়।
১৯৪৭ সালে হিন্দু রাজা
হরি শিংয়ের সাথে শেখ আব্দুল্লাহ কাশ্মির ভূক্তির পক্ষে সিদ্ধান্ত নেন। মুসলিম স্বার্থের
সাথে এরূপ বিশ্বাসঘাতকতার বিণিময়ে শেখ আব্দুল্লাহ কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী হন। এবং
কারারুদ্ধ করা হয় পাকিস্তানপন্থি নেতা চৌধুরি গোলাম আব্বাসকে। কিন্তু বিশ্বাসঘাতক
নিছক বিশ্বাসঘাতকই, তাদের গুরুত্ব বেশীকাল
থেকে না। এমনকি যাদের কাছে নিজেদের বিক্রি করে তাদের কাছেও না। নেহেরুও সাথে শেখ আব্দুল্লাহর
সম্পর্কে ফাটল ধরতে থাকে। ১৯৫৩ সালে তার মনে কাশ্মিরকে স্বাধীন দেশ রূপে দেখার স্বপ্ন
জাগে। কিন্তু কুমিরের পেটে একবার ঢুকলে কি
সেখান থেকে বেড়িয়ে আসা যায়? ভারত সরকার তাকে
এ স্বপ্ন দেখার শাস্তি স্বরূপ ১৯৫৩ সালের ৯ই আগষ্ট কারারুদ্ধ করে। শেখ আব্দুল্লাহ যখন
জেলে তখন ভারতের শাসনতন্ত্রে কাশ্মিরের যে আলাদা মর্যাদা ছিল সেটিও বিনষ্ট করা হয়।
পাকিস্তান তখনও জাতিসংঘে কাশ্মির ইস্যু নিয়ে মাঝে মধ্যে উত্তপ্ত আলোচনার সূত্রপাত
করতো। ১৯৬৭ সালে শুরু হয় গোপন স্বাধীনতা সংগ্রাম। নেতৃত্ব দিচিছল আল ফাতাহ নামে একটি
সংগঠন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের বছরে ভারত সরকার এ গোপন আন্দোলনকে ধ্বংস
করে দেয়। কারণ তখন ভারতের পালে প্রচন্ড বাতাস। তখন ভারতের টিমে বাংলা থেকে আরেক শেখ
এসে যোগ দিয়েছিল। অবশেষে ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধি সরকার শেখ আব্দুল্লাহর সাথে চুক্তি
করে। এবং আবার তাকে কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী করে। শেখ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর একই চেতনার
অনুসারি পুত্র ডাঃ ফারুক আব্দুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী হন। তবে এখন এ পরিবারটি রাজনীতির
মৃত ঘোড়া।
কাশ্মিরের বর্তমান পরিস্থিতিঃ
ভারতের অহংকার, এ বিশ্বে তারাই সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু একথা
বলে না,
তারাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণবাদী ও
দখলদার দেশ। তার নমুনা কাশ্মির। দুনিয়ার আর কোথাও মাথাপিছু হারে এত অধিক সংখ্যক দখলদার
সৈন্য নেই যা রয়েছে কাশ্মিরে। ইরাকের জনসংখ্যা
২ কোটি ৭৫ লাখ (জুলাই, ২০০৭য়ের হিসাব
মোতাবেক) এবং আয়তন ১৬৯,২৩৫ বর্গমাইল।
ইরাকে দখলদার মার্কিন ও তার মিত্রবাহিনীর সৈন্য সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। আফগানিস্তানের
জনসংখ্যা তিন কোটি বিশ লাখ (জুলাই, ২০০৭য়ের হিসাব
মোতাবেক) এবং আয়তন ২৫১, ৮৮৯ বর্গমাইল।
এবং সেখানে দখলদার ন্যাটো বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ৭০ হাজার। কাশ্মিরের জনসংখ্যা মাত্র
এক কোটি এবং আয়তন ৮৫, ৮৬৬ বর্গমাইল। অধিকৃত সে
কাশ্মিরে ভারতীয় দখলদার বাহিনীর সেনা সংখ্যা ৫ লাখ। অর্থাৎ প্রতি একলাখ মানুষের জন্য
আফগানিস্তানে যেখানে ২১৮ জন দখলদার সেনা এবং ইরাকে ৫৪৫ জন; কাশ্মিরে সে সংখ্যা হল ৫ হাজার। হিসাবে দাঁড়ায়, গড়ে প্রতি ১০০০ কাশ্মিরীর জন্য রয়েছে ২০জন ভারতীয় সৈন্য।
প্রতিটি কাশ্মিরী পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি গড়ে ৫ জন ধরা হয় তবে অর্থ দাঁড়ায়, যে গ্রামে ২০০ ঘর মানুষের বাস সেখানে অবস্থান নিয়েছে ২০
জন ভারতীয় সৈন্য। অথচ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান যখন তার তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান প্রদেশে
প্রকান্ড যুদ্ধ লড়ছিল তখনও এ এলাকায় তার সৈন্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৯০ হাজার; প্রতি এক লাখের জন্য মাত্র ১২০ জন। ১৫ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানে
বর্তমানে সর্বমোট সৈন্য সংখ্যা হল ৬ লাখ ১৯ হাজার।
কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর
বিশাল অবস্থান আজ থেকে নয়, ১৯৪৭ সাল থেকেই।
তবে সে সংখ্যা ব্যাপক ভাবে বেড়েছে ১৯৮৯ সালে। কারণ তখন থেকেই কাশ্মিরে ভারতপন্থি শেখ
আব্দুল্লাহ পরিবারের প্রভাব ব্যাপক ভাবে লোপ পায় এবং তীব্রতর হয় স্বাধীনতার দাবী।
সে দাবী এখন প্রতিদিন তীব্রতর হচেছ এবং সে সাথে দিন দিন বাড়ছে সৈন্য সংখ্যা। সম্ভবতঃ
সেদিন বেশী দূরে নয় যখন এ সৈন্য সংখ্যা ১০ লাখে গিয়ে পৌঁছবে। অথচ ভারত বিশ্বজুড়ে
বলে বেড়ায়, ভারত গণতান্ত্রিক দেশ।
গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিগণ তো সে দেশের নাগরিকত্ব স্বেচ্ছায় বরণ করে নিবে, আইন মেনে চলবে এবং প্রয়োজনে সেদেশের প্রতিরক্ষায় প্রাণও
দিবে। কিন্তু তাদের মাথার উপর এত সৈন্য কেন? কোন গণতান্ত্রিক দেশে এর নজির আছে কি? সমগ্র ভারত শাসনেও এতজন ইংরেজ সৈন্য ছিল না যা এখন ভারতীয় সৈন্যের লেবাসে রয়েছে
কাশ্মীরে। এটিই কি গণতন্ত্রের নমুনা? ভারত একথাও বলে বেড়ায়, কাশ্মিরী জনগণ
ভারতের সাথে স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছে এবং তারা ভারতীয় নাগরিক রূপেই থাকতে চায়।
প্রশ্ন হল, কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর এ বিশাল উপস্থিতি কি সেটাই প্রমাণ
করে? কোন জেল খানায় ১ হাজার কয়েদীর বাস হলে সে জেলখানার পাহারায়
কি এভাবে মিশিন গান ও কামানধারি ২০ জন সৈন্য পাঠানো হয়? পাঠানো হয় কি ট্যাংক, হেলিকপ্টার গানশিপ ও সাঁজোয়া গাড়ি। কোন দেশে কি তার নিজদেশের জনগণের ঘরের
সামনে মেশিন-গানধারি সৈন্য পাঠায়? ঘর ও রাস্তা পাহারার
জন্য কি কামান, সাঁজোয়া গাড়ি বা ট্যাংক
পাঠায়?
এগুলো তো থাকবে সীমান্তে। স্বাধীন দেশের জনগণ
তো নিজঘর ও রাস্তাতো নিজেরাই পাহারা দেয়। রণ প্রস্তুতি নিয়ে ঘরে সামনে যখন সৈন্যের
আগমন ঘটে তখন বুঝতে কি বাঁকি থাকে, সে সৈন্যের আগমন
ঘটেছে স্বাধীনতার হরণে, প্রতিরক্ষায় নয়।
কোন দেশে সৈন্য কি ঘরে ঢুকে স্বাধীনতার প্রতিরক্ষা দেয়? তারা তো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বা ঘরের সামনে খাড়া হয়
কোন দেশকে জেলখানা করতে। যেমনটি ইসরাইলী সেনাবাহিনী করেছে সমগ্র ফিলিস্তিনে। তবে কাশ্মিরকে
এখন জেলখানা বললেও ভূল হবে। জেলখানার কয়েদী থেকে তার কাঙ্খিত দেশের নাগরিকত্ব কেড়ে
নেওয়া হয় না। কিন্তু ভারত সেটি কাশ্মিরীদের থেকে কেড়ে নিয়েছে। কাশ্মিরী জনগণ বহু
আগেই প্রমাণ করেছে, তারা ভারতের নাগরিক হতে
চায় না। এটি তাদের উপর জোর করে চাপানো হয়ে। ১৯৪৭ সালে হিন্দুরাজা জনসংখ্যার শতকরা
৮০ ভাগ মুসলিম নাগরিকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভারতে যোগ দিয়েছে। তারা চায় পাকিস্তানে যোগ
দিতে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সে জনগণের ইচ্ছার কথা জাতিসংঘের কাছেও অপরিচিত নয়, কাশ্মির আজও জাতিসংঘ মোতাবেক বিতর্কিত এলাকা। ভারত তাই কাশ্মিরকে
নিজেদের ভূখন্ড বলে দাবী করলেও আন্তর্জাতিক ভাবে সে দাবী স্বীকৃত নয়। সে দাবী প্রমাণের
জন্য জাতিসংঘ ভারতকে ১৯৪৮ সালেই গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছিল। জওহার নেহেরু সেটি মেনেও
নিয়েছিলেন। কিন্তু হেরে যাবে এ ভয়ে এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকে অভয় পাওয়াতে জাতিসংঘের
গণভোটের প্রস্তাব আজও ভারত বাস্তবায়ীত হতে দেয়নি। ভারতের প্রতি এখনও কাশ্মিরীদের
এটাই মূল দাবী।
জাতিসংঘ তত্ত্বাবধানে নির্বাচন
করে ভারতই প্রমাণ করুক কাশ্মিরীরা কোন দিকে যোগ দিতে চায়, ভারতে না পাকিস্তানে। ভারত বলে, সেখানে বহু নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু কথা হল, সে নির্বাচনগুলো হয়েছে কে মন্ত্রী বা এমপি হবে সে প্রশ্নে।
কাশ্মির কোন দিকে যোগ দিবে সে মৌলিক বিষয়ে নয়। এমন নির্বাচন তো ব্রিটিশের উপনিবেশিক
শাসনামলে ভারতেও হয়েছে। পাকিস্তানে যাবে কি যাবে না সেটি যাচায়ে গণভোটের যে অধিকার
আসামের সিলেটবাসীরা ও পাকিস্তানের সীমান্ত প্রদেশের অধিবাসীরা, কাশ্মিরীরাও সেটি পেতে চায়। সেটি তো তাদের মৌলিক নাগরিক
অধিকার। গণতন্ত্র নিয়ে বড়াই করলেও ভারত সে অধিকার কাশ্মিরীদের দিতে রাজী নয়। জেলখানায়
বসে বার বার ভোট দিলেই কি গণতন্ত্রচর্চা হয়? কাশ্মিরীদের কাছে এটি গুরুত্বপূর্ণ নয় যে ভোটে কে মন্ত্রী হবে বা এমপি হবে।
তাদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ হল তারা কোন দেশের নাগরিক হবে। সেটি নির্ধারিত হলেই পরের
প্রশ্নটি আসে সে দেশে কারা মন্ত্রী বা এমপি হবে। ভোটের মাধ্যমে তারা সেটি নির্ধারণ
করতে চায়। অথচ ভারত তাদেরকে সে অধিকার দিতে
রাজী নয়। কাশ্মির আজ অশান্ত এবং দেশটিতে দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে অবিরাম রক্ত ঝরছে মূলত এ
ন্যয্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যেই। ভারতের এ গণতন্ত্রকে তার আর গণতন্ত্র বলতেও রাজী নয়।
তাদের কাছে এটি ডিমোক্রাসী নয়, বরং ডিমোনক্রাজী।
ইংরাজি শব্দ ডিমনের অর্থ ভূত, আর ক্রেজ হলো খ্যাপামী।
কোটি কোটি দেব-দেবতার ও ভূত-পেতের দেশে এখন কাশ্মির প্রসঙ্গে ভূতুড়ে খ্যাপামীই চেপেছে।
এমন খ্যাপামীর কারণে অসম্ভব হয়ে পড়েছে গণতন্ত্র-সম্মত সমাধানের। এবং গুরুত্ব হারিয়েছে
শান্তিপূর্ণ অহিংস আন্দোলন।
কাশ্মিরীদের স্বাধীনতা
আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেখান থেকে প্রখ্যাত ভারতীয় সাহিত্যিক অরুণদ্ধুতি
রায় লন্ডনের দৈনিক গার্ডিয়ানে যে নিবদ্ধ লিখেছেন সেটি তথ্যবহুল। তিনি লিখেছেন, গত ১৫ই আগষ্ট ছিল ভারতের স্বাধীনতা দিবস। সেদিন শ্রীনগরের
কেন্দ্রস্থল লালা চক দখলে নিয়েছিল বিশাল জনসমুদ্র। তারা হাতে নিয়েছিল পাকিস্তানের
পতাকা। আওয়াজ তুলছিল ‘জিয়ে জিয়ে পাকিস্তান’। অর্থাৎ পাকিস্তান জিন্দাবাদ। স্লোগান তুলছিল, ‘হাম কিয়া চাহতে হেঁ?’ জনতার মুখে জবাব ছিল ‘আযাদী’। জ্বিজ্ঞাসার সুরে স্লোগান উঠছিল, ‘‘আযাদী কা মতলিব কিয়া (অর্থঃ স্বাধীনতার লক্ষ্য কি?) জনতা সমস্বরে জবার দিচ্ছিল- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আওয়াজ উঠছিল, পাকিস্তান ছে রিশতা
কিয়া?
(অর্থঃ পাকিস্তানের সাথে আমাদের সম্পর্ক কি?) জনতা জবাব দিচ্ছিল, ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’। তারা বলেছে, ‘‘এ্যায় জাবেরো, এ্যায় জালেমো! কাশ্মির হামারা ছোড় দো’’ অর্থঃ ‘‘হে অত্যাচারি, হে জালেম! আমাদের কাশ্মির ছেড়ে দাও।’’ অরুন্ধতি রায় আরো লিখেছেন, তারা আরো বলেছে, ‘‘নাঙ্গাভূখা হিন্দুস্তান, জানছে পেয়ারা
পাকিস্তান।’’ ১৫ই আগষ্টে সবুজ পতাকা
ছেয়ে ফেলেছিল শ্রীনগর শহর। অথচ ভারতের স্বাধীনতার এ দিনটিতে ভারতের পতাকা শোভা পাওয়াই
স্বাভাবিক ছিল। ঐ দিনকে ‘গোলামীর দিন’ রূপে ধ্বণিত করছিল। জনতার ঢল নেমেছিল শুধু শ্রীনগরে নয়, শহরতলীর গ্রামগুলোতেও। বাস, টেম্পো, ট্রাক, মটর সাইকেল ও রিকশায় চেপে মানুষের ঢল নেমেছিল শ্রীনগরের
রাজ পথে। ভারতপন্থি দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিপলস’ ডিমোক্রাটিক পার্টির নেতাদের দিল্লিস্থ টিভি স্টুডিওতে দেখা
গেলেও তাদের কারো সাহস ছিল না শ্রীনগরের রাজপথে নামার। মনে হচ্ছিল, জনগণ যেন নতুন ভাবে নিজেদের আবিস্কার করেছে। লোপ পেয়েছে
ভয়, জেগে উঠেছে তাদের প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস। অরুন্ধতি রায়ের কথায়
মনে হয়,
ফিলিস্তিনীদের ইন্তেফাদা (গণঅভ্যূর্ত্থাণ) যেন
নেমে এসেছে শ্রীনগরের অলি-গলিতে। ফিলিস্তিনী শিশু ও যুবকেরা যেমন নির্ভয়ে পাথর ছুড়ে
ইসরাইলী আর্মির টহলদার গাড়ির উপর, তেমন চিত্র শ্রীনগরেও।
শহর জুড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির শোভা পাচ্ছে সবুজ পতাকা। শ্রীনগর শহরের যেন নতুন সাজ। ভারতীয়
গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রসঙ্গ তুললে মহিলারা তারস্বরে বলে, কিসের স্বাধীনতা? ভারতীয় সৈন্যদের হাতে ধর্ষিতা হওয়ার স্বাধীনতা? তবে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও অহিংস পথে শুরু হলেও ভারতী নিরাপত্তা
বাহিনীর সদস্য সেটিকে শান্তিপূর্ণ থাকতে দেয়নি। ইতিমধ্যে বহু নিরীহ নাগরিককে তারা
হত্যা করেছে। প্রায় প্রতিদিনই চলছে গুলিবর্ষণের ঘটনা। ভারতীয় সেনারা শ্রীনগর শহরে
কারফিউ জারি করছে, কিন্তু কারফিউ ভেঙ্গে মিছিল
হচ্ছে। এবং প্রাণও দিচ্ছে। এ প্রাণদান গণ্য হচেছ পবিত্র শাহাদত রূপে।
কাশ্মিরীদের মাঝে ক্ষোভের
যে আগুণ ভিতরে ভিতরে বহুদিন ধরে জ্বলছিল সেটিই যেন হঠাৎ বিস্ফোরিত হল। বিস্ফোরণের জন্য
পেট্রোল যেন বিছানোই ছিল। সরকার তাতে বারুদ ঢেলে দিয়েছে। আর সে বারুদটি হল, কাশ্মির সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ একর সরকারি জমি অমরনাথ মন্দির
কমিটির হাতে হস্তান্তর। অমরনাথ মন্দিরের বিষয়টিও হঠাৎ করে সামনে আসেনি। এসেছে পরিকল্পিত
ভাবে। ১৯৮৯ সাল অবধি অমরনাথ মন্দিরে বছরে প্রায় ২০,০০০ তীর্থযাত্রী আসতো। কিন্তু ১৯৯০ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরএসএস এ মন্দিরকে ঘিরে এমন প্রোপাগান্ডা
শুরু করে যে হিন্দুদের মধ্যে এক নতুন ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি হয়। ফলে বাড়তে থাকে
অমরনাথ মন্দিরে তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা। ২০০৮ সালে এসে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ লাখে। মাস
খানেক আগে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে যখন মন্দিরের জন্য সরকারি জমি দেওয়ার ঘোষণা
হয় তখনই হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামে। কাশ্মিরী মুসলমানদের বক্তব্য, ইসরাইলীরা যেমন ধর্মীয় ইস্যুর ভিত্তিতে ফিলিস্তিনে ইহুদীদের
আবাদী বাড়িয়ে চলেছে, উগ্র হিন্দুরাও তেমনি কাশ্মিরের
কেন্দ্রভূমিতে হিন্দু আবাদী বাড়াতে চায়। এভাবে তারা কাশ্মিরের জনসংখ্যায় মুসলমানদের
অনুপাতটি কমাতে চায়। তাদের কথা, মন্দিরের নামে
১০০ একর জমিদানকে তারা সে প্রকল্পেরই অংশ।
আন্দোলন এতটা গণভিত্তি
পেয়েছে যে, ১৬ই আগষ্ট প্রায় তিন লাখ
মানুষের মিছিল রওনা দেয় ৫ দিন আগে নিহত হুরিÍয়াত নেতা আব্দুল আজিজের গ্রামের দিকে। জনাব আব্দুল আজিজ এক সময় অস্ত্র হাতে
স্বাধীনতা য্দ্ধু করতেন। পরে তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের পথ ছেড়ে গান্ধীবাদী অহিংস আন্দোলনের
পথ বেছে নেন। তবে তাঁর সে অহিংস নীতি ভারতীয় সরকারের সহিংসতা থেকে তাঁকে বাঁচাতে পারেনি।
অপর দিকে হিন্দুরাও বসে নাই। কাশ্মিরী মুসলমানদের শায়েস্তা করতে জম্মুর জঙ্গিবাদী
হিন্দুরা শ্রীনগরের একমাত্র রাস্তা যা দিল্লির সাথে সংযোগের মাধ্যম সেটি অবরোধ করে।
উল্লেখ্য,
জম্মুতে হিন্দুরা শতকরা ৬৬ ভাগ। তাদের কথা, অমরনাথ মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ বন্ধ করে কাশ্মিরের মুসলমানরা
হিন্দুদের সাথে অন্যায় করেছে। তারা খাদ্য ও জ্বালানীর সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। তাদের
লক্ষ্য,
কাশ্মিরী মুসলমানদের এভাবে শাস্তি দেওয়া। এতে
একদিকে কাশ্মিরে যেমন খাদ্যদ্রব্যে ও জ্বলানী সংকট দেখা দেয় অন্য দিকে কাশ্মির থেকে
যে বিপুল পরিমাণ ফলমূল ভারতের অন্যান্য প্রদেশে রপ্তানি করত তাতে পচন ধরে। কাশ্মিরী নেতারা তখন পাকিস্তানের রাস্তা খুলে দেওয়ার
দাবী তুলে। সে দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিল
যাচ্ছিল পাকিস্তান সীমান্তের দিকে। সাথে বহু পণ্যভর্তি ট্রাকও ছিল। নেতৃত্ব
দিচ্ছিলেন ভারতীয় কতৃপক্ষ সেটি মানতে পারিনি। তারা গুলিয়ে চালিয়ে দেয় নিরস্ত্র
মিছিলের উপর। সে গুলিতে শহীদ হয়ে যান বহু নিরপরাধ মানুষ এবং সে সাথে জনাব আব্দুর আজিজও।
ভারতের গোলামী থেকে মূক্তির
লক্ষ্যে স্বাধীনতা আন্দোলন আবার তীব্রতা পায় ১৯৮৯ সালে। এবং সেটি আফগানিস্তান থেকে
সোভিয়েত রাশিয়ার বিতাড়নের পর। তখন বহু আফগান ও পাকিস্তানী গেরিলাদের নজর কাশ্মিরের
জ্বিহাদের উপর পরে। গড়ে উঠে বহু জিহদী সংগঠন। এরা চায় কাশ্মিরের পাকিস্তান ভূক্তি।
সে সাথে জম্মু-কাশ্মির লেবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) নামে একটি সংগঠনও কাজ করছে । এ সংগঠনটি
শেখ আব্দুল্লাহর ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতই সেকুলার। এবং তাদের লক্ষ্য পাকিস্তানভূক্তি
নয়। চায়, জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে
একটি স্বাধীন দেশের প্রতিষ্ঠা। কিন্তু রাজপথে স্লোগান শুনে মনে হ্েচছ, রাজনীতির হাওয়া পাল্টে গেছে। সেকুলারদের হাত থেকে হয়তো
মুক্তি পেয়েছে কাশ্মিরের স্বাধীনতা আন্দোলন। বর্তমান যিনি নেতা তিনি হলেন, জনাব সাইয়েদ আলী শাহ গিলানী। তিনি ইসলামি এবং চান কাশ্মিরের
পাকিস্তানভূক্তি। তবে এ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটি বোঝা যাবে আগামী কিছুদিনেই।
এবং সেটি,
এ আন্দোলনের নেতা ও জনগণ কতদিন এ উত্তাল আন্দোলনকে
টিকিয়ে রাখতে পারবেন তা থেকে। কারণ আন্দোলন গড়ে তুলাই বড় কথা নয়, সফলতা আসে সেটি অব্যাহত রাখার মধ্যে দিয়ে।
সূত্রঃ ১) http://en.wikipedia.org/wiki/Jammu_and_Kashmir
২) http://drfirozmahboobkamal.com/
৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
নিরস্ত্র কাশ্মিরী মুসলমানদের উপর ভারতীয় পুলিশের নির্বিচার গুলি: শহীদ ৫
আল ইহসান ডেস্ক:
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে দেশটির পুলিশের গুলিতে পাঁচ কাশ্মিরি মুসলমান শহীদ হয়েছেন। গত ইয়াওমুস সাবতি (শনিবার) এর ওই নির্বিচার হত্যাকা- নিয়ে কাশ্মির উপত্যকা আবার অশান্ত হয়ে উঠেছে।
জম্মু-কাশ্মিরের প্রধান শহর শ্রীনগর থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত শোপিয়ান জেলায় গুলিবর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী দাবি করেছে, কথিত একটি সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত করতে তারা গুলি চালিয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় অধিবাসীদের পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীরা নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, পুলিশ বিনা উস্কানিতে নিরস্ত্র-নিরপরাধ মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে। পাশবিক এ গুলিবর্ষণের ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১২ কাশ্মিরি মুসলমান; যাদের প্রায় সবাইকে পেটে গুলি করা হয়েছে। হতাহতরা যখন একটি থানার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাদের ওপর কোন উস্কানি ছাড়াই গুলিবর্ষণ করা হয়।
এ হত্যাকা-ের পর শোপিয়ান জেলায় হাজার হাজার মানুষ ভারত বিরোধী বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার ও লাঠিচার্জ করে।
এদিকে কাশ্মিরের অন্যত্র গত ইয়াওমুস সাবতি (শনিবার) এক গ্রেনেড হামলায় পাঁচ পুলিশ ও দুই সিআরপিএফ জওয়ানসহ নয়জন আহত হয়েছে। শ্রীনগর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পুলুওয়ামা জেলায় এ হামলা হয়। স্থানীয় অধিবাসীরা জানায়, গ্রেনেড হামলায় শহরে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি হয়। বিস্ফোরণের পরপরই নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
[বিঃদ্রঃ তথ্য প্রদানে ও ভাষাগত কোন
ভুল থাকলে দয়া করে মেইল করে জানাবেন। নির্যাতনের ঘটনাসমূহ সংগ্রহে থাকলে দয়া করে রেফারেন্সসহ মেইল করবেন।]
[ট্যাগঃ পীর-মুরীদি (মুরিদি) ব্যবসাধারী ভন্ড-পীর সহ ধর্মব্যবসায়ীদের জম
রাজারবাগ দরবার শরীফ, রাজারবাগী পীর সাহেব কিবলা আলাইহিস সালাম]