নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক
উনার মাস রমাদ্বান শরীফকে সম্মান করলো মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত দিয়ে এবং
জাহান্নাম থেকে নাযাত দিয়ে সম্মানিত করবেন।’ সুবহানাল্লাহ!
বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের সমস্ত
মুসলিম ও অমুসলিম সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এর সম্মানার্থে
সকল মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ রাখা।
গত বছর রমাদ্বান শরীফ-এর সম্মানার্থে
মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তথা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার অত্যন্ত প্রশংসামূলক কাজ করেছে।
তাই সরকারের জন্য দায়িত্ব
ও কর্তব্য হবে- এ বছরও সে সিদ্ধান্ত বলবৎ রাখা। অর্থাৎ আসন্ন ১৪৩৩ হিজরির রমাদ্বান শরীফ-এর সম্মানার্থে
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রমাদ্বান শরীফ-এর শুরু থেকেই বন্ধ ঘোষণা করা।
যামানার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ,
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদুর রসূল, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ
শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তামাম মাখলুকাতের মধ্যে খালিক্ব-মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল
আলামীন তিনি যেরূপ মর্যাদাবান- অন্যান্য মাসের তুলনায় রমাদ্বান শরীফ তদ্রুপ মর্যাদাবান।
যেসব উসীলাকে কেন্দ্র করে মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দা-বান্দিদেরকে ক্ষমা করেন;
তাদের প্রতি রহমত, বরকত, সাকীনা নাযিল করেন
এবং তাদেরকে জাহান্নাম থেকে নাযাত দিয়ে জান্নাতে দাখিল করেন- রমাদ্বান শরীফ মাসের ইবাদত-বন্দিগী
সেসবের মধ্যে এক অন্যতম উসীলা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, রমাদ্বান মাসের প্রথম দশদিন রহমতের, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাতের ও শেষ দশদিন নাযাতের। রমাদ্বান শরীফ-এর
বুযূর্গী সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে, “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মাস রমাদ্বান শরীফকে সম্মান
করলো মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত দিয়ে এবং জাহান্নাম থেকে নাযাত দিয়ে সম্মানিত
করবেন।” সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কিতাবে উল্লেখ আছে যে, একজন বুযূর্গ ব্যক্তি একবার স্বপ্নে দেখেন- এক ইহুদী মহিলা জান্নাতে
বিচরণ করছে, খুব আরাম-আয়েশে আছে। বুযূর্গ
ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে মহিলা! তুমি তো
ইহুদী ছিলে, তুমি কি করে জান্নাতে গেলে?
ইসলাম আসার পর ইসলাম গ্রহণ না করে যে সকল বিধর্মী
মারা যাবে তারা তো জান্নাতে যেতে পারবে না বরং তারা চির জাহান্নামী হবে।’
জবাবে ইহুদী মহিলা বললো, ‘হে বুযূর্গ ব্যক্তি! মহান আল্লাহ পাক তিনি একটি আমলের উসীলায়
আমাকে ঈমান দান করেছেন ও ইন্তিকালের পর জান্নাত নছীব করেছেন।’
বুযূর্গ ব্যক্তি বললেন, ‘কোন আমলের উসীলায় তুমি নাজাত পেলে?’ ইহুদী মহিলা বললো, ‘আমার ইন্তিকালের পূর্বে যে রমাদ্বান শরীফ ছিলো সেই রমাদ্বান শরীফ-এর দিনের বেলায়
আমি আমার ছোট সন্তানকে নিয়ে কিছু খাদ্য খরীদ করার জন্য বাজারে যাই। তখন আমার ছোট সন্তানকে
কিছু রুটি বিস্কুট কিনে দেই। সে সন্তান রুটি বিস্কুট পেয়ে সাথে সাথে খেতে শুরু করে।
যেহেতু সে অবুঝ শিশু। তখন আমি তাকে একটি আঘাত করে বলি, হে বালক! এটা মুসলমানদের পবিত্র মাস। এ মাসে প্রকাশ্যে কিছু
খেতে হয় না। এ মাসকে সম্মান করা উচিত।’ এ কথা বলে আমি তার হাত থেকে
রুটিটি নিয়ে নেই। ইহুদী মহিলা বললো, পবিত্র রমাদ্বান শরীফকে তা’যীম করার উসীলায় মহান আল্লাহ
পাক তিনি আমাকে ঈমান দান করেন এবং ঈমানের সাথে ইন্তিকাল দান করে জান্নাত নসীব করেন।’
সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এখন ফিকিরের বিষয় যে, একজন অমুসলিম রমাদ্বান শরীফকে তা’যীম করার কারণে যদি তার ঈমান ও জান্নাত নছীব হয়, তবে যদি কোন মুসলমান পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-কে তা’যীম বা সম্মান করে সকল স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ
সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে তবে সে কতটুকু ফযীলত লাভ করবে তা সত্যিই চিন্তা-ফিকিরের
বিষয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, অথচ আজকাল মুসলমানেরাই পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এর গুরুত্ব,
সম্মান ও পবিত্রতা বুঝে না ও মানে না। তারা রমাদ্বান
শরীফ-এ প্রকাশ্যে খানাপিনা করে, বেপর্দা চলে,
গান-বাজনা, সিনেমা-নাটক, নোবেল, খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
এখন দেখা যায়, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এও স্কুল,
কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি খোলা
রাখা হয়। এবং নানা পরীক্ষা, কোচিং ইত্যাদির নামে
ছাত্র-ছাত্রীদের এমন ব্যস্ত রাখা হয় যার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা অধিকাংশই রোযা রাখে না।
অথচ তারা মুসলমান। রোযা তাদের দ্বীনের প্রধান ভিত্তি ও ফরয আমল।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইহুদী-নাছারারা জানে কী করে মুসলমানদের শক্তিহীন ও দুর্বল করতে
হয়। তারা জানে মুসলমানরা যখন মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত যুক্ত থাকে তখন তাদের পরাস্ত
করা দুনিয়ার কোন শক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ইহুদী নাছারারা এমন ষড়যন্ত্র করছে যাতে
করে মুসলমানদের রহমতশূন্য করা যায়। নাঊযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইহুদী, মুশরিক, নাছারারা ছবি ও বেপর্দার পাশাপাশি রমাদ্বান শরীফ-এও মুসলমানদের
নানা ছূতা-নাতায় ব্যস্ত রেখে তাদেরকে রহমতশূন্য করে রাখে। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আরো বেশি পরীক্ষা,
কোচিং, পড়া-লেখার চাপ ইত্যাদি দেয়া হয়। অনেক সময় ঈদের পর পরই বিশেষ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
করা হয়। তাতে করে সে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে গিয়েও রোযা রাখে না। অর্থাৎ মুসলমান
শিক্ষার্থীদেরকে রোযা থেকে বিরত রাখাই তাদের উদ্দেশ্য। নাঊযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার গতবছর রমাদ্বান শরীফ উপলক্ষে মাদরাসা,
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তথা সকল শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে অত্যন্ত প্রশংসামূলক ও ইসলাম সম্মত কাজ করেছে। তাই সরকারের
জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে এ বছরও রমাদ্বান মাসের পূর্ব থেকেই ছুটি ঘোষণা করা এবং এ
সিদ্ধান্ত দায়িমীভাবে বলবৎ রাখা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর
মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এর সম্মানার্থে ও পবিত্রতা
রক্ষার্থে মুসলিম-অমুসলিম সব দেশের সরকারের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে,
গান-বাজনা, বেপর্দা, ছবি, টিভি চ্যানেল, সিনেমা, নাটক, নোবেল, খেলাধুলা ইত্যাদিসহ
সর্বপ্রকার হারাম থেকে মুসলমানদেরকে বিরত রাখা। এর পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা। যাতে করে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এর
সাহরী, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত,
যিকির-ফিকির, তাছবীহ-তাহলীল, ইফতারী, তারাবীহ নামায ইত্যাদি যথাযথভাবে
ইতমিনানের সাথে পালন করে রমাদ্বান শরীফ-এর ফযীলত তথা রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত পরিপূর্ণ হাছিল করতে পারে।