খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তির
প্রতি হজ্জ ফরয সে যেনো হজ্জ পালনের ক্ষেত্রে অশ্লীল ও অশালীন এবং তার সংশ্লিষ্ট
বেপর্দা, বেহায়ামূলক কোনো কাজ না করে এবং কোনো প্রকার ফাসিকী বা নাফরমানিমূলক
কাজ না করে।’
হজ্জ করা শর্ত সাপেক্ষে ফরয। আর ছবি তোলা এবং বেপর্দা হওয়া শরীয়তের
দৃষ্টিতে হারাম।
ছবি ও পর্দার আদেশ লঙ্ঘন করে হজ্জ করলে কস্মিনকালেও তা হজ্জে মাবরূর
হবে না।
আর শুধু মাত্র হজ্জে মাবরুরের বদলাই হচ্ছে জান্নাত।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও
মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম,
মুজাদ্দিদে
আ’যম,
আওলাদে
রসূল, সাইয়্যিদুনা
ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
হজ্জের
আদেশ দান প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “খালিক্ব মালিক
রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যেই তোমরা হজ্জ ও উমরাহ আদায় করো বা পূর্ণ করো।”
(সূরা
বাক্বারা-১৯৬)
অর্থাৎ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাকে কেবলমাত্র
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো
উদ্দেশ্য যেমন- ‘আনন্দ ভ্রমণ, ভিক্ষাবৃত্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য,
সুনাম-সুখ্যাতি,
রিয়া
বা লৌকিকতা’- এক কথায় গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমরাহ করতে নিষেধ করেছেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, খালিক্ব মালিক
রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার
জন্যেই মানুষের প্রতি হজ্জ করা ফরয- যার পথের সামর্থ্য ও নিরাপত্তা রয়েছে।”
(সূরা
আলে ইমরান : আয়াত শরীফ-৯৭) অর্থাৎ যার পথের সামর্থ্য ও নিরাপত্তা নেই তার প্রতি
হজ্জ ফরয নয়। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আবু উমামা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, খালিক্ব মালিক
রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, কোন ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হওয়ার ক্ষেত্রে
নিষেধকারী বিষয় হচ্ছে, প্রকাশ্য বাধা অথবা অত্যাচারী শাসক অথবা গুরুতর
অসুখ।” (মাছাবীহুস সুন্নাহ, দারিমী, মিশকাত, মিরকাত) অর্থাৎ
কোন ব্যক্তির হজ্জে যেতে বাহ্যিক বাঁধা থাকলে অথবা অত্যাচারী শাসকের কারণে মাল,
জান,
ঈমান
ও আমলের নিরাপত্তা না থাকলে অথবা কঠিন অসুস্থতা থাকলে তার উপর হজ্জ ফরয হবে না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ
ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আয়াত শরীফ-এ উল্লিখিত পথের নিরাপত্তা বলতে মাল,
জান
এবং ঈমানের নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। কারণ, মাল-জানের চেয়ে
ঈমানের গুরুত্ব অনেক বেশি। কাজেই ঈমান ও আমল নষ্ট হওয়ার অর্থাৎ কোনো কুফরী ও হারাম
কাজ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এটা জানা সত্ত্বেও কেউ যদি হজ্জে রওয়ানা করে এবং
তাদের দ্বারা কুফরী ও হারাম কাজ সংঘটিত হয় তাহলে এজন্য তাদের কুফরী ও কবীরা গুনাহ
হবে। অনুরূপ মহিলাদের সাথে স্বামী কিংবা কোন সচ্চরিত্রবান মাহরাম পুরুষ সঙ্গে না
নিয়ে তারা যদি হজ্জে রওয়ানা করে এবং পথে কোনো অশালীন কাজ সংঘটিত হয়। এজন্য তারাই
কঠিন গুনাহে গুনাহগার হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হজ্জ ফরয হওয়ার
জন্য সকল কবীরা ও কুফরী গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা শর্ত করা হয়েছে। এ মর্মে খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তির
প্রতি হজ্জ ফরয সে যেনো হজ্জ পালনের ক্ষেত্রে অশ্লীল ও অশালীন এবং তার সংশ্লিষ্ট
বেপর্দা, বেহায়ামূলক কোনো কাজ না করে এবং কোনো প্রকার ফাসিকী বা নাফরমানিমূলক
কাজ না করে এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। আর তোমরা যে নেক কাজ করো তা খালিক্ব মালিক রব
মহান আল্লাহ পাক তিনি জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ করো। নিশ্চয়ই উত্তম পাথেয় হচ্ছে
তাক্বওয়া।” (সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ ১৯৬)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ছবি তোলা এবং
পর্দা লঙ্ঘন করা অর্থাৎ বেপর্দা হওয়া খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও
উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাদের প্রকাশ্য নাফরমানি। কেননা ছবি হারাম ঘোষণা করেন স্বয়ং খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনারা। আর পর্দা ফরয করেছেন স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক
রব্বুল আলামীন তিনি। যেমন পর্দা সম্পর্কে মহান খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ করেন, “হে মহিলারা তোমরা নিজ ঘরে পর্দার সাথে অবস্থান করো, বেপর্দা হয়ে
রাস্তায় ঘুরে বেড়িও না।” আর ছবি সম্পর্কে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “প্রত্যেক ছবি তুলনেওয়ালা ও তোলানেওয়ালা
জাহান্নামী।” (মুসলিম শরীফ)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হজ্জ করা যেমন
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ তদ্রুপ বেপর্দা হওয়া এবং
ছবি তোলা থেকে বিরত থাকাও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল,
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, শরীয়তের ফায়ছালা
হলো- একটা আদেশ অমান্য করে আরেকটা মান্য করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এ মর্মে
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা কিতাবের কিছু
হুকুম মানবে আর কিছু হুকুম মানবে না অর্থাৎ অস্বীকার করবে। (তা তো হতে পারে না)।
যে ব্যক্তি এরূপ করবে তার পরিণাম হচ্ছে, সে পার্থিব
জীবনে লাঞ্ছিত হবে এবং পরকালে কঠিন আযাবে নিপতিত হবে। আর খালিক্ব মালিক রব মহান
আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের আমল সম্পর্কে জানেন।” (সূরা বাক্বারা :
আয়াত শরীফ ৮৫)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ছবি ও পর্দার
আদেশ লঙ্ঘন করে যারা হজ্জ করবে তাদের সে হজ্জ কস্মিনকালেও হজ্জে মাবরূর হবে না।
এটাই কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর ফতওয়া।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এখন কেউ বলতে
পারে, ‘ছবি
ও বেপর্দার কারণে তাহলে কি হজ্জ করা বন্ধ থাকবে?’ এর জাওয়াব হলো,
‘হ্যাঁ,
হজ্জ
ফরয হলে তো অবশ্যই আদায় করতে হবে। সেজন্য যে দেশে হজ্জের জন্য ছবি বাধ্যতামূলক করা
হয়েছে সে দেশের সরকারকে বলতে হবে, সরকার যেনো ছবি ব্যতীত হজ্জে যাওয়ার ব্যবস্থা
করে এবং বিশেষ করে সউদী সরকারকে বলতে হবে, তারা যেনো ছবি
ব্যতীত এবং মহিলাদের পর্দার সাথে হজ্জ সম্পাদন করার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করে দেয়। আর
মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ-এ স্থাপিত সিসি ক্যামেরা সরিয়ে ফেলে। কারণ, এসব হজ্জে
মাবরূর হওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়। আর হজ্জে মাবরূর না হলে প্রকৃতপক্ষে হজ্জই আদায়
হবে না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যদি দেশের সরকার
এবং সউদী সরকার ছবির ব্যবস্থা তুলে না নেয় এবং পর্দার সাথে হজ্জ সম্পাদন করার
সুষ্ঠু ব্যবস্থা না করে তাহলে তারা হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত সুলতানে জায়ের বা
অত্যাচারী শাসক হিসেবে গণ্য হবে। আর তাদের আমলটা হবে হাদীছ শরীফ অনুযায়ী হাজতে
জাহেরা বা হজ্জের নিষেধকারী প্রকাশ্য বাধা যা বিদ্যমান থাকলে ফরয হজ্জ ফরয থাকে না
অর্থাৎ হজ্জ সাকিত বা রহিত হয়ে যায়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- কেউ
যদি সত্যিই মহান খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্যেই হজ্জ
করতে চায় তাহলে তাকে শরীয়তের শর্ত মুতাবিক হজ্জ করতে হবে। আর যদি কেউ গাইরুল্লাহর
উদ্দেশ্যে বা আলহাজ্জ ও হাজী খিতাব লাভের উদ্দেশ্যে হজ্জ করতে চায় তবে তার মাসয়ালা
আলাদা। কাজেই, এখনই মুসলমানদেরকে সজাগ ও সোচ্চার হওয়া উচিত। খালিক্ব মালিক রব মহান
আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেককে শরীয়তের ফতওয়া মুতাবিক আমল করার তাওফীক দান করুন।
(আমীন)