(১৭ নভেম্বর, ২০১২)
ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা উপত্যকায়
বড় ধরনের স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সারারাত
ও গতকাল শুক্রবার সকালে গাজা উপত্যকার অন্তত ১৫০টি অবস্থানে বিমান হামলা চালানোর পর
স্থল অভিযানের প্রস্তুতির খবর দিয়েছে ইসরাইলি রেডিও। প্রায় ৩০ হাজার রির্জাভ সেনা মোতায়েনের
নির্দেশ দিয়েছে তেল আবিব।
গত সারারাত ইসরাইলি জঙ্গীবিমানের
মুহূর্মুহূ হামলায় গাজা শহরসহ উপত্যকার অন্যান্য শহর কেঁপে উঠতে থাকে। এসব হামলায় আরো
অন্তত ৩ ফিলিস্তিনি শহীদ ও বহু লোক আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গাজায় গত ৪৮ ঘন্টায় ২০ ফিলিস্তিনি
শহীদ হলেন। এদের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী ও ১০ মাসের একটি শিশু রয়েছে।
ইরানের তীব্র প্রতিবাদ এবং
মিশরের হামলা বন্ধের আহবান উপেক্ষা করে এসব হামলা চালায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী।
ইসরাইলি সামরিক সূত্রের বরাত
দিয়ে ইহুদিবাদী রেডিও জানিয়েছে, গাজা সীমান্তে সেনা
সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে তেল আবিব। গাজার বেসামরিক অবস্থানগুলোতে যে পাশবিক
বিমান হামলা চলছে তাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে এসব সেনাকে স্থল অভিযানে পাঠানো হতে পারে।
সূত্রটি জানিয়েছে, এবারের হামলা হবে ২০০৮ সালের
২২ দিনের যুদ্ধের চেয়ে ভয়াবহ ও ব্যাপক এলাকা জুড়ে।
এর আগে ইহুদীবাদী ইসরাইলি
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকায় ‘বিস্তৃত সামরিক অভিযান’-এর বিষয়টি অনুমোদন করেছে।
২০০৮ সালে ২২দিনব্যাপী গাজা
আগ্রাসনে প্রায় ১৫০০ ফিলিস্তিনি শহীদ ও অপর অন্তত পাঁচ হাজার আহত হয়েছিলেন। হতাহতদের
বেশিরভাগ ছিলেন নারী ও শিশু।
--------------------------------------------------------------
(২১ নভেম্বর ২০১২)
ফিলিস্তিনী গ্রুপ হামাস নিয়ন্ত্রিত
গাজায় ইসরাইলী বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ১শ’ ছাড়িয়েছে। লড়াই বন্ধের জন্য মিসরের উদ্যোগে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। মঙ্গলবার এই সামরিক হামলা উপর্যুপরি
সপ্তম দিনে গড়ায়। এদিকে গাজায় স্থল হামলার ব্যাপারে ইসরাইলকে সতর্ক করে দিয়েছে ব্রিটেন
ও যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসি ও নিউইয়র্ক টাইসমস অনলাইনের।
টানা ছয় দিনের হামলায় গাজায়
নিহতের সংখ্যা এক শ’ ছাড়িয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে
যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আরও বেড়েছে। সোমবার হামাস জানিয়েছে, ষষ্ঠ দিনের হামলায় তাদের এক কমান্ডারসহ একই পরিবারের আরও চারজন
নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে।
এদের নিয়ে ৬ দিনে মোট ১০৮ জন ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস। সোমবার গাজা
থেকে ইসরাইলের উদ্দেশে এক শ’রও বেশি রকেট নিক্ষেপ
করা হয়েছে, তবে এতে হতাহতের কোন খবর পাওয়া
যায়নি। এর আগে গাজা থেকে নিক্ষিপ্ত রকেটের আঘাতে তিন ইসরাইলী নিহত হয়। গাজায় স্থল হামলার
ব্যাপারে ব্রিটেন ইসরাইলকে সতর্ক করার পর এ ব্যাপারে গলা মিলিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
কায়রোতে মিসর, ইসরাইল ও হামাস কর্মকর্তারা যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে আলোচনা চালিয়ে
যাচ্ছেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবারের মধ্যে একটি ঘোষণা আসতে পারে বলে মিসরীয় কর্মকর্তারা আশা
প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন কায়রো আসেন।
মঙ্গলবার মুরসির সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং
ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও মুনের আলোচনার কথা রয়েছে।
মুন যুক্ত হওয়ায় যুদ্ধবিরতি উদ্যোগে গতি সঞ্চারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট
মোহাম্মদ মুরসির অস্ত্র বিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইসরাইলী মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে। ইসরাইল
দাবি করেছে, গাজা থেকে রকেট ছোড়া বন্ধ
ও হামাসের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। অন্যদিকে হামাসের দাবি হলো,
ইসরাইলের ‘বেছে বেছে হত্যা’ বন্ধ এবং গাজার ওপর থেকে ইসরাইলের অবরোধ তুলে নিতে হবে।
(২২-১১-২০১২ ঈসায়ী)
গতকাল ইয়াওমুল আরবিয়ায়ি (বুধবার)
অষ্টম দিনের মতো গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ভোরেও গাজার বিভিন্ন স্থানে
ইসরাইলি যুদ্ধ বিমান থেকে হামলা করা হয়েছে। এর আগেররাতে হামলার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়
দখলদারেরা। এর ফলে গত ২৪ ঘন্টারও কম সময়ে অন্তত ২৬ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন।
গাজার হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে,
দখলদারদের হামলায় এক সপ্তাহে কমপক্ষে ১৩৮ জন ফিলিস্তিনি
শহীদ হয়েছেন। এদের অধিকাংশই বেসামরিক মানুষ। এ সময়ে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পাল্টা রকেট
হামলায় মারা গেছে ৫ ইসরাইলি। গত আট দিনে ইসরাইলি বাহিনী গাজার ১ হাজার ৩৫০টি স্থানে
হামলা চালিয়েছে। জবাবে হামাস ইসরাইলে রকেট ছুড়েছে ৬৪০টি।
গতরাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর
হওয়ার কথা থাকলেও ইসরাইল হামলা থামায়নি। গাজায় ক্ষমতাসীন ইসলামী প্রতিরোধ সংগঠন হামাস
বলেছে, ইসরাইলের কারণে যুদ্ধবিরতি
কার্যকর হচ্ছে না। শান্তিকামী বলে দাবিদার আমেরিকা গাজার নিরপরাধ মানুষ হত্যায় সরাসরি
সমর্থন দিচ্ছে।