পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, “দেশের মুহব্বত পবিত্র ঈমান উনার অঙ্গ।”
অতএব, দেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত ঈমানদারগণ গ্রহণ করতে
পারেন না।
তাহলে নৌমন্ত্রণালয়ের
আপত্তি সত্ত্বেও ভারতকে ট্রান্সশিপমেন্ট দিতে ‘পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের খিলাফ কোনো
আইন পাশ হবে না’- এই ওয়াদায় আবদ্ধ সরকার
এতো আগ্রহী কেন?
অথচ বাংলাদেশ ভারতকে
বেরুবাড়ী ইউনিয়ন ছেড়ে দেয়ার পরও ভারত আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম তিন বিঘা করিডোর তো ছেড়ে
দিচ্ছেই না। এমনকি স্বাধীনভাবে ব্যবহার করতেও দিচ্ছে না। তাহলে ভারতকে কিভাবে
ট্রানজিট দেয়া যেতে পারে?
এছাড়া ভারত বাংলাদেশের
২১টি নদী ও খালে বাঁধ নির্মাণ করে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর সুস্পষ্ট
আঘাত করেছে।
অতএব, গোটা দেশবাসীকে সম্পূর্ণ অবহিত না করে ট্রানজিট চুক্তি করলে
কথিত ট্রানজিট চুক্তি হবে দেশবাসীর সাথে সম্পূর্ণ বিশ্বাসঘাতকতা, যা সংবিধান বিরোধী এবং দেশ বিক্রিরও শামিল।
যামানার লক্ষ্যস্থল
ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল
আওলাদে রসূল, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ,
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুশ শরীয়ত
ওয়াত তরীক্বত, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই
বাংলাদেশে ‘ট্রানজিট' সুবিধা চাচ্ছে ভারত। ভারত নিজস্ব সুবিধার জন্য বাংলাদেশের
ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের এক সীমান্ত থেকে অন্য সীমান্তে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের
সমুদ্র বন্দর, স্থলপথ দিয়ে যাতায়াত এবং
পণ্য পরিবহনের জন্য ভারতকে ‘ট্রানজিট’
তথা করিডোর সুবিধা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।
এ সিদ্ধান্ত কতটুকু সংবিধান সম্মত এবং এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সার্বভৌমত্ব কতটুকু
নিরাপদ থাকবে, তা চিন্তা করতে হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, করিডোর সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ করিডোরভুক্ত ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে এক
ধরনের অধিকার পেয়ে যায় বলেই বিশ্বের বহু দেশ তার ভূখ- দিয়ে অন্যকে করিডোর দিতে
রাজি হয় না। বাংলাদেশ ভারতকে তার একটি বেরুবাড়ী ইউনিয়ন দিয়ে দেয়ার পরও
আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম তিনবিঘা করিডোর বাংলাদেশকে ছেড়ে দিচ্ছে না। তাহলে ভারত কিভাবে
বাংলাদেশকে করিডোর হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি চাইতে পারে আর বাংলাদেশ সরকারও কিভাবে
সে অনুমতি দিতে পারে?
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ট্রানজিট চুক্তির ফলে প্রথমত, ভারতীয় যেসব মালামাল বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাবে, সেগুলো বাক্সভর্তি করে ভারত সিলগালা করে দেবে এবং সেগুলোতে
আসলে কী যাচ্ছে বাংলাদেশ তা খুলে দেখতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় যানবাহন চলাচলের সময় রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত
বাংলাদেশী কোনো যানবাহন ওই সড়ক (আশুগঞ্জ থেকে আগরতলা সড়ক) ব্যবহার করতে পারবে না।
এসব শর্ত প্রমাণ করছে, আপাতত অন্তত ছয়
ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশ ওই সড়কের ওপর তার সার্বভৌমত্ব ভারতের কাছে বিক্রি করে
দিচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! কোনো আত্মমর্যাদাসম্পন্ন দেশ এ ধরনের চুক্তি মেনে নিতে পারে
না। তাছাড়া ওই দীর্ঘ পথে কখন কোথায় গাড়ি থামিয়ে রাতের আঁধারে কী নামিয়ে দেয়া হবে,
তা যাতে কেউ দেখতে না পারে, সে কারণেই এমন শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বিশ্বের কোথাও এ ধরনের ট্রানজিট ব্যবস্থা চালু নেই। দেশের
সার্বভৌমত্বের জন্যও তা সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এদিকে ভারতের উত্তরাঞ্চলে জনগণের মাথাপিছু আয় মাত্র ৩০০
ডলারের মতো। ফলে সেখান থেকে বহিঃবাণিজ্যের পরিমাণ যে নগণ্য হবে অথবা বাংলাদেশে
উত্পাদিত কোনো পণ্য অতি সামান্য পরিমাণে যে সেখানে রফতানি হবে তা সহজবোধ্য। অথচ
ট্রানজিট বা করিডোর দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে
হবে অবকাঠামো খাতে। ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশ যে বিনিয়োগ করবে, তা শুল্ক আদায়ের মাধ্যমে উঠে আসবে না, এটা একেবারে স্পষ্ট।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এদিকে আশুগঞ্জ বন্দর ও আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়কের অবকাঠামোগত
প্রস্তুতি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর কোন ট্রায়াল রান চালানো যাবে না এ সিদ্ধান্ত
বাতিল করা হয়েছে। অথচ নৌপরিবহন সচিবের সভাপতিত্বে অক্টোবরে অনুষ্ঠিত
ট্রানজিট/ট্রান্সশিপমেন্ট সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়
সর্বসম্মতভাবে ‘ভারতীয় পণ্যবাহী যান
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আর পরীক্ষামূলকভাবে চালান যাবে না’ এ সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর
রিজভী এবং ড. মশিউর রহমান এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বিখ্যাত নদী তিতাসসহ ১৮টি খালে বাঁধ তৈরি করে
পানির স্বাভাবিক গতি রোধ করা কেন সংবিধান ও আইন পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না এই
মর্মে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। আসছে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে হবে।
কিন্তু তারপরে প্রায় দু’বছর পার হলেও সেই
রুলের কোনো জবাব দেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য
ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রী এক কেবিনেট মিটিংয়ে বলেছিলো, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়া পর্যন্ত দুই
দেশের মধ্যে কোনো ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর হবে না। তাছাড়া ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১
তারিখে কৃষিমন্ত্রী নকলা উপজেলার নালিতাবাড়ীর এক সভায় বলেছিলো, ঘড় No transit to India, Till agreement on Teesta| অথচ বাস্তবে প্রকাশ্য আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছাড়াই ১৮ অক্টোবর
২০১১ থেকে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বলাবাহুল্য এই আত্মঘাতী পদক্ষেপে
গোটা দেশের মানুষ হতভম্ব ও ক্ষুব্ধ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে এই ট্রানজিট চুক্তি হয়েছে অতি
সঙ্গোপনে। কিন্তু আন্তর্জাতিক চুক্তি তো গোপনে হওয়ার কথা নয়। কোনো দেশের সঙ্গে
বাংলাদেশের চুক্তি হলে সংবিধান মেনেই তা হতে হবে। অন্য কথায়, জাতীয় সংসদে তা ব্যাপক আলোচনার কথা এবং সংসদে সমর্থিত হলেই
বাস্তবে রূপ পাওয়া কথা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে-
‘প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার
মালিক জনগণ।’
আর বাংলাদেশ সংবিধানের
১৪৩ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে-
(১) আইনসঙ্গতভাবে
প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত যে কোন ভূমি বা সম্পত্তি ব্যতীত নি¤œলিখিত সম্পত্তিসমূহ প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত হইবে।
(ক) বাংলাদেশের যে কোন
ভূমির অন্তঃস্থ সকল খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী;
(খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়
জলসীমার অন্তর্বর্তী মহাসাগরের অন্তঃস্থ কিংবা বাংলাদেশের মহীসোপানের উপরিস্থ
মহাসাগরের অন্তঃস্থ সকল ভূমি, খনিজ ও অন্যান্য
মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী; এবং
(গ) বাংলাদেশে অবস্থিত
প্রকৃত মালিকাবিহীন যে কোন সম্পত্তি।
উপরোক্ত অনুচ্ছেদে যেমন
বাংলাদেশের উপর বাংলাদেশী প্রজাসাধারণের মালিকানা প্রতিভাত হয়েছে তেমনি এ মালিকানা
সাপেক্ষে বিদেশের সাথে চুক্তির ক্ষেত্রেও জনগণের অবগতির কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ
রয়েছে।
বাংলাদেশ সংবিধানের ১৪৫
নং ‘ক’ অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে-
‘বিদেশের সহিত সম্পাদিত
সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে, এবং রাষ্ট্রপতি সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ট্রানজিট চুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয় ছাড়াও
সার্বভৌমত্বের বিষয়টি জড়িত। কাজেই এ চুক্তি সম্পাদনের আগে জনগণের মতামত গ্রহণ করা
এবং লাভ-ক্ষতির বিষয়গুলো গভীরভাবে অনুধাবন করা আবশ্যক।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এদেশের ৯৭ জন জনগোষ্ঠী মুসলমান। তারা পবিত্র কুরআন শরীফ ও
পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের উপর বিশ্বাসী। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে, “স্বদেশ প্রেম পবিত্র ঈমান
উনার অঙ্গ।”
কাজেই এদেশের ৯৭ ভাগ
মুসলমানের মধ্যেই এ স্বদেশ প্রেমের চেতনা জাজ্বল্যমানভাবে বিরাজমান। এ চেতনা থেকেই
উনারা মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী ট্রানজিট অথবা ট্রান্সশিপমেন্ট অথবা করিডোর চুক্তি
বিন্দুমাত্র পবিত্র ঈমান থাকতে এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমান মেনে নিবে না। প্রয়োজনে তারা
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মতো আবারো বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন
রাখবে তথা ভারতকে ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট
বা করিডোর প্রদান রুখবে ইনশাআল্লাহ।