নোটিশ

বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১০

মীলাদ শরীফ-কিয়াম শরীফ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যামানাতেই ছিল

মীলাদ শব্দের অর্থ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত করা ও তাঁর প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা। অতএব, তা আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ সবারই সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। আমরা যেভাবে মজলিস করে মীলাদ মাহফিল করে থাকি তা খোদ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের যামানাতেই ছিল।

এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা তাঁর নিজ গৃহে সমবেত ছাহাবীগণকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশী প্রকাশ করেছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর প্রশংসা তথা তাছবীহ তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর (ছলাত-সালাম) দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপসি'ত হলেন। (তিনি যখন উপসি'ত হলেন, সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে অর্থাৎ ক্বিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন) তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব।
(সুবুলুল হুদা ফি মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী, পৃষ্ঠা ৩৫৫)

আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে হযরত আবূ আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর গৃহে উপসি'ত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি তাঁর সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতী-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলছেন, এই দিবস অর্থাৎ এই দিবসে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীনে তাশরীফ এনেছেন। (তিনি যখন উপসি'ত হলেন সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে কিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন।)

তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাঁর রহমতের দরজা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফিরিস্তাগণ তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ কিয়ামত পর্যন্ত তোমাদের মত এরূপ করবেন। তোমার মত সেও নাজাত ও ফযীলত লাভ করবে।”
(কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযির, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

উপরোক্ত হাদীছ শরীফদ্বয়ের দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ স্বয়ং মীলাদ শরীফ পাঠ করতেন এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তা’যীম বা সম্মানার্থে কিয়াম করতেন। বর্তমানে যে সুনির্দিষ্ট তর্জ-তরীকায় মীলাদ মাহফিল হয় তাতে নূরে মুজাস্‌‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত সংক্ষিপ্তভাবে করা হয়ে থাকে যা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।