নোটিশ

শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

মুনাজাত শরীফ-এর অর্থ এবং শরীয়তে দোয়া বা মুনাজাতের গুরুত্ব

দোয়া বা মুনাজাত শরীফ-এর লোগাতি বা আভিধানিক অর্থ:

মুনাজাত (مناجات) শব্দটি নাজা (ناجى) ইউনাজী (يوناجى) মুনাজাত (مناجاة) মুফায়ালাতুন (مفاعلة) হতে উদ্ভূত।

মুনাজাত শব্দটির লোগাতি বা আভিধানিক অর্থ হলো- চুপে চুপে কথা বলা। আর ইস্তিলাহি বা প্রচলিত অর্থ হলো- আল্লাহ পাক-এর নিকট আযীযী-ইনকেসারী বা অনুনয়-বিনয়ের সাথে কিছু প্রার্থনা করা। এখানে উল্লেখ্য যে, মুনাজাতকে দোয়াও বলা হয়।




শরীয়তে দোয়া বা মুনাজাতের গুরুত্ব:

শরীয়তে দোয়া বা মুনাজাতের গুরুত্ব অনেক। তাই মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফ-এর অনেক স্থানে এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ্য হাদীছ শরীফ-এ বান্দা ও উম্মতদেরকে দোয়া বা মুনাজাত করার ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন বা নির্দেশ প্রদান করেছেন।
যেমন এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ.

অর্থ: “তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে (দোয়ায়) সাড়া দিব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদতে অহঙ্কার করে, তারা অতি সত্ত্বর লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে দাখিল (প্রবেশ) হবে।” (সূরা মু’মিন : আয়াত ৬০)
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ.

অর্থ: “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে জিজ্ঞাসা করে আমার ব্যাপারে, বস্তুত আমি রয়েছি সন্নিকটে যারা দোয়া করে, তাদের দোয়া কবুল করে নেই, যখনই আমার কাছে দোয়া করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস করা তাদের একান্ত দায়িত্ব-কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।” (সূরা বাক্বারা : আয়াত ১৮৬)
ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لا يُحِبُّ الْمُعْتَدِين.

অর্থ: “তোমরা তোমাদের রবকে কাকুতি-মিনতি সহকারে এবং সংগোপনে ডাক তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।” (সূরা আ’রাফ : আয়াত ৫৫)
আর মুনাজাত সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
عن النعمان بن بشير رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال الدعاء هو العبادة ثم قرأ وقال ربكم ادعونى استجب لكم ان الذين يستكبرون عن عبادتى سيدخلون جهنم داخرين.

অর্থ: হযরত নু’মান ইবনে বশীর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “দোয়া হলো ইবাদত সাদৃশ্য।” অতঃপর তিনি এই আয়াত শরীফ পড়লেন, “তোমাদের রব বলেছেন, আমার নিকট দোয়া কর, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদতে অহঙ্কার করে, তারা অতিসত্ত্বর লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে দাখিল হবে।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিলদ পৃষ্ঠা ১৭৩, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ শাযী, মায়ারিফুস সুনান, মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, আবু দাউদ শরীফ, বযলুল মাযহুদ, আউনুল মা’বুদ, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, নাসায়ী শরীফ, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী, হাশিয়াতুস সুয়ূতী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ১৯৪, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, আত তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ)