এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, মুহাজির ও আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ, যাঁরা পূর্ববর্তীদের মধ্যে অগ্রগণ্য, তাঁরা এবং তাঁদেরকে যাঁরা ( কিয়ামত পর্যন্ত) উত্তমভাবে অনুসরণ করবে, তাঁদের উপর আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট, তাঁরাও আল্লাহ পাক-উনার উপর সন্তুষ্ট। তাঁদের জন্য আল্লাহ পাক এরূপ বেহেশ্ত নির্ধারিত রেখেছেন, যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণা প্রবাহিত হবে, তাঁরা সর্বদা সে বেহেশ্তে অবস্থান করবেন, এটা তাঁদের মহান সফলতা । (সূরা তওবা-১০০)
আর হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সকলেই তারকা সদৃশ, তাঁদের যে কোন একজনকে অনুসরণ করলেই হিদায়েত প্রাপ্ত হবে ।” (রযীন, মিশকাত, মিরকাত, আশয়াতুল লুমুয়াত, তা‘লীক্ব, তীবী, মুযাহিরে হক্ব)
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন : “তোমাদের জন্য আমার সুন্নত ও আমার খুলাফায়ে রাশিদীন (হিদায়েত প্রাপ্ত ছাহাবায়ে কিরাম) রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের সুন্নত পালন করা অপরিহার্য । তোমরা তা মাড়ির দাঁত দিয়ে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনে মাযাহ, মিশকাত, মিরকাত)
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত । যে ব্যক্তি শরীয়তের সঠিক তরীক্বা অনুসরণ করতে চায়, তার উচিত যারা অতীত হয়েছেন, তাঁদেরকে অর্থাৎ আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার প্রিয় ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের অনুসরণ করা । হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম, আত্মার দিক দিয়ে অধিক পবিত্র, ইল্মের দিক দিয়ে গভীর এবং তাঁরা লোক দেখানো আমল করা হতে মুক্ত। আল্লাহ পাক তাঁদেরকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্যে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথী হিসাবে কবুল (মনোনীত) করেছেন । সুতরাং তাঁদের মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, শান-শওকত সমপর্কে অবগত হও এবং তাঁদের কথা ও কাজের অনুসরণ কর এবং যথা সম্ভব তাঁদের সীরত-ছুরতকে গ্রহণ কর, কারণ তাঁরা হিদায়াত ও ‘‘ছিরাতুল মুস্তাকীম’’-এর উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন । (মিশকাত শরীফ পৃ: ৩২)
মূলকথা হলো, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার বরকতময় ছোহবতে ধন্য হয়ে উনার অনুসরণ-অনুকরণের মাধ্যমে আল্লাহ পাক-উনার এতটুকু সন্তুষ্টি হাছিল করেছেন যে, তাঁরা আল্লাহ পাক-উনার পক্ষ থেকে মাহ্ফুয (সংরক্ষিত) এবং সর্ব প্রকার সমালোচনার উর্ধ্বে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ের অনুসরনীয় ও অনুকরণীয়। মূলত: যাঁদের উপর স্বয়ং আল্লাহ পাক সন'ষ্টির ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁদের অনুসরণ স্বয়ং আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং স্বয়ং আল্লাহ পাক-উনারই অনুসরণেরই শামিল।
এটা সর্বজন বিদিত যে, নবী-রসুল আলাইহিমুস সালামগণের পরে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হচ্ছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ। ছাহাবাগণের মধ্যে মর্যাদা হিসেবে স্তরভেদ থাকতে পারে। কিন' পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যুগের কোন ব্যক্তিঈ তিনি যত বড় জ্ঞানীগুনী, সাধক, হোন না কেন, কেউই তাঁদের সমমর্যাদা লাভ করতে পারবেন না । এ বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহ এবং মুসলিম উমমাহর কোন দ্বিমত্ নেই । (রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে প্রকাশিত কিতাবুল আলক্বাব, তৃতীয় খণ্ড থেকে উদ্ধৃত) কিছু সংখ্যক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের জীবনী মুবারক থেকে তাঁদের পরিচিতি সহ সংক্ষিপ্তভাবে কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ঘটনা এখানে উল্লেখ করা হলো । প্রথমে “আশারায়ে মুবাশ্শারার” আলোচনা করা হলো ।
পৃষ্ঠাসমূহ
- যামানার ইমাম
- আজকের ক্বওল শরীফ
- সুন্নাহ শরীফ
- মুসলিম নির্যাতন
- বাতিল ফিরকা
- চিকিৎসা সহায়তা
- প্রথম-পাতা
- ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়ে যুক্তিহীন বিতর্কের অবসান
- বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক আইন
- সামরিক প্রযুক্তি
- আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও নানা শাখা-প্রশাখা
- মুসলমানদের সামনে চ্যালেঞ্জ
- সন্তানদের শিক্ষাদান পদ্ধতি
- পবিত্র আল-বাইয়্যিনাত শরীফ উনার সূচী মুবারক
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সকলে আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও।’ (সূরা ইমরান-৭৯)