যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সুলতানুল নাছির, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে “গান-বাজনা” হারাম ও কবীরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত। তা যে কোনো গানই হোক না কেন। যেমন নবীতত্ত্ব, মুর্শিদী, জারী, কাওয়ালী, পল্লীগীতি, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসঙ্গীত, লালনগীতি, ভাওয়ালী, ভক্তিমূলক, আধুনিক গান, ছায়াছবির গান, ব্যান্ডসঙ্গীত ইত্যাদি যে কোনো প্রকার গানই হোক না কেন। তবে বাজনা বা বাদ্যযন্ত্র ব্যতীত হামদ, নাত, ক্বাছীদা, গজল ইত্যাদি পাঠ করা ও শোনা জায়িয রয়েছে।
তাই কিতাবে উল্লেখ আছে, ইলম দু’প্রকার। (১) “ইলমে আরুজী” অর্থাৎ ছন্দ প্রকরণ যেমন- বালাগাল উলা বি কামালিহী ......... ও মীলাদ শরীফ-এ পাঠকৃত ক্বাছীদাসমূহ, যা গানের সুরে পাঠ করা হয় না। (২) “ইলমে মুসীক্বী” অর্থাৎ রাগ-রাগিণী বা গানের সুর। কাজেই বাদ্যযন্ত্র বা বাজনা তো শরীয়তে সম্পূর্ণই নাজায়িয। সাথে সাথে বাদ্যবিহীন ইলমে মুসীক্বীও নাজায়িয।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলত “গান-বাজনা” বা সঙ্গীত কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের অকাট্য ও কেৎয়ী দলীল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে হারাম সাব্যস্ত হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালাম পাক-এর অসংখ্য স্থানে “গান-বাজনা” বা সঙ্গীত নিষেধ করেছেন। যেমন “সূরা লোকমান”-এর ৬ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ ফরমান, “মানুষের মধ্যে কিছু লোক রয়েছে। যারা ‘লাহওয়াল হাদীছ’ খরিদ করে থাকে। যেনো বিনা ইলমে মানুষদেরকে আল্লাহ পাক উনার পথ থেকে বিভ্রান্ত করে এবং হাসি-ঠাট্টা রূপে ব্যবহার করে, তাদের জন্যে অপমানজনক শাস্তি রয়েছে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, অনুসরণীয় মুফাসসিরীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এ আয়াত শরীফ-এ বর্ণিত “লাহওয়াল হাদীছ” দ্বারা “গান-বাজনা বা সঙ্গীতকে” সাব্যস্ত করেছেন।
যেমন, বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “তাফসীরে ইবনে কাছীর”-এর ৮ম খণ্ড, ৩-৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন, বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এর ব্যাখ্যায় বলেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ‘লাহওয়াল হাদীছ’ হচ্ছে- ‘গান-বাজনা’ বা সঙ্গীত।” ...... হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, হযরত জাবের, হযরত ইকরামাহ, হযরত সাঈদ বিন জুবাইর, হযরত মুজাহিদ, হযরত মাকহুল, হযরত আমর ইবনে শোয়াইব ও হযরত আলী ইবনে বোযায়মা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এ ব্যাখ্যাই করেছেন। আর বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উক্ত আয়াত শরীফ গান ও বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, এছাড়াও তাফসীরে কুরতুবী, তাবারী, দুররে মানছুর, রুহুল মায়ানী, মাদারেক, কাশশাফ, মায়ালিম, ছায়লবী ও ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “আদাবুল মুফরাদ” কিতাবে “লাহওয়াল হাদীছ” অর্থ: “গান-বাজনা”, “বাদ্যযন্ত্র” বলে উল্লেখ করেছেন। অনুরূপ সূরা নজম ও বণী ইসরাঈল-এও “গান-বাজনা” হারাম হওয়ার ব্যাপারে আয়াত শরীফ রয়েছে। অতএব, কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ যা কিৎয়ী দলীল, তাদ্বারা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয়েছে যে, “গান-বাজনা” বা সঙ্গীত ও “বাদ্যযন্ত্র” ইত্যাদি সম্পূর্ণই হারাম ও আযাবের কারণ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, “গান-বাজনা” ও “বাদ্যযন্ত্র” নিষেধ হওয়া সম্পর্কে অসংখ্য হাদীছ শরীফ-এও বর্ণিত রয়েছে। যেমন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “গান শোনা গুনাহর কাজ, গানের মজলিসে বসা ফাসিকী এবং গানের স্বাদ গ্রহণ করা কুফরী।”
অন্য হাদীস শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “পানি যেরূপ যমীনে ঘাস উৎপন্ন করে “গান-বাজনা” তদ্রূপ অন্তরে মুনাফিকী পয়দা করে।” (বায়হাক্বী ফী শুয়াবিল ঈমান)।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ করেন, “আমি ‘বাদ্যযন্ত্র’ ও ‘মূর্তি’ ধ্বংস করার জন্যে প্রেরিত হয়েছি।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর আলোকে ইমাম-মুজতাহিদ তথা ফুক্বাহায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা ফতওয়া দেন যে, “গান-বাজনা” সঙ্গীত বা “বাদ্যযন্ত্র” সম্পূর্ণই হারাম। এটাকে হালাল বলা কুফরী।
যেমন আল্লামা হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “তাফসীরে আযীযী”-এর ১ম খণ্ডের ৬৫ পৃষ্ঠায় লিখেন, “মুগনী” কিতাবে উল্লেখ আছে, “লাহওয়াল হাদীছ” হচ্ছে- “গান-বাজনা”, সঙ্গীত। সূরা লোকমান-এর ৬ নম্বর আয়াত শরীফ দ্বারা তা হারাম সাব্যস্ত হয়েছে। যে ব্যক্তি এটাকে হালাল জানবে সে কাফির হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, “জামিউল ফতওয়াত” কিতাবে উল্লেখ আছে, “গান-বাজনা” শ্রবণ করা, “গান-বাজনার” মজলিসে বসা, “বাদ্যযন্ত্র” বাজানো, “নর্তন-কুর্দন” করা সবই হারাম, যে ব্যক্তি এগুলোকে হালাল মনে করবে সে ব্যক্তি কাফির।” অনুরূপ প্রায় সকল ফিক্বাহর কিতাবেই “গান-বাজনা”, “বাদ্যযন্ত্র” ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দেয়া হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দলীল দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, “গান-বাজনা”, “বাদ্যযন্ত্র” ইত্যাদি সব নাজায়িয ও হারাম। এগুলোকে হালাল মনে করা কুফরী। কাজেই কোনো অবস্থাতেই “গান-বাজনা” করার অনুমতি শরীয়তে নেই তা যে কোনো প্রকার গানই হোক না কেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যারা বলে বুখারী শরীফ-এর ৫ম খণ্ডে “গান-বাজনা” জায়িয লেখা আছে তারা চরম জাহিল ও গুমরাহ। আর জাহিল বলেই বুখারী শরীফ-এর ৫ম খণ্ড দলীল হিসেবে পেশ করে থাকে। অথচ মূল বুখারী শরীফ-এর কোন ৫ম খণ্ডই নেই। মূলত বুখারী শরীফ-এর কোথাও যদি “গান-বাজনা” জায়িয লিখা থাকতো তবে হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “আদাবুল মুফরাদ” কিতাবে “গান-বাজনা” হারাম বললেন কেন? কাজেই যারা এ ব্যাপারে বুখারী শরীফ-এর দলীল দেয় তারা চরম জাহিল, গুমরাহ, বিদয়াতী ও প্রতারক।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হচ্ছে- কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর দৃষ্টিতে সর্বপ্রকার সঙ্গীত যেমন, কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর দৃষ্টিতে সর্বপ্রকার সঙ্গীত যেমন, নবীতত্ত্ব, মুর্শিদী, জারী, কাওয়ালী, পল্লীগীতি, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসঙ্গীত, লালনগীতি, ভাওয়ালী, ভক্তিমূলক, আধুনিক গান, ছায়াছবির গান, ব্যান্ডসঙ্গীত ইত্যাদি সর্বপ্রকার গানই লেখা, গাওয়া ও শোনা হারাম এবং কবীরা গুনাহ। জায়িয বলা বা মনে করা কুফরী। যারা বুখারী শরীফ-এর দোহাই দিয়ে গান-বাজনা বা সঙ্গীতকে জায়িয বলে তারা গুমরাহ ও চরম মিথ্যাবাদী। যদি তারা সত্যবাদী হয়ে থাকে তাহলে প্রকাশ্য বাহাছে এসে দলীল পেশ করুক। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো তবে দলীল পেশ করো।”