নোটিশ

মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১১

নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছায়া মুবারক ছিল না

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সুলতানুল নাছির, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল না-এ মতটিই বিশুদ্ধ; যারা বলে ছায়া ছিল তাদের তাহক্বীক্বের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন, নূরে মুজাস্‌সাম, নূরে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ তাঁর মুবারক দেহ নূরের দ্বারা সৃষ্ট। মহান আল্লাহ্‌ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ্‌ শরীফে সূরা মায়িদার ১৫ নম্বর আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন- “অবশ্যই মহান আল্লাহ্‌ পাক-এর পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট নূর ও প্রকাশ্য কিতাব এসেছে।”





তাফসীরে কবীর, মাযহারী, ইবনে কাছীর, জালালাইন ইত্যাদি কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সূর মায়িদার ১৫ নম্বর আয়াত শরীফে ‘নূর’ দ্বারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বুঝানো হয়েছে। আর কিতাব দ্বারা কুরআন শরীফকে বুঝানো হয়েছে।


সূরা মায়িদার ১৫ নম্বর আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে- “হযরত জাবের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “হে জাবের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সব কিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর মুবারককে সৃষ্টি করেছেন।” অর্থাৎ আল্লাহ্‌ পাক-এর প্রথম সৃষ্টিই হচ্ছে নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বেমেছাল বুযর্গী ও সম্মান দান করেছেন, যার জন্য তাঁর ছায়া মুবারক ছিল না। কারণ যদি তাঁর ছায়া মুবারক থাকতো তাহলে কাফেররা তাঁকে ইহানত ও অবমাননা করার জন্য তাঁর ছায়া মুবারকে পা রাখার ও থুথু ফেলার চেষ্টা করতো। আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ ধরনের অবমাননা থেকে সম্পুর্ণরূপে পবিত্র রাখার জন্য নূর হিসেবে পাঠিয়েছেন, যেন তাঁর ছায়া মুবারক না থাকে।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যারা আল্লাহ্‌ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মহান বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে নিতান্তই অজ্ঞ, তারাই কুরআন শরীফের একখানা আয়াতাংশ- “হে হাবীব আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মত বাশার” উল্লেখকরতঃ এর প্রকৃত ব্যাখা ও মর্মার্থ না বুঝে শুধু শাব্দিক অর্থ করেই বলে যে, আমাদের ন্যায় তাঁর ছায়া ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। মূলতঃ তাদের এরূপ বক্তব্য রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ইহানতের শামিল, যা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কেননা সকল দিক থেকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মেছাল বা তুলনা সৃষ্টিরাজির ঊর্ধ্বে; এক কথায় আল্লাহ পাক-এর পরেই তাঁর স্থান। তিনি তাঁর হাবীব ও রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যেমন, এ প্রসঙ্গে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদের আকৃতির মত নই।”


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীর মুবারকে মশা-মাছি বসতো না এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীর মুবারক যা কিছু ছিল যেমন ছোট ও বড় ইস্তিনজা এবং রক্ত মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছুই পবিত্র থেকে পবিত্রতম ছিল। শুধু তাই নয় বরং এগুলো পানকারী জাহান্নামী হলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যেত। কাজেই তিনি আমাদের মত মানুষ নন এবং তাঁর ছায়া মুবারক ছিল না।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আরেকটি মুবারক বৈশিষ্ট হচ্ছে যে, তাঁর দেহ মুবারকে কোন ছায়া ছিল না। অর্থাৎ তিনি ছিলেন ছায়াহীন নূরে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কোন ছায়া মুবারক ছিল না এবং সূর্যের আলোতেও কখনো তাঁর ছায়া পড়তো না।”


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, কেউ কেউ এ হাদীছ শরীফখানাকে দুর্বল এমনকি কেউ কেউ এ হাদীছ শরীফকে মিথ্যা এবং মওজু হাদীছ বলে মন্তব্য করে থাকে।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন,তাদের এ বক্তব্যটি ভুল এবং অজ্ঞতা প্রসূত। কেননা হাদীছ শরীফসমূহের মধ্যে এরূপ অনেক হাদীছ শরীফ রয়েছে যাকে কোনো কোনো মুহাদ্দিস জইফ বা মওজু বা অন্য কিছু বলেছেন। আবার কোনো কোনো মুহাদ্দিস সে হাদীছকেই সহীহ্‌, হাসান, মারফূ, মুরসাল ইত্যাদিও বলেছেন।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, উক্ত হাদীছ শরীফখানা যদি শুধু মওজুই হতো অর্থাৎ একেবারে অগ্রহণযোগ্য হতো তাহলে বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম হাকেম তিরমীযী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত হাফেজ ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম জুরকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মত বিশ্ব বিখ্যাত সর্বজনমান্য মুহাদ্দিসগণ উক্ত হাদীছ শরীফখানা তাঁদের লিখিত কিতাবে বর্ণনা করে তার বরাত দিয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল না বলে উল্লেখ করতেন না।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, ‘ইকতেবাছ’ কিতাবের লেখক হযরতুল আল্লামা, ইমাম ইবনুল হাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, (ছায়ার ন্যায়) এ ধরনের মাসয়ালাসমূহের ক্ষেত্রে এরূপ সনদ বিশিষ্ট হাদীছ শরীফই যথেষ্ট।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন,বিশিষ্ট সূফী, ফক্বীহ, বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিস ও বুযুর্গ, যিনি প্রতিদিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যিয়ারতে ধন্য হতেন, তিনি হচ্ছেন শায়েখে মুহাক্কিক্ব হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি তাঁর মাদারিজুন নুবুওয়াত কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল না।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, অনুরূপভাবে বিশ্বখ্যাত মুফাসসির, মুফাসসিরে আ’যম ও মুদাক্কিক্ব, বিশিষ্ট মুহাদ্দিস, ফক্বীহ, বুযূর্গ ও ছূফী হযরত শাহ আব্দুল আযীম মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর তাফসীরে আযীযীতে উল্লেখ করেছেন যে, আল্লাহর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল না।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যিনি আফজালুল আউলিয়া, কাইয়্যূমে আউয়াল, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি’ যাঁর সম্পর্কে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ বর্ণিত রয়েছে- জামউল জাওয়াম ও জামিউদ্‌ দোরার কিতাবে। তিনি তাঁর বিশ্ববিখ্যাত ও বিশ্ব সমাদৃত মাকতুবাত শরীফে লিখেছেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল না।


মূলত সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকের কোন ছায়া ছিল না। কারণ তিনি নূরে মুজাসসাম অর্থাৎ নূরের তৈরি।


এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ও প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিছ আল্লামা হযরত হাকীম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘নাওয়াদিরুল উছূল’ কিতাবে একখানা হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেন, হযরত হাকীম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘নাওয়াদিরুল উছুল’ কিতাবে হযরত জাকওয়ান থেকে বর্ণনা করেন, ‘নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক দেখা যেত না।’ ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহিও উনার ‘খাছায়িছুল কুবরা’ নামক কিতাবে উক্ত হাদীছ শরীফখানা উল্লেখ করে এ মতের সমর্থন করেন।


বাহরুল উলুম, শাইখুল মাশায়িখ হযরত আল্লামা ইবনে সাবা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘শিফাউল ছুদুর’ কিতাবে লিখেছেন, “নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক যমীনে পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন নূর। অতঃপর যখন তিনি সূর্য অথবা চাঁদের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার ছায়া মুবারক দৃষ্টিগোচর হতো না।”


আওলাদে রসূল, হাফিজুল হাদীছ, বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার হযরত আল্লামা সাইয়্যিদ যুরকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘শরহে মাওয়াহিবুল লাদুন্নীয়া শরীফ-এ’ বর্ণনা করেছেন, “চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক থাকতো না। কেননা তিনি নূর ছিলেন।” (আর নূরের কোন ছায়া নেই)


ইমামুল আল্লামা, জালালু মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, আল্লামা হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ‘আলমু যাজুল লবীব ফী খাছায়িছিল হাবীব’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দ্বিতীয় বাবের চতুর্থ অধ্যায়ে লিখেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক মাটিতে পড়েনি। চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও উনার ছায়া মুবারক দেখা যেতো না। হযরত আল্লামা ইবনে সাবা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু সম্পূর্ণ নূর ছিলেন সেহেতু উনার ছায়া মুবারক ছিল না।’ হযরত ইমাম রাজীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘অবশ্যই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর সমস্ত কিছুকে ছাড়িয়ে যেতো।’



ইমামুল জলীল, মুহাদ্দিশ শাহীর, ফক্বীহুল আছার, হযরত ইমাম আল্লামা কাজী আয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘শিফা শরীফ’ কিতাবে লিখেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরের দেহ মুবারক-এর ছায়া মুবারক সূর্য ও চাঁদের আলোতেও পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নূর।”


বিখ্যাত বুযূর্গ, ওলীয়ে কামিল হযরত ইমাম ইবনে হাজার মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহিআফজালুল ক্বোরায়’ উল্লেখ করেন, “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর ছিলেন। নিশ্চয়ই তিনি যখন চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হাঁটতেন তখন উনার ছায়া মুবারক প্রকাশ পেতো না।”



বিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা শিহাবুদ্দীন খাফফজী রহমতুল্লাহি আলাইহি নাসীমুর রিয়াজ’ নামক কিতাবে লিখেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘নবুওয়াতের’ প্রমাণের মধ্যে এটাও একটি প্রমাণ যে, উনার শরীর মুবারক-এর ‘ছায়া ছিল না। যখন তিনি সূর্য ও চন্দ্রের আলোতে হাঁটতেন তখনও উনার ‘ছায়া মুবারক’ পড়তো না। কেননা তিনি (আপাদ মস্তক) ‘নূর’।



‘কিতাবুল ওয়াফা’-এর লিখক, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘ছায়া মুবারক’ ছিল না। উনার নূর মুবারক-এর উজ্জ্বলতা সূর্য ও বাতির আলোর উপর প্রাধান্য লাভ করতো।’



কাইয়্যুমে আউয়াল, আফজালুল আউলিয়া, শায়খ আহমদ ফারুকী সিরহিন্দী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জগদ্বিখ্যাত কিতাব ‘মাকতুবাত শরীফ’-এর ৩য় জিলদ ১৫৫ পৃষ্ঠায় আরো লিখেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার কি করে ‘ছায়া পড়তে পারে? ‘ছায়া’ তো তিনিই সৃষ্টি করেছেন। তবে কি উনার কোন মেছাল রয়েছে? তবে কি তিনি কামালে লাত্বাফাত-এর অধিকারী নন? দেখুন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘কামালে লাত্বাফাত’-এর অধিকারী হওয়ার কারণে উনার দেহ মুবারক-এর ‘ছায়া’ পড়তো না। যদি তাই হয়ে থাকে তবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আল্লাহ পাক উনার কি করে ‘ছায়া’ থাকতে পারে।



হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মাকতুবাত শরীফ’-এ আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহ পাক উনার ছায়া কি করে থাকতে পারে? তিনি তো ‘কামালাতে লাত্বাফাত’-এর মালিক। আল্লাহ পাক উনার যিনি হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারও ছায়া নেই। তিনি ‘কামালাতে লাত্বাফাত’-এর হিসসা লাভ করার কারণে আল্লাহ পাক যে লত্বীফ-এর হিসসা লাভ করার কারণে আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক নেই। সুবহানাল্লাহ! এর ব্যাখ্যা অনেক লম্বা। এই ‘কামালাতে লাত্বাফাত’ এটা হচ্ছে ছমাদিয়াতের একটা হিসসা। ‘আল্লাহুছ ছমাদ’ কোন কিছুর তিনি মুহতাজ নন। ছায়ারও মুহতাজ নন। ঠিক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছমাদিয়াতের হিসসা লাভ করার কারণে ‘কামালাতে লাত্বাফাত’-এর হিসসা লাভ করেছেন উনারও ছায়া মুবারক ছিল না। এটা হচ্ছে আমভাবে এই ছমাদিয়াতের হিসসা লাভের কারণে।


আরেকটা হচ্ছে, এ তো সূক্ষ্ম আল্লাহ পাক যিনি খালিক্ব যিনি মালিক আল্লাহ পাক তিনি সবকিছু থেকে পবিত্র। ঠিক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আল্লাহ পাক উনার হাবীব হওয়ার কারণে তিনিও আল্লাহ পাক ছাড়া সব কিছু থেকে তিনিও বেনিয়াজ। কোন কিছুর তিনি মুখাপেক্ষী নন। সুবহানাল্লাহ!


কাজেই আরশ, কুরসী, সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, কোয়াসা, গ্রহ, নক্ষত্র এসব কিছু সৃষ্টি হয়েছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক থেকে, একটা অংশ নিয়ে। যেমন একটা কুপি একটা মোমবাতি একটা সূর্যের ছায়া ফেলতে পারে না। এর চাইতেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি পার্থক্য রয়েছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে। সমস্ত সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র, কোয়াসার কোন দিন ছায়া ফেলার প্রশ্ন আসতে পারে না উনার সূক্ষ্মতার কারণে। আল্লাহ পাক উনার হাবীব যে ‘কামালতে লাত্বাফাত’-এর যে হিসসা লাভ করেছেন এর কারণে সেটা কোন দিন সম্ভব নয়। যেহেতু কায়িনাতের গোটা সৃষ্টিরাজি সৃষ্টি হয়েছে উনার নূর মুবারকের একটা অংশ নিয়ে।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, এ সকল জবরদস্ত ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে-কিরামের দলীলের পর সমঝদার ঈমানদারের জন্য আর কোন দলীলের প্রয়োজন পড়ে না। অর্থাৎ সর্বজনমান্য মুহাক্কিক-মুদাক্কিক ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়েকিরাম উক্ত হাদীছ শরীফ খানা সহীহ হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং তার বরাতে ফতওয়া দিয়েছেন আখিরী নবী, নূরে মুজাস্‌সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল না।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, ওহাবী, খারেজী, সালাফীরা বলে থাকে উক্ত হাদীছ শরীফখানা বিশুদ্ধ নয়, মওজু; তারা কি এমন কোন দলীল দেখাতে পারবে যাতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল বলে উল্লেখ আছে? মূলতঃ এসব বাতিল, ফেৎনাবাজ, গোমরাহরা কখনো তা পারবে না। তারা শুধু অজ্ঞতা ও মূর্খতার কারণে উক্ত হাদীছ শরীফখানা অস্বীকার করে নিজেদের বদআক্বীদা জাহির করে নিজেদের জাহান্নামী করার এবং সাধারণ মানুষের ঈমান হরণের পাঁয়তারা করে সমাজে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারবে।


মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি সকলকে ওহাবী-খারেজী, সালাফীদের বদআক্বীদা থেকে সাবধান হয়ে তাদের পরিত্যাগ করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শান-মান শ্রেষ্ঠত্ব আফজালিয়াত হাক্বীক্বীভাবে উপলব্ধি করে তাঁর প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করার আহবান জানান।