নোটিশ

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১১

ছাহিবুল ওয়াহয়ি, ছাহিবুল মু’জিযাত, ছাহিবুশ শিফা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত তাবিজ ও ঝাড়-ফুঁক


عن ام المؤمنين حضرت عائشة عليها السلام ان النبى صلى الله عليه وسلم كان ينفث على نفسه فى المرض الذى مات فيه بالمعوذات فلما ثقل كنت انفث عليه بهن وامسح بيده نفسه لبركتها فسالت الزهرى كيف ينفث قال كان ينفث على يديه ثم يمسح بهما وجهه.
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে অসুখে বিছাল শরীফ লাভ করেছিলেন, সে অসুখে সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস পড়ে দম করতেন। যখন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কষ্ট অতিরিক্ত বেড়ে যেতো, তখন আমি তা পড়ে উনার উপর দম করতাম এবং বরকতের জন্য উনার হাত মুবারক আমার শরীর মুবারক-এ বুলিয়ে নিতাম। এ হাদীছ শরীফ-এর এক বর্ণনাকারী মা’মার বলেন, আমি হযরত ইমাম যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কিভাবে দম করতেন? তিনি জবাবে বললেন: তিনি উনার হাত দুটির উপর দম করতেন। তারপর সেই দু’হাত মুখমন্ডলের উপর মাসেহ করে নিতেন।” (বুখারী শরীফ)


বস্তুত মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই ঝাড়-ফুঁক নিতেন এবং তা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকেই নির্দেশিত বিধান ছিলো।

উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস পাঠ করে স্বীয় হস্ত মুবারক ও শরীর মুবারক-এর সম্মুখভাগ মসেহ করতেন।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর)

আর তাবিজ গ্রহণ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে, হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “আমার দুর্গন্ধ রোগ থাকার কারণে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ‘সূরা ফাতিহা’ দ্বারা তাবিজ করে দিয়েছেন।” (তিবরানী শরীফ)

হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ করা হয়েছে, হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “আমরা কোনো এক সফরে কোনো এক জায়গায় অবস্থান করছিলাম। অতঃপর একটি দাসী এসে বললো, আমাদের ক্বওমের সরদারকে সাপে কামড় দিয়েছে। আপনাদের মধ্যে কেউ ঝাড়-ফুঁক দিতে পারেন কি? আমরা বললাম, হ্যাঁ পারি। অতঃপর তখন তার সাথে আমাদের এক সাথী গেলেন। অতঃপর সাপে দংশিত ব্যক্তিকে সূরা ফাতিহা দ্বারা ঝাড়-ফুঁক দিলেন। অতঃপর উক্ত ব্যক্তি সুস্থতা লাভ করলো।” এই সংবাদ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জানানো হলে তিনি বললেন, “নিশ্চয়ই তাতে (সূরা ফাতিহার মধ্যে) যা রয়েছে তা আরোগ্য দানকারী।”

হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে, হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, আমরা জাহেলী যুগে মন্ত্র পাঠ করতাম। অতঃপর এ বিষয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি? তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “তোমাদের মন্ত্রগুলি আমার কাছে পেশ করো। যদি তাতে কুফরী, শিরকী বাক্য না থাকে তবে তাতে কোনো আপত্তি নেই।” (মুসলিম, বুখারী শরীফ)

কাজেই তাবিজ ও ঝাড়-ফুঁক গ্রহণের ক্ষেত্রে এ বিষয় সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে। আর ছহীহভাবে তাবিজ ও ঝাড়-ফুঁক গ্রহণ সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সুন্নতে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম হিসেবেই মূল্যায়ন করতে হবে।

- মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ বিশেষ সংখ্যা-১৪৩২ হিজরী