নোটিশ

বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১১

হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার পিতার নাম মুবারক ছিল হযরত তারিখ আলাইহিস্‌ সালাম। আযর নামক ব্যক্তি ছিল হযরত ইব্‌রাহীম আলাইহিস্‌ সালাম-উনার চাচা।


যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে যম, ইমামুল ইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেছেন, “নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্বপুরুষগণ সকলেই ছিলেন মুসলমান হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-উনা পিতার নাম মুবারক ছিল হযরত তারিখ আলাইহিস্সালাম আযর নামক ব্যক্তি ছিল হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-উনা চাচা

নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্বপুরুষগণের মর্যাদা-মর্তবা আলোচনাকালে তিনি একথা বলেন


মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মহান আল্লাহ্পাক ইরশাদ করেন, আর যখন হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম তাঁর চাচা আযরকে বললেন, আপনি কি মূর্তিকে ইলাহ্‌ (মাবুদ) হিসেবে গ্রহণ করছেন?” (সূরা আনআম/৭৪)

আয়াত শরীফ-আবূহু আযর -এর শাব্দিক অর্থ উনা পিতা আযর কিন্তু ইমাম-মুজতাহিদ আউলিয়ায়ে কিরামগণ-এর সর্বসম্মত মতে, এখানেআবূহু অর্থ উনা চাচা অর্থাৎআবুন শব্দের অর্থ পিতা না হয়ে এর অর্থ হবে চাচা কারণ, কুরআন শরীফ হাদীছ শরীফ-এর অনেক স্থানেইআবুন শব্দটি পিতা ব্যতীত অন্য অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “পিতা-মাতা উভয়ের জন্যে রয়েছে মৃতের পরিত্যক্ত মালের এক ষষ্ঠাংশ; যদি মৃতের কোন পুত্র সন্তান থাকে (সূরা নিসা/১১)

আয়াত শরীফ- পিতা মাতা উভয়ের ক্ষেত্রেইআবুন শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, অনুরূপসূরা বাক্বারা-এর ১৩৩ নম্বর আয়াত শরীফ- বলা হয়েছে, “(হযরত ইয়াকুব আলাইহিস্সালাম-এর সন্তানদের কথা) আমরা আপনার ইলাহ্ আপনার পিতা (পূর্বপুরুষ) হযরত ইব্রাহীম, ইসমাঈল ইসহাক আলাইহিমুস্সালাম-এর ইলাহ্‌-এর ইবাদত করব        

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হযরত ইসমাঈল আলাইহিস্সালাম হলেন, হযরত ইয়াকুব আলাইহিস্সালাম-এর চাচা কাজেই উক্ত আয়াত শরীফ- চাচার ক্ষেত্রেওআবুন শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, অনুরূপভাবে হাদীছ শরীফ-এরও বহু স্থানে চাচা ক্ষেত্রে (আবুন) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যেমন, তাফসীরে কবীর ১৩-৪০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার চাচা হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে আমার নিকট ফিরিয়ে দাও এখানেওআবুন শব্দ দ্বারা চাচাকে বুঝানো হয়েছে

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফ- ইরশাদ হয়েছে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই আমার চাচা (আবূ তালিব) তোমাদের পিতা উভয়ই জাহান্নামী সম্পর্কে তাফসীরে মাযহারী কিতাবের ৩য় খণ্ডের ২৫৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, “আরববাসীরা (আল আবু) শব্দটি চাচার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করেন

তাফসীরে কবীর কিতাবের ১৩তম খণ্ডের ৩৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, (আম্মুন) চাচা শব্দটি সাধারণতঃ (আবুন) (পিতা) হিসেবেও ব্যবহৃত হয়

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আরবীআবুন শব্দটির শাব্দিক অর্থ পিতা কিন্তু কুরআন শরীফ হাদীছ শরীফ- এবং আরব দেশে প্রচলিত পরিভাষায়আবুন শব্দটি চাচা অর্থেও ব্যবহৃত হতো সুতরাং সূরা আনআম-এর ৭৪ নম্বর আয়াত শরীফ-আবূহু এর অর্থ হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর চাচা আযর

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফ- এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ্ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর পিতার নাম আযর নয় বরং উনা পিতার নাম মুবারক হলো হযরত তারিখ আলাইহিস্সালাম (ইবনে আবি হাতিম, ইবনে কাছির- /২৪৮)

নিশ্চয়ই হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর পিতা (হযরত তারিখ আলাইহিস্সালাম) মুশরিক ছিলেন না বরং আযর (উনা চাচা) মুশরিক ছিল কেননা, অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, নিশ্চয়ই হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর পিতা অন্য একজন অর্থাৎ হযরত তারিখ আলাইহিস্সালাম; কিন্তু আযর নয় (তাফসীরে কবীর- ১৩/৩৯)

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, নিশ্চয়ই হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর পিতার নাম ছিলো হযরত তারিখ আলাইহিস্সালাম আর আযর ছিলো উনা চাচার নাম তখন চাচাকেও সাধারণতঃ আবুন (পিতা) বলা হত (তাফসীরে কবীর- ১৩/৩৮)

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মূলতঃ হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালামসহ প্রত্যেক নবী-রসূল আলাইহিমুস্সালামগণ-এর পিতা-মাতা বা পূর্বপুরুষ ছিলেন পরিপূর্ণ ঈমানদার, খালিছ মুমিন কেউই কাফির ছিলেন না

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, নিশ্চয়ই সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্সালাম-এর পিতা বা পূর্বপুরুষ কেউই কাফির ছিলেন না তার দলীল হচ্ছে আল্লাহ্পাক-এর কালাম বা আয়াত শরীফ (আল্লাহ্পাক বলেন) “তিনি আপনাকে (হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজদাকারীদের মধ্যে স্থানান্তরিত করেছেন (তাফসীরে কবীর- ১৩/৩৮)

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ্হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাদের মাধ্যমে যমীনে তাশরীফ এনেছেন অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস্সালাম থেকে হযরত আব্দুল্লাহ্আলাইহিস্সালাম পর্যন্ত সকলেই ছিলেন সিজদাকারী অর্থাৎ সকলেই নামায, কালাম, যিকির, আযকার, ইবাদত, বন্দিগীতে মশগুল ছিলেন উনারা সকলেই পূর্ণ পরহিযগার, মুত্তাক্বী ধার্মিক ছিলেন

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, অনেকে সূরা মরিয়ম-এর ৪৭ নম্বর আয়াত শরীফ সূরা তওবা-এর ১১৪ নম্বর আয়াত শরীফ-এর বরাত দিয়ে বলে যে, “হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম তাঁর পিতার জন্য ইস্তিগফার করেছেন কাজেই তাঁর পিতা ঈমানদার ছিলেন না

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, যারা একথা বলে তারা উক্ত আয়াত শরীফদ্বয়-এর অর্থই বুঝেনি কারণসূরা মরিয়ম-এর ৪৭ নম্বর আয়াত শরীফ- আল্লাহ পাক বলেন, “হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম বলেন, আপনার প্রতি (বিদায়কালীন) সালাম, অচিরেই আমি আমার প্রতিপালক-এর নিকট আপনার জন্য মাগফিরাত কামনা করব

 এবংসূরা তওবার ১১৪ নম্বর আয়াত শরীফ- আল্লাহ পাক বলেন, “হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম কর্তৃক স্বীয় চাচার মাগফিরাত কামনা করা ছিলো কেবল মাত্র তার সাথে ওয়াদা করার কারণে

অর্থাৎ প্রথমতঃ হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম উনা চাচার সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, তিনি তার জন্য ইস্তিগফার করবেন উনা চাচা যেন তওবা করে, শির্কী ছেড়ে ঈমান গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যান সেজন্য দোয়া করবেন

আর পরবর্তীসূরা তওবা-এর ১১৪ নম্বর আয়াত শরীফ- সেই ওয়াদা পালনার্থে এবং মুশরিকদের জন্য দোয়া করা নিষেধ হওয়ার পূর্বে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম উনা চাচার জন্য দোয়া করেছিলেন

যেমন, আয়াত শরীফ-এর তাফসীরে এসেছে, “নিশ্চয়ই হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর ইস্তিগফার কামনা করাটা ছিল মুশরিকদের জন্য দোয়া করা নিষেধ হওয়ার পূর্বের যেমন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নিষেধ হওয়ার পূর্বে) উনা চাচা আবূ তালিবকে বলেছিলেন, আল্লাহ্পাক-এর কসম! অবশ্যই আমি আপনার তওবা নছীব হওয়ার জন্য দোয়া করব (মাযহারী, /১০০)

এছাড়া হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনা চাচা আবূ তালিব-এর জন্য, হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম উনা চাচা আযর-এর জন্য সরাসরি দোয়া করেননি; বরং তাদের ইস্তিগফার কামনা করেছেন অর্থাৎ আযর আবু তালিব-এর যেন তওবা নছীব হয়, তারা যেন ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়, ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয় সেজন্য দোয়া করেছেন আর তাও ছিল মুশরিকদের জন্য দোয়া নিষেধ সংক্রান্ত বিধান (আয়াত) নাযিল হওয়ার পূর্বে

আর চাচা হিসেবে আবূ তালিব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এবং আযর হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর অনেক খিদমত করেছে তার বিনিময় স্বরূপ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম তাদের ইস্তিগফার (তওবা কবুল হওয়ার দোয়া) কামনা করেছেন

সম্পর্কে তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে, হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম উনা চাচার জন্যে ইস্তিগ্ফার করেন অর্থাৎ আযরের জন্যে ইস্তিগফার করেন আযর ছিল হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-উনা চাচা আর হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম ছিলেন হযরত তারিখ আলাইহিস্সালাম-উনা ছেলে (মাযহারী, /৩০৮)

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ্পাক-এর নবী হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্সালাম-এর পিতা হাক্বীক্বী পরহিযগার, মুত্তাক্বী, পরিপূর্ণ ঈমানদার মুসলমান ছিলেন উনা নাম মুবারক ছিল হযরত তারিখ আলাইহিস্সালাম আর আযর নামক ব্যক্তি ছিল উনা চাচা

মুজাদ্দিদে যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, পূর্ববর্তী সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্সালামগণের পূর্বপুরুষগণ এবং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্বপুরুষ হযরত আদম আলাইহিস্সালাম থেকে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস্সালাম পর্যন্ত সকলেই ছিলেন পুত-পবিত্র, পূর্ণ ধার্মিক পরিপূর্ণ মুসলমান এটাই ছহীহ আক্বীদা এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা আমাদের সকলকে আক্বীদাই পোষণ করতে হবে