আহলে বাইত-এর প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই
মদীনাবাসীগণ কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা জেনে গিয়েছিলেন
আহলে বাইত-এর
প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই মদীনাবাসীগণ কারবালা ময়দানের মর্মান্তিক ঘটনা জেনে
গিয়েছিলেন। স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাস্্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই
তাদেরকে স্বপ্নযোগে এই খবর জানিয়েছিলেন। ইমাম বায়হাকী আলাইহিস সালাম ‘দালায়িলুন নুবুওওয়াত’ গ্রন্থে সনদ সহকারে একটি রিওয়ায়িত
উদ্ধৃত করেছেন।
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম কূফা গমনের পর এক রাত্রে হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু স্বপ্নে দেখলেন, যেন দুপুর বেলা নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপস্থিত হয়েছেন। তাঁর চেহারা মুবারক মলিন, কেশ মুবারক উস্ক-খুস্ক। একটি শিশি হাতে নিয়ে তিনি এসেছেন। শিশিটিতে রক্ত ভরা ছিল। হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার হাত মুবারকে ঐ শিশিটিতে কি রয়েছে? নূরে মুজাস্্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, ‘এটাতে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার রক্ত মুবারক রয়েছে। আমি এটা আল্লাহ পাক উনার দরবারে পেশ করে বিচার চাইবো।’ হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তৎক্ষণাৎ লোকদের জানিয়েছিলেন যে, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম শাহাদাত বরণ করেছেন।
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম কূফা গমনের পর এক রাত্রে হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু স্বপ্নে দেখলেন, যেন দুপুর বেলা নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপস্থিত হয়েছেন। তাঁর চেহারা মুবারক মলিন, কেশ মুবারক উস্ক-খুস্ক। একটি শিশি হাতে নিয়ে তিনি এসেছেন। শিশিটিতে রক্ত ভরা ছিল। হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার হাত মুবারকে ঐ শিশিটিতে কি রয়েছে? নূরে মুজাস্্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, ‘এটাতে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার রক্ত মুবারক রয়েছে। আমি এটা আল্লাহ পাক উনার দরবারে পেশ করে বিচার চাইবো।’ হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তৎক্ষণাৎ লোকদের জানিয়েছিলেন যে, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম শাহাদাত বরণ করেছেন।
ইমাম তিরমিযী আলাইহিস
সালাম বর্ণনা করেন- উম্মুল মু’মিনীন
হযরত উম্মে সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, একদা আমি খাবে (স্বপ্নে) দেখলাম যে, নূরে মুজাস্্সাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপস্থিত হয়েছেন। তাঁর চুল-দাঁড়ি
মুবারকে মাটি লেগে রয়েছে। জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া
হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার এই অবস্থা কেন? তিনি বললেন, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালামকে শহীদ করার সময় আমি সেখানে
উপস্থিত ছিলাম।
এসব স্বপ্ন ও তার
পরবর্তী বিভিন্ন লোকের নিকট হতে পাওয়া খবরাখবর হতে মদীনাবাসীরা জেনেছিলেন যে,
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম শহীদ
হয়েছেন। আর তাই তখন থেকে মদীনা শরীফ-এর মধ্যে শোকের ছায়া বিরাজ করছিল। অলিতে
গলিতে, পথে-ঘাটে সবখানেই
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার আলোচনা। শত্রু-মিত্র সকলেই এজন্য শোকাহত হয়ে
পড়েছিলেন। অতঃপর যখন আহলে বাইত-এর লোকজন মদীনা শরীফ-এ তাশরীফ নিয়ে এসে
হৃদয়গ্রাহী ভাষায় এই মর্মান্তিক ঘটনার ইতিবৃত্ত বর্ণনা করলেন তখন সমগ্র মদীনা
শরীফ-এ শোকের ছায়া নেমে এলো।
কূফা গমনের সময় হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দুই পুত্র হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার
সঙ্গী হয়েছিলেন। কারবালার মাটিতে তাঁদেরও রক্ত মুবারক ঝরেছে। তাঁরাও হযরত ইমাম
হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছেন। আহলে বাইত-এর মদীনা শরীফ
ফিরে আসার পর যখন এই ভ্রাতাদ্বয়ের শাহাদাতের খবর প্রকাশিত হলো তখন একদল লোক হযরত
আব্দুল্লাহু ইবনে জা’ফর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে সান্ত¡না
দেয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে গমন করলো। তাদের মধ্যে একজন কথার ফাঁকে হঠাৎ বলে ফেলল,
"হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার
কারণেই আজ আপনার উপর এই বিপদ।" নাঊযুবিল্লাহ। কথাটা শুনামাত্রই হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পায়ের সেন্ডেল খুললেন এবং সেটা ঐ ব্যক্তির দিকে
ছুঁড়ে মেরে বললেন, কমবখত্!
তুমি এমন কথাও বলতে পারলে! অথচ আমি নিজেই যদি সেখানে থাকতাম তবে আমার জীবনও হযরত
ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার জন্য কুরবান করে দিতাম। আল্লাহ তায়ালার কসম! আজ
আমার বড় সান্ত¡না এই যে, আমি নিজে জীবন দিতে না পারলেও আমার
পুত্র দু’টি হযরত ইমাম হুসাইন
আলাইহিস সালাম উনার জন্য জীবন দিয়েছে। সুবহানাল্লাহ।
ইবনে আছীর প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ বর্ণনা করেছেন যে, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাতের পর
প্রায় তিন মাস প্রকৃতিতে এক আজব অবস্থা বিরাজ করছিল। সূর্য যখন উদয় হতো এবং তার
রশ্মি দূরদূরান্তে লোকের ঘরের দেওয়ালে ও দরজার কপাটে ছড়িয়ে পড়তো তখন মনে হতো
যেন কেউ তাজা রক্ত দিয়ে ঐগুলো রঙ্গীন করে দিয়েছে।