মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদেরকে
যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে তোমরা খরচ করো।’
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন,‘সখী বা দানশীল হচ্ছে ‘হাবীবুল্লাহ’।’
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে
আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে যে ব্যক্তি
এক দিরহাম খরচ করবে সে ‘ছিদ্দীকে আকবর’ উনার সাথে
জান্নাতে থাকবে, বদর ও হুনাইন যুদ্ধে শরীক থাকার ফযীলত পাবে, উহুদ পাহাড়
পরিমাণ স্বর্ণ দান করার ফযীলত লাভ করবে।
তাই সকলের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ
উপলক্ষে সাধ্য সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করা বা খিদমতের আঞ্জাম দেয়া।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও
মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম,
আওলাদে
রসূল, সাইয়্যিদুনা
ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
সাধারণভাবে
দান করার ফযীলত সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “যে একটি নেকী
করবে তাকে এর বিনিময়ে কমপক্ষে দশটি ছওয়াব দেয়া হবে।”(সূরা আনয়াম :আয়াত শরীফ ১৬০) অর্থাৎ আমভাবে এক টাকা দান করলে দশ টাকা দান করার ফযীলত পাওয়া যায়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক
উনার রাস্তায় উনার জন্য খরচ করার ফযীলত সম্পর্কে তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
“মহান
আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করার মেছাল হচ্ছে- যেমন, একটি বীজ থেকে
সাতটি শীষযুক্ত গাছ উৎপন্ন হলো। প্রতিটি শীষে একশটি করে বীজ বা দানা উৎপন্ন হলো
অর্থাৎ সাতটি শীষে ৭০০টি বীজ বা দানা উৎপন্ন হলো, আল্লাহ পাক তিনি
যাকে ইচ্ছা এর চেয়ে বহুগুণ বেশী দিয়ে থাকেন। আল্লাহ পাক তিনি প্রশস্তকারী ও অধিক
জ্ঞানী।” (সূরা বাক্বারাহ-২৬১) এ আয়াত শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক
উনার রাস্তায় খরচ করার ফযীলত হচ্ছে, একে সাতশত গুন। তবে নিয়ত বা খুলূছিয়তের
কারণে কম বেশী হতে পারে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, প্রত্যেক
ঈমানদার বান্দা ও উম্মতের দায়িত্ব কর্তব্য হলো, আল্লাহ পাক
সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদেরকে সন্তুষ্ট ও মুহব্বত করা। এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- “যদি তারা মু’মিন হয়ে থাকে
তাহলে তারা যেনো আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে
সন্তুষ্ট করে। কেননা উনারাই সন্তুষ্টি পাওয়ার সমধিক হক্বদার।” (সূরা তওবা :
আয়াত শরীফ ৬২)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ
ইরশাদ হয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন- “তোমরা আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত হাছিল করার জন্য
আমাকে মুহব্বত করো।” (তিরমিযী, মিশকাত)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, উল্লেখিত আয়াত
শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানের
জন্য মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে
সন্তুষ্ট ও মুহব্বত করা ফরযে আইন। আরো প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক
উনাকে মুহব্বত করতে হলে ও সন্তুষ্ট করতে হলে প্রথমে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাকে সন্তুষ্ট করতে ও মুহব্বত করতে হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কিরূপ মুহব্বত করতে হবে সে
প্রসঙ্গে তিনি নিজেই ইরশাদ করেন-“তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে
না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্তুতি এবং সমস্ত মানুষ
অপেক্ষা আমাকে বেশি মুহব্বত না করবে। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, তার মাল ও জান
অপেক্ষা বেশি মুহব্বত না করবে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত) এ হাদীছ
শরীফ-এর বাস্তব প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুম উনাদের মধ্যে। উনারা উনাদের সবকিছু থেকে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বত করেছেন। উনার খিদমতে উনারা উনাদের সর্বস্ব
কুরবানী করে দিয়েছেন, একদিকে মাল আরেকদিকে জীবন উৎসর্গ করতে উনারা
কোনরূপ দ্বিধা করেননি। যার ফলে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা খুশী হয়ে উনাদের প্রতি সন্তুষ্টি ঘোষণা করেন।
সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের দানসমূহ ছিলো দ্বীন ইসলাম বা উম্মতের
কল্যাণ সাধনে। এখন উম্মতের উদ্দেশ্যে ব্যয় করলে যদি মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা এতো খুশি হয়ে থাকেন তাহলে আল্লাহ পাক উনার
যিনি হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য, উনার মীলাদ বা
বিলাদত শরীফ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ব্যয় করলে উনারা কত বেশি খুশি হবেন তা বলার অপেক্ষা
রাখে না। যেমন এ প্রসঙ্গে বুখারী, মিশকাত, মাছাহাবীহুস
সুন্নাহ ইত্যাদি হাদীছ শরীফ-এর কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, হযরত আবূ সায়ীদ
খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন- “আমার ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে তোমরা গাল-মন্দ, সমালোচনা বা
দোষারোপ করো না। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ আল্লাহ পাক উনার
রাস্তায় দান করো, তবুও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আমার
খিদমতে এক মুদ (১৪ ছটাক) বা অর্ধ মুদ (৭ ছটাক) গম হাদিয়া করে যে ফযীলত অর্জন
করেছেন তার সমপরিমাণ ফযীলত তোমরা অর্জন করতে পারবে না।” যেহেতু উনারা তা
হাদিয়া করেছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার মুহব্বতে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে হাদিয়া করে যে বেমেছাল
ফযীলত হাছিল করেছেন পরবর্তী উম্মত যদি সেই ফযীলতের অনুরূপ ফযীলত হাছিল করতে চায়
তাহলে তাদের কর্তব্য হলো- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ তথা ঈদে মীলাদুন নবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সর্বোচ্চ তাওফীক্ব বা
সাধ্য সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলত:সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে
মাত্র এক দিরহাম খরচ করার অর্থ হচ্ছে নিশ্চিতরূপে জান্নাত লাভ করা। সুবহনাল্লাহ! এ
প্রসঙ্গে বিশ্ব সমাদৃত ও সুপ্রসিদ্ধ মীলাদ শরীফ-এর কিতাব “আন নি’য়ামাতুল কুবরা
আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম”-এ বর্ণিত রয়েছে,
(হযরত
নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে শ্রেষ্ঠ মানুষ) হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদুন
নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে এক দিরহাম ব্যয় করবে,
সে
জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!
উক্ত কিতাবে আরো উল্লেখ আছে, আমীরুল মু’মিনীন হযরত
উছমান যুননূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি নবী
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উপলক্ষে খুশি হয়ে এক দিরহাম খরচ করলো, সে যেনো বদর ও
হুনাইন যুদ্ধে শরীক থাকলো।” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’য়ামাতুল কুবরা)