নোটিশ

বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১২

|| সাহরী, ইফতার ও নামাযের সময়সূচি প্রকাশ ও প্রচার করার সময় পূর্ণ সাবধানতা অবলম্বন করা ফরয-ওয়াজিব ||


মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে প্রমাণ উপস্থাপন করো।
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বা প্রচার করে বেড়ায়।
সাহরী, ইফতার ও নামাযের সময়সূচি প্রকাশ ও প্রচার করার সময় পূর্ণ সাবধানতা অবলম্বন করা ফরয-ওয়াজিব।
সাহরী ও ইফতারির সঠিক সময় জানতে গবেষণা কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফথেকে প্রকাশিত ক্যালেন্ডারটি সংগ্রহ ও অনুসরণ করুন।

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমাদের দেশের শাসকশ্রেণীর ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং উলামায়ে সূদের অপব্যাখ্যার কারণে দেশের সাধারণ মানুষ ইসলামের সঠিক শিক্ষা এবং তা পালন থেকে অনেক দূরে।
৯৭ ভাগ মুসলমানের এ দেশটিতে ইসলাম একটি আনুষ্ঠানিকতা সর্বস্ব বিষয় হিসেবে রূপ লাভ করেছে। শরীয়ত মুতাবিক পালিত না হয়ে অনেক বিষয় লৌকিকতা সর্বস্ব সংস্কৃতির মধ্যে প্রবেশ করেছে। সে কারণেই রমাদ্বান শরীফ-এর রোযার ফরয-ওয়াজিব ভুলে গিয়ে মানুষ ইফতার পার্টির আনন্দে মেতে উঠে। ইফতারের আয়োজনে নারী-পুরুষের সমাগম হয় পর্দার গুরুত্ব উপেক্ষা করে। দোয়া কবুলের ঈদের রাতটিকে ভুলে গিয়ে মানুষ শরীয়ত বর্হিভূত আনন্দ আর বেহায়াপনায় মেতে উঠে। নাউযুবিল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, রোযার পূর্বেই শুরু হয় পত্রিকাগুলোতে ঈদ ফ্যাশনের কাভারেজ। অসংখ্য অশ্লীল ছবিতে ভরে যেতে থাকে পত্রিকাগুলো। মিডিয়াগুলো ব্যস্ত হয়ে উঠে খেল-তামাশা প্রচারে। রমাদ্বানের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে (অনেকটা বাণিজ্যিক কারণে) পত্রিকাগুলো সৌজন্যমূলক রমাদ্বানের শুভেচ্ছা জানায় আর প্রকাশ করে সাহরী-ইফতারের একটি সময়সূচি। সাহরী-ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করতে গিয়ে পত্রিকাগুলো ধর্মীয় দায়িত্ববোধের চেয়ে লৌকিকতা সর্বস্ব সাংস্কৃতিক দায়িত্ববোধ দ্বারা বেশি তাড়িত থাকে। ফলে তাদের প্রকাশিত সময়সূচি অনুসরণ করে রোযাদারের রোযা হবে কি হবে না সে ব্যাপারে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আরও একটি কারণ হলো- তারা তথ্য সূত্রে কোনোভাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নাম যোগ করতে পারলেই ভাবে সব দায়িত্ব শেষ। অথচ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নামাযের সয়মসূচিও কিন্তু ত্রুটিমুক্ত নয়। আর ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)র নামাযের সময়সূচি ছাড়া অন্যান্য তথ্য সূত্র থেকে যারা সাহরী-ইফতারের সময়সূচি তৈরি করেন তাদের আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, অনেক ক্যালেন্ডারেই কয়েকটি জেলার সময়সূচির পার্থক্য ঢাকার সঙ্গে যতটুকু হওয়া উচিত তার চেয়ে ভিন্নভাবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। আবার অনেক দৈনিক পত্রিকায় যে সময়সূচি প্রকাশ করা হয়ে থাকে তার একটির সঙ্গে অন্যটির কোনো মিল থাকে না।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এছাড়াও কয়েকটি তথাকথিত মাদরাসা থেকে প্রকাশিত সাহরী ও ইফতারের সময়সূচিতে বড় রকমের ভুল পরিলক্ষিত হয়। উলামায়ে সূদের অজ্ঞতার কারণে মাছি মারা কেরানীর মতো অন্ধ অনুকরণ করতে গিয়ে এ ভুলের জন্ম দিয়ে থাকে। এর মধ্যে নানান একাডেমী এবং নানান কমিটির প্রকাশিত সময়সূচি উল্লেখযোগ্য।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আজকাল যদিও বিভিন্ন কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে নামাযের সময়সূচি নির্ণয় করা যায় তথাপি সফটওয়্যারের সময়সূচি নির্ধারণেও অনেকগুলো বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখতে হয়। যেমন- ১। প্রভাত এবং সন্ধ্যার আলোর যথাক্রমে শুরু এবং শেষ (Twilight angle of sunrise and sunset) ২। ঐ স্থানের সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা। ৩। ঐ স্থানের কেন্দ্র থেকে কতটা দূরত্বের সময়সুচি নির্ণয় করতে হবে। ৪। কোন মাযহাব অনুযায়ী নির্ণয় করতে হবে। ৫। সূর্যাস্তের (Apparent sunset) সময়ের সাথে সতর্কতামূলক সময় যোগ। ৬। অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশের সঠিক ব্যবহার ইত্যাদি।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, উপরের বিষয়গুলোর জন্য সঠিক মান ব্যবহৃত না হলে সময়সূচিতে ভুল হয়ে যাবে। এছাড়াও মনে রাখা প্রয়োজন, সূর্যের চতুর্দিকে পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে সারা বছরের বিভিন্ন মাসেই ঢাকার সাথে অন্যান্য জেলার সময়ের কিছু পার্থক্য ঘটে। প্রতিমাসের জন্য এই পার্থক্য এক রকম নয়। সুতরাং, এ বছর যেহেতু জুলাই মাসে রমাদ্বান শরীফ শুরু হবে সুতরাং জুলাই মাসের সময়ের পার্থক্যের মধ্য থেকে দুটো মান নির্ধারণ করতে হয়, একটি সাহরীর সর্বনিম্ন পার্থক্যের মান আর ইফতারের জন্য সর্বোচ্চ পার্থক্যের মান। সাবধানতার জন্য ঢাকার সাহরীর সময়ের সাথে সর্বনিম্ন পার্থক্যের মান যোগ করে অন্য জেলার সাহরীর সময় নির্ধারণ করতে হয় আর ইফতারের সময়ের জন্য ঢাকার ইফতারের সময়ের সাথে সর্বোচ্চ পার্থক্যের মান যোগ করে অন্য জেলার ইফতারের সময়সূচি নির্ণয় করতে হয়। আর যে সকল জেলার সময় নির্ধারণে ঢাকার সময় থেকে বিয়োগ দিতে হয় সেখানে বিপরীত ব্যবস্থা নেয়া হয়।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, কোনো পত্রিকা বা মাদরাসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামাযের এবং সাহরী ও ইফতারের সময়সূচিতে এ সাবধানতা অবলম্বন করা হয় না। ফলে, বিভিন্ন সময়সূচিতে বিভিন্ন রকম সময়ের উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, যাদের হাতের কাছে যে সময়সূচি পাওয়া যায় তারই কপি করে প্রকাশ করে। ফলে যেখানে যা ভুল থাকে তারই পুনঃমুদ্রণ ঘটে। অথচ ফরয আমলের বিষয় সম্পর্কে ইলম হাছিল করাও ফরয। সুতরাং এ বিষয়টি প্রকাশনার সময় যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। একটি জেলার জন্য যদি কয়েকটি ক্যালেন্ডারে কয়েক রকমের সময়ের পার্থক্য পাওয়া যায় তাহলে সাধারণ মানুষ কোনটি অনুসরণ করবে। সমূহ পত্রিকা এবং মাদরাসা প্রতিষ্ঠান যারাই নামাযের সময়সূচি বা সাহরী ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করুক তাদের উচিত হবে এ বিষয়ে যাঁরা অভিজ্ঞ উনাদের স্মরণাপন্ন হওয়া। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য সূত্র ব্যবহার করে পার পাওয়া যাবে না; যেহেতু ইসলামিক ফাউন্ডেশন নিজেই ত্রুটিযুক্ত।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নামাযের সময়সূচি বা ইফতারের সঠিক সময়সূচি নিরূপণ করাটা কঠিন। কিন্তু যতটা সম্ভব সঠিক করার চেষ্টা করতে হবে। অতঃপর অনিচ্ছায় ভুল হলে মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমা করবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্তরের খবর রাখেন। কিন্তু যারা লোক দেখানো ইসলামের সেবা করে তাদের দ্বারা এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা বৃথা।

মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সকলকে গবেষণা কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফথেকে প্রকাশিত সাহরী ও ইফতারীর নির্ভুল সময়সূচি সম্বলিত ক্যালেন্ডারটি সংরক্ষণ ও অনুসরণ করার তাগিদ দেন।