মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ
মুবারক করেন, ‘হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া
হযরত উম্মুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম!
আপনারা কোনো মহিলার মতো নন।’ (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)
হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাই যদি অন্য কোনো মহিলার মতো না
হন, তাহলে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অন্য পুরুষের মতো হন কিভাবে?
মূলত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্য মানুষের মতো মনে করা সুস্পষ্ট
কুফরী যা কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা
আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার বহু পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের দ্বারা
প্রমাণিত যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কাফির-মুশরিকরাই কেবল তাদের মতো মানুষ
বলে মনে করতো।
যেমন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ক্বওম এবং আদ ও ছামূদ গোত্রের লোকেরা
হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারক সম্পর্কে বেআদবী করতে গিয়ে বলেছিলো, “আপনারা তো আমাদের মতোই বাশার
তথা মানুষ।” (পবিত্র সূরা ইব্রাহীম শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে
কাফির-মুশরিকরা বলেছিলো, ‘ইনি তো তোমাদের মতো বাশার তথা মানুষ ব্যতীত কেউ নন।’ (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ
: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্পর্কে কাফির-মুশরিকরা আরো বলতো যে, ইনি কেমন রসূল, যিনি খাদ্য খান এবং বাজারে যান?” (পবিত্র সূরা ফুরকান শরীফ
: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, উল্লিখিত পবিত্র আয়াতে কারীমা উনার দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম
উনাদেরকে নিজের মতো মানুষ বলা কাফির-মুশরিকদের অন্যতম একটি স্বভাব।
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, মূলত কাদিয়ানীরা যেমন ‘খাতামুন্ নাবিয়্যীন’ শব্দ মুবারক উনার মনগড়া অর্থ ও ব্যাখ্যা করে খতমে নুবুওওয়াতকে
অস্বীকার করে থাকে। তদ্রুপ বাতিল আক্বীদা ও ফিরক্বার লোকের পবিত্র কালাম শরীফ উনার
পবিত্র সূরা হামীম সাজদা উনার পবিত্র আয়াত শরীফ- قل انـما انا بشر مثلكم يوحى الى উনার মনগড়া অর্থ ও ব্যাখ্যা করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তাদের মতো মানুষ বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার সঠিক অর্থ ও মর্ম হলো, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি ওই মুশরিকদের বলে দিন যে, আমি তোমাদের মেছাল (মত) একজন মানুষ,
(হাক্বীক্বত আমি একজন রসূল; যার কারণে) আমার নিকট ওহী
মুবারক এসে থাকে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্য মানুষের মতো বলা হয়নি। কারণ উক্ত পবিত্র
আয়াত শরীফ উনার মধ্যেই يوحى الى অর্থাৎ ‘আমার নিকট ওহী মুবারক এসে থাকে’ এ বাক্যটি উনাকে সকল মানুষ থেকে আলাদা করে দিয়েছে। যেহেতু অন্যান্য
মানুষের নিকট ওহী মুবারক আসে না। এর বহু উদাহরণের মধ্যে একটি উদাহরণ হচ্ছে حيوان (হায়ওয়ান) শব্দটি। যেমন ‘হায়ওয়ান’ বা প্রাণী বলতে মানুষকেও বুঝায় এবং অন্যান্য জীব-জন্তুকেও বুঝায়।
তবে কি কেউ একথা বলবে যে, গরু-ছাগল, ঘোড়া-গাধা ইত্যাদিও মানুষের মতো ‘হায়ওয়ান’। নাউযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, মূলত মানুষ হায়ওয়ান বটে কিন্তু গরু-ছাগল, ঘোড়া-গাধা প্রভৃতি হায়ওয়ানের মতো নয়। কেননা মানুষ হলো ‘হায়ওয়ানে নাতিক্ব’
অর্থাৎ বাকশক্তিসম্পন্ন জীব। অর্থাৎ মানুষ বিবেক, জ্ঞান ও বাক শক্তির অধিকারী।
যেরূপ এ নাতিক্ব বা ‘বাকশক্তি সম্পন্ন’ শব্দটি মানুষকে অন্যান্য জীব-জন্তু হতে পৃথক করে দিয়েছে তদ্রুপ يوحى الى অর্থাৎ ‘আমার নিকট ওহী মুবারক এসে থাকে’ পবিত্র বাক্যখানা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাধারণ মানুষ থেকে পৃথক করে দিয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ উনার ১৭ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক
তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মানব আকৃতি ধারণ করার কথা উল্লেখ করেছেন। এই পবিত্র
আয়াত শরীফ উনার মধ্যেও হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার ক্ষেত্রে ‘বাশার’ বা মানুষ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এখন বাশার ছিফতের অধিকারী
হওয়ার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
যারা তাদের মতো মানুষ বলছে, তারা তাহলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে তাদের মতো মানুষ
বলছে না কেন?
মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম তিনি বলেন, মূলত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
অন্য মানুষের মতো মনে করা সুস্পষ্ট কুফরী যা কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।