পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র
সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ১০৫নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
‘মহান আল্লাহ পাক তিনি আপন রহমত দ্বারা যাকে ইচ্ছা
উনাকে খাছ করে নেন।’
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
বর্ণনা মুতাবিক বিনতু রসূলিল্লাহ, শাবীহাতু রসূলিল্লাহ,
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস
সালাম উনার মর্যাদা-মর্তবা, শান-শুয়ূনাত এবং খুছূছিয়াত
মুবারক বর্ণনা করার ভাষা মানুষের জানা নেই।
কারণ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে খাছ এবং মনোনীত বান্দা-বান্দী
উনাদের অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, উনাদের প্রতি মুহব্বত ও সুধারণা রাখা পবিত্র ঈমান উনার শর্ত
এবং নাজাত ও সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের কারণ।
যামানার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ,
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম
তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল
জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বেমেছাল মর্যাদা ও খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য
মুবারক উনার অধিকারিণী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ
উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুনাওওয়ার, নূরে মাআযযাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিনি
হলেন সমস্ত সৌন্দর্যের মূল; যিনি আজমালুল কায়িনাত।
উনারই পবিত্র নূরানী দেহ মুবারক উনার অংশ মুবারক হচ্ছেন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস
সালাম।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ
উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘নুজাহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
একবার কিছু ইহুদী মহিলা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মুবারক খিদমতে হাযির হয়ে আরজি পেশ করলো যে, তাদের এক ধনাঢ্য ইহুদীর মেয়ের বিবাহের অনুষ্ঠানে তিনি যেন সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যাওয়ার অনুমতি দান
করেন। যে অনুষ্ঠানটি শুধু মহিলাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইহুদী মহিলাদের আরজি কবুল করলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ
উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, দাওয়াত দানকারিণী ইহুদী মহিলাদের উদ্দেশ্য ভালো ছিল না। তাদের
উদ্দেশ্য ছিলো ইহুদী মহিলারা নামি দামি পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে এবং হীরা-মণি,
মুক্তা ও স্বর্ণালঙ্কারে সুসজ্জিত হয়ে অনুষ্ঠানে
যাবে। আর তাদের ধারণা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো তাদের মতো অতো সাজসজ্জ্বা করে
মজলিছে আসবে না। কারণ, তিনি দুনিয়াবী এ সমস্ত
দ্রব্যসামগ্রী পছন্দ করেন না। যার ফলে উনার কাছে তারা তাদের বড়ত্ব, মহত্ব প্রকাশ করে উনাকে উপহাস করার চেষ্টা করবে। নাঊযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ
উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইহুদী মহিলাদের এই কূট চক্রান্ত কেউ না জানলেও যিনি খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক এবং উনার যিনি রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তো ঠিকই জানেন। ফলে
বিবাহ অনুষ্ঠানের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস
সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কারাদি পাঠালেন নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার কাছে। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ
পাক তিনি এই পোশাক ও অলঙ্কার আপনার মেয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন
এবং আরো বলেছেন, তিনি যেন এগুলো পরিধান করে
ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে যান। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ
উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সত্যিই বেহেশতী পোশাক ও অলঙ্কারসমূহ পরিধান করে যথাসময়ে হযরত
যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ইহুদী মহিলাদের অনুষ্ঠানে গেলেন। তিনি যখন উনার বেমেছাল শান
ও সৌন্দর্য নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে তাশরীফ নিলেন তখন গায়েব থেকে নেদা (আওয়াজ) হলো এবং উপস্থিত
সকলে তা শুনতে পেলো যে, ‘হে উপস্থিত মহিলাবর্গ!
তোমরা সকলে হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে সাদর সম্ভাষণ
জানাও।’ সাথে সাথে উপস্থিত মহিলাগণ
সবাই উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে মুবারকবাদ জানালো। আর ইহুদী মহিলারা দেখতে পেলো হযরত
যাহরা আলাইহাস সালাম উনার চেহারা মুবারক হতে নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হচ্ছে এবং উনার অসাধারণ
পোশাক ও অলঙ্কার দেখে তারা হতভম্ব হয়ে গেলো এবং উনার পোশাকের সামনে তাদের পোশাক নিতান্তই
নগন্য মনে হলো। শুধু তাই নয়, ওই বেহেশতী পোশাক
মুবারক হতে সুগন্ধী মুবারক বের হয়ে অনুষ্ঠানের চতুর্দিকে সুভাষিত হয়ে অপূর্ব ঘ্রাণের
সৃষ্টি করলো। আর তারা সবাই বলতে লাগলো, এ সুগন্ধী কোথা থেকে আসছে, যে সুগন্ধী মুবারক
উনার সুভাষে তারা বিমোহিত হচ্ছে! যার ফলে বিবাহ অনুষ্ঠানের চেয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস
সালাম উনার পোশাকের আকর্ষণ এবং সুগন্ধী মুবারক উনার সুঘ্রাণ মুবারক চতুর্দিকে আলোড়ন
সৃষ্টি করলো। এতে সবাই বিবাহের আনন্দ আমেজ থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার দিকে অনুপ্রাণিত হলো।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ
উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, অবশেষে ইহুদী মহিলারা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার অপরূপ সৌন্দর্য
মুবারক, পোশাকের স্বকীয়তা ও সুগন্ধী
মুবারক উনার সুভাষে বিমোহিত হয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগলো, হে নবী নন্দিণী হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম! আপনি এ নয়নাভিরাম
রাজকীয় পোশাক ও অলঙ্কার মুবারক কোথায় পেয়েছেন? তিনি বললেন, আমার আব্বাজান,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
আমাকে হাদিয়া করেছেন। তারা পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, আপনার আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এগুলো কোথায়
পেয়েছেন? তিনি বললেন, আমার আব্বাজান, ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক
তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বেহেশত থেকে হাদিয়া পাঠিয়েছেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ
উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এ উত্তর শুনে দাওয়াত দানকারিণী ইহুদী মহিলাসহ উপস্থিত সকলেই
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং পবিত্র কলেমা শরীফ পাঠ
করে মুসলমান হয়ে গেলেন। আর ওই সমস্ত মহিলাদের মধ্যে যাদের স্বামী ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন
উনারা উনাদের কাছে থেকে গেলেন আর যাদের স্বামী ইসলাম গ্রহণ করেনি উনারা তাদেরকে ছেড়ে
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে পছন্দ অনুযায়ী স্বামীরূপে
বরণ করে নিলেন। সুবহানাল্লাহ!