মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ উনার ১২৮নং পবিত্র
আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, ‘এ বিষয়ে আপনার
(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর কোনো কিছু করার প্রয়োজন নেই’
এই
পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে কুনূতে নাযেলা পড়ার বিষয়টি মানসূখ বা রহিত করে
দিয়েছেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি কুনূতে নাযেলা পাঠ করতে নিষেধ করেছেন।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার দ্বারা মানসূখ বা রহিতকরণ এবং পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার দ্বারা নিষেধকরণের প্রেক্ষিতে সম্মানিত হানাফী মাযহাবে কুনূতে নাযেলা
পড়া জায়িয নেই তাই হারাম বলে ফতওয়া দেয়া হয়েছে।
এরপরও দেখা যায়- কিছু মুফতী, মুহাদ্দিছ,
মুফাসসির,
ছূফী,
দরবেশ,
ওয়ায়িজ,
খতীব
নামধারী জাহিল গণ্ডমূর্খের দল তারা কুনূতে নাযেলা পড়ার জন্য নির্দেশ দিয়ে থাকে।
অথচ সম্মানিত হানাফী মাযহাব মুতাবেক ছহীহ ফতওয়া হচ্ছে, কেউ যদি কুনূতে
নাযেলা ভুলে হোক, জেনে হোক অথবা না জেনে হোক পাঠ করে, তাহলে তার নামায
ফাসিদ (ভঙ্গ) হয়ে যাবে। তাকে পুনরায় নামায দোহরিয়ে আদায় করতে হবে। অন্যথায় সে
নামায তরকের কারণে কবীরা ও কুফরী গুনাহে গুনাহগার হবে।
আর যাদের ফতওয়ার কারণে মুছল্লীগণের নামায বাতিল হবে তার সমুদয় গুনাহর
দায়-দায়িত্ব সেসব জাহিল ও গুমরাহ্ ফতওয়াদাতার উপরই বর্তাবে।
যামানার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও
মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম,
মুজাদ্দিদে
আ’যম,
আওলাদুর
রসূল, সাইয়্যিদুনা
ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
যুদ্ধ-বিগ্রহ
হোক, বালা-মুছীবতের
কারণে হোক অথবা অন্য কোনো কারণে হোক বর্তমানে কুনূতে নাযেল পাঠ করা জায়িয নেই।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, প্রায় ৭০ জন
ক্বারী ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে কাফিরেরা নির্মমভাবে শহীদ করার
কারণে কাফিরদের প্রতি বদ দোয়ার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফজরের নামাযে দীর্ঘ এক মাস যে কুনূত পাঠ
করেছিলেন সেটাই কুনূতে নাযেলা হিসেবে পরিচিত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক
তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ উনার ১২৮নং পবিত্র আয়াত
শরীফ- “এ
বিষয়ে আপনার আর কোনো কিছু করার প্রয়োজন নেই” নাযিল করে
কুনূতে নাযেলার আমলকে মানসূখ করে দেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক
তিনি কুনূতে নাযেলা মানসূখ বা রহিত করে দেয়ার কারণে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা পাঠ ছেড়ে দেন বা
পরিহার করেন। শুধু তাই নয়, বরং তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সরাসরি কুনূতে নাযেলা পাঠ করতে নিষেধ করেন। যেমন ছহীহ ইবেন
মাজাহ শরীফ ৮৯নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
উম্মুল
মু’মিনীন
হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফজর নামাযে কুনূতে
নাযেলা পাঠ করতে নিষেধ করেছেন।
অনুরূপভাবে ফতহুর রব্বানী ৩য় খণ্ড ২১০ পৃষ্ঠায়, আল আইনী ২য় খণ্ড
৫৯৩ প্ষ্ঠৃায়, তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ,
বযলুল
মাযহূদ, আল হিদায়া, শরহুন নিকায়াহ ইত্যাদি কিতাবসমূহে ফজরের নামাযে
কুনূতে নাযেলা পাঠ নিষেধ সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত খুলাফায়ে
রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনারা যতদিন হায়াত মুবারক-এ ছিলেন উনারা কেউই কোনোদিন ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা
পাঠ করেননি। বরং উনারা ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা বিদআত তথা বিদআতে
সাইয়্যিয়াহ মনে করতেন।
এ প্রসঙ্গে শরহুয যারকানী কিতাবের ১০ম খণ্ড ৪১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
হযরত
সাঈদ ইবনে জুবাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য
দিচ্ছি যে, অবশ্যই আমি শুনেছি, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নিশ্চয়ই ফজর নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা
বিদআত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সম্মানিত হানাফী
মাযহাব উনার অনুসারী কোনো ইমাম ও মুক্তাদির জন্য ফজরের নামায উনার মধ্যে কুনুতে
নাযেলা পাঠ করা জায়িয নেই। এরপরও কেউ যদি কুনূতে নাযেলা ভুলে হোক, জেনে হোক অথবা
না জেনে হোক পাঠ করে, তাহলে তার নামায ফাসিদ (ভঙ্গ) হয়ে যাবে। তাকে
পুনরায় নামায দোহরিয়ে আদায় করতে হবে। অন্যথায় সে নামায তরকের কারণে কবীরা ও কুফরী
গুনাহে গুনাহগার হবে। আর যাদের ফতওয়ার কারণে মুছল্লীগণের নামায বাতিল হবে তার
সমুদয় গুনাহর দায়-দায়িত্ব সেসব জাহিল ও গুমরাহ ফতওয়াদাতার উপরই বর্তাবে।