নোটিশ

ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়ে যুক্তিহীন বিতর্কে‌র অবসান


আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মহান আল্লাহ তায়ালা রব্বুল আ’লামীন ও উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দয়া-ইহসান, ক্ষমা-করুনা কামনা করছি।

সাইয়্যিদুল আইয়াদসাইয়্যিদে ঈদে আযমসাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুত্তাকী, পরহেযগার মুসলিম ভাই-বোনেরা এই পবিত্র দিনটিকে অত্যন্ত সম্মান করে থাকেন, তা'যীম-তাকরীম করে থাকেন। আবার অনেক ফিরকার লোকেরা এই পবিত্র দিন পালনের বিরোধিতা করে থাকে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কোন দিকে যাবেন? এ প্রশ্নের সমাধান পেতে হলে আপনাকে নিম্নোক্ত প্রশ্নসমূহের উত্তর যথাযথভাবে জানতে হবেঃ

  • সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে কি বুঝায়?
  • মীলাদ শরীফ কি? মীলাদ শরীফ ও ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে কি সম্পর্ক?
  • ইসলামী শরীয়তে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়াও আরো কি ঈদ রয়েছে?
  • সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা কি কুরআন শরীফ, হাদিছ শরীফে আছে কিনা? অথবা এই ঈদের ভিত্তি কি?
  • এই ঈদ কি সাহাবী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম বা খইরুল কুরুনের ইমাম-মুজতাহিদগণ উনারা পালন করেছেন কিনা?
  • মীলাদ শরীফ বা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে পালন করা হয়? বর্তমানে যেভাবে পালন করা হয়, সেভাবে কি পূর্ব থেকেই চালু ছিল? কবে থেকে এভাবে চালু হয়?
  • পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেন সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ বা শ্রেষ্ঠ ঈদ?
  • একই দিনে বিলাদত শরীফ ও ওফাত হলে শোক পালন না করে কি ঈদ পালন করা যায়?
  • পবিত্র ১২ রবীউল শরীফে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবর্তে কেন সীরাতুন্নবী পালন করা যাবে না?
  • সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ নিয়ে কি কোন সন্দেহ আছে? আর সঠিক দিবস নিয়ে সন্দেহ হেতু কি পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা অনুচিত হবে?
  • পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবীছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি ঈদ হতো এবং সকল ঈদের সেরা ঈদ হতো, তবে কি এখানে ছলাত খুতবা থাকার কথা ছিল না?
  • সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের রীতি কি খ্রিস্টান বা অমুসলিমদের কাছ থেকে এসেছে?
  • যদি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের জন্মবার্ষিকী পালনের দ্বার উমুক্ত করে, তাহলে কি সারা বৎসর বার্ষিকী পালন ব্যতীত অন্য কোন কাজের জন্য এক মুহূর্তও সুযোগ পাওয়া যাবে?
  • পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শরীয়তে কি ফযীলতপূর্ণ‌ বিশেষ দিবস ও বার্ষিকী পালনের প্রথা নিষিদ্ধ?
  • পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনকারী ইরাকের ইরবাল শহরের বাদশাহ মুজাফফর আবূ সাঈদ ছিলেন কি মূর্খ বা যিন্দিক ছিলেন?
  • ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু উপলক্ষে কি কি করা নাজায়িজ?
  • বর্তমানে কোন ফিরকা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের বিরোধিতা করছে-প্রমাণসহ? তারা কি কি পদ্ধতিতে বিরোধিতা করে থাকে?
  • কেন এই ঈদের বিরুদ্ধে অনেকে বলে থাকে?
  • পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবে থেকে পালিত হচ্ছে? অনেকে বলে, ৬০০ হিজরির পূর্বে এই ঈদ পালিত হত না-কথা কি সত্য?
  • অনেকে মীলাদ শরীফ বা সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাকে বিদয়াত বলে- কেন তারা বলে? তাদের দাবী কি সত্য? তারা কি ঈদ পালন করাকে বিদয়াত বলে, নাকি ঈদ পালনের পদ্ধতিকে বিদয়াত বলে?
  • ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি শুধু একদিন পালন করার দিন?
  • ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খরচ করা, মাহফিল করা, মানুষকে খাওয়ানো, রোযা রাখা বা অন্য কোন নেক কাজ বিশেষভাবে করা কি জায়িজ?
  • মীলাদ শরীফ কেন পড়া হয় বা ফযীলত কি?
  • মীলাদ শরীফ না পড়লে কি ক্ষতি?
  • মীলাদ শরীফকে অনেকে কেন বিদয়াত বলে? এটা কি আসলেই বিদয়াত?
  • মীলাদ শরীফে দাঁড়িয়ে সালাম কেন দেওয়া হয়?
  • প্রাণপ্রিয় নবীজি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি প্রকাশ করলে সেটা কি নামায, রোযা, হজ্জ অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ আমল?
  • একটি নির্দিষ্ট দিন পালন করার কিইবা গুরুত্ব রয়েছে? এ ব্যাপারে কোন নির্দেশ রয়েছে কি?
  • দলীল আদিল্লার ভিত্তিতে নয়, যুক্তির আলোকে বলুন, কেন রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ পালন করব?
  • সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাকি লাহাবী উৎসব?
  • সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করলে কি জান্নাত ওয়াজিব হবে? যদি পরবর্তীতে কুফরী করে কেউ মারা যায়, তবে কি ফায়সালা হবে?


তাহলে আসুন একটা একটা করে উত্তর খোজার চেষ্টা করি।


r  সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে কি বুঝায়?

জবাবঃ

মূলত ঈদঅর্থ হচ্ছে খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা। আর মীলাদনবীদুটি শব্দ একত্রে মিলে মীলাদুন নবীবলা হয়। মীলাদ’-এর তিনটি শব্দ রয়েছে- ميلادমীলাদ, مولد মাওলিদ ও مولود মাওলূদ। ميلادমীলাদঅর্থ জন্মের সময়, مولدমাওলিদঅর্থ জন্মের স্থান, مولودমাওলূদঅর্থ সদ্যপ্রসূত সন্তান। আর النبىনবীশব্দ দ্বারা নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

অর্থাৎ আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থে ميلاد النبىমীলাদুন নবীবলতে নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার বিলাদত শরীফকে বুঝানো হয়ে থাকে। আর পারিভাষিক বা ব্যবহারিক অর্থে ميلاد النبىমীলাদুন নবীবলতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে উনার ছানা-ছিফত বর্ণনা করা, উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা, উনার পুতঃপবিত্র জীবনী মুবারকের সামগ্রীক বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করাকে বুঝানো হয়।

আর সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে প্রাণপ্রিয় নবীজি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার জন্য খুশি প্রকাশ করা, শুকরিয়া আদায় করাকে বোঝায়। এখন এ খুশি প্রকাশ করা বিভিন্ন রকম হতে পারে। যে কোন নেক আমলের মাধ্যমেই এ খুশি প্রকাশ করা যেতে পারে। তবে সবচেয়ে উত্তম হল- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শান মুবারকে ছলাত শরীফ, সালাম শরীফ পেশ করা, মীলাদ শরীফ পাঠ করা।


r  মীলাদ শরীফ কি? মীলাদ শরীফ ও ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে কি সম্পর্ক?
জবাবঃ
স্মরণীয় যে, মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সংক্ষেপে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নার ছানা-ছিফত ও বিলাদত শরীফ সম্পর্কে আলোচনা করা এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা।

এক কথায় মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ বলতে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত ও আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত, তারীফ, প্রশংসা, উনার মুজিযা বর্ণনা, বিলাদত শরীফ-এর আলোচনা, না, শে, কাছীদা শরীফ পাঠ ও উনার প্রতি ছলাত ও সালাম প্রেরণ করা ইত্যাদি পাঠ করা হয়। যেমন-
১) মীলাদ শরীফ-এর প্রথমেই কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়।
২) অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ছলাত পাঠ করা হয়। কারণ ছলাত পাঠ করা আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদেরই নির্দেশ।
৩) অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করা হয়।

মূলত মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করার জন্যই মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয়।


r  ইসলামী শরীয়তে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়াও আরো কি ঈদ রয়েছে?

জবাবঃ

অনেক ব্যক্তি অজ্ঞতার কারণে ভাবে যে, ইসলামী শরীয়তে বুঝি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়া অপর কোন ঈদ নেই। কিন্ত এটা ভুল ধারণা। কেননা শরীয়তে  জুমুয়া, আরাফাসহ অনেক দিনকেই ঈদ ঘোষণা করা হয়েছে।
এখানে ঈদ শব্দের অর্থ যে খুশি, এটা স্মরণে রাখতে হবে।



r  সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা কি কুরআন শরীফ, হাদিছ শরীফে আছে কিনা? অথবা এই ঈদের ভিত্তি কি?

জবাবঃ

সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ভিত্তি কোন ব্যক্তি নয়, বরং স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ ফরমান-
قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا هو خير مما يجمعون .
অর্র্থ: হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় অনুগ্রহ ও রহমত (উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনাকে পাঠিয়েছেন, সে কারণে তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা সেসবকিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” (সূরা ইউনুস : আয়াত শরীফ ৫৮)

আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে রহমাতুল্লিল আ’লামীন সেটা মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি নিজেই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাঝে ঘোষণা করে দিয়েছেন (সুবহানাল্লাহ)
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ [٢١:١٠٧]
অর্থাৎ, আমি আপনাকে সারা পৃথিবীর রহমত হিসেবে প্রেরণ করছি।' (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ১০৭)

তাই মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা ফরয-ওয়াজিব।

এখন সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে প্রকাশের বিভিন্ন শরীয়ত সম্মত পন্থা ইমাম-মুজতাহিদগণ হাদিয়া করেছেন। যেমনঃ ১৫শ হিজরীর সম্মানিত মুজাদ্দিদ, আস-সাফফাহ হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপলক্ষে কুল-কায়িনাতকে বিভিন্ন নেক বিষয়ের উপর প্রতিযোগিতা শরীফ, ওয়াজ শরীফ, সামা শরীফ, দোয়া-মুনাজাত শরীফ ও পবিত্র মাহফিল হাদিয়া করেছেন এবং সারা বছরব্যাপী মীলাদ শরীফ জারী রেখেছেন (সুবহানাল্লাহ)।


r  এই ঈদ কি সাহাবী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম বা খইরুল কুরুনের ইমাম-মুজতাহিদগণ উনারা পালন করেছেন কিনা?

জবাবঃ

খইরুল কুরুন হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ছাহাবী, তাবিয়ী ও তাবিতাবিয়ীনগণের যুগ। উক্ত তিন যুগের প্রথম যুগই হচ্ছে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের যুগ এবং সে যুগেই ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউদযাপিত হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা তাঁর নিজ গৃহে সমবেত ছাহাবীগণকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশী প্রকাশ করেছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর প্রশংসা তথা তাছবীহ তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর (ছলাত-সালাম) দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপসি'ত হলেন। (তিনি যখন উপসি'ত হলেন, সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে অর্থাৎ ক্বিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন) তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব। (সুবুলুল হুদা ফি মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী, পৃষ্ঠা ৩৫৫)


খলীফাতু রসুলিল্লাহ হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মীলাদ শরীফ পাঠ (মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপলক্ষ্যে এক দিরহাম ব্যয় করবে সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নিমাতুল কুবরা)



r  মীলাদ শরীফ বা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে পালন করা হয়? বর্তমানে যেভাবে পালন করা হয়, সেভাবে কি খইরল কুরুন থেকেই চালু ছিল? কবে থেকে এভাবে চালু হয়?

জবাবঃ

বলাই বাহুল্য যে, খালিক্ব, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেন।


উল্লেখ্য, কোন আমল খইরুল কুরুনের মধ্যে না থাকলে যে তা পরিত্যাজ্য হবে এ কথা সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ ও কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ। বরং কোন আমল গ্রহণীয় কিংবা বর্জনীয় হওয়ার জন্য খইরুল কুরুন শর্ত নয়। শর্ত হচ্ছে সে আমল কুরআন-সুন্নাহ সম্মত কি না? যদি কুরআন-সুন্নাহ সম্মত হয় তাহলে তা গ্রহণীয়। আর যদি কুরআন-সুন্নাহ সম্মত না হয় তবে তা বর্জনীয় বা পরিত্যাজ্য।
যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-
عن جرير رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من سن فى الاسلام سنة حسنة فله اجرها واجر من عمل بها من بعده من غيره ان ينقص من اجرهم شىء .

অথ: হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলামে কোন উত্তম বিষয় বা আমলের প্রচলন করলো, তার জন্য প্রতিদান বা ছওয়াব রয়েছে এবং তার পরে যারা এই আমল করবে তাদের জন্য ছওয়াব বা প্রতিদান রয়েছে, অথচ এতে তাদের ছওয়াবের কোন কমতি করা হবে না।’ (মুসলিম, মিশকাত)

মূল বিষয় হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি খুশি প্রকাশ করতে আদেশ মুবারক করেছেন যা শুরু থেকেই ছিল,এখনও আছে, কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে ইনশাআল্লাহ। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পন্থায় হয়ত উদযাপিত হয়ে আসছে। এখন যে কেউ শরীয়তসম্মতভাবে খুশি করলে তা অবশ্যই জায়িজ। আর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করাও সীমাবদ্ধ নয়। তাই অসীম বিষয়ের উৎস অনুসন্ধান করা নিরর্থক।



r  পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেন সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ বা শ্রেষ্ঠ ঈদ?

জবাবঃ

পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন সাইয়্যিদুল আইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আযম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর। এ ব্যাপারে সবিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। জানতে নিচের লিংকগুলো ক্লিক করুনঃ


r  একই দিনে বিলাদত শরীফ ও ওফাত হলে শোক পালন না করে কি ঈদ পালন করা যায় কি?

জবাবঃ

প্রকৃতপক্ষে ইন্তিকালের পর মাত্র তিন দিন শোক প্রকাশ করা যায়, অথচ কোন বিষয়ে খুশি প্রকাশ করা যায় অনন্ত কালের জন্য। তাই একই মুবারক দিনে বিলাদত শরীফ ও বিছাল শরীফ হলেও ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাই যুক্তিসঙ্গত, যা সকলের জন্যই ফরযে আইন।

আর যদিও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিছাল শরীফ উনাকে গ্রহণ করেছেন, তথাপি তিনি পবিত্র রওজা শরীফ উনার মাঝে পর্দার অন্তরালে জীবিত রয়েছেন। তাই শোক প্রকাশের পরিবর্তে বিলাদত শরীফ উনার সম্মানার্থে খুশি প্রকাশ করাই আবশ্যক।




r  পবিত্র ১২ রবীউল শরীফে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবর্তে কেন সীরাতুন্নবী পালন করা যাবে না?

জবাবঃ


পবিত্র ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ যেহেতু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার সাথে সংশ্লিষ্ট বিশেষ সম্মানিত একটি দিন। তাই এই পবিত্র দিনে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাই যুক্তিসংগত, সীরাতুন্নবী নয়। কেননা, সীরাতুন্‌ নবী যদি বলা হয় সীরাতহচ্ছে চরিত্র মুবারক। যেটা আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাচ্ছাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার একটা ছিফত বুঝানো হয়েছে সীরাতুন্‌ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যখন কেউ চরিত্র মুবারক সম্পর্কে আলোচনা করবে তখন সেটা সীরাতুন্‌ নবী হবে। যদি সীরাতুন্‌ নবী বলা হয় তাহলে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছূরতন্‌ নবী অর্থাৎ ছূরত মুবারক কেমন ছিলো? আরো প্রশ্ন আসবে, নূরুন্‌ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার যে নূর মুবারক ছিলো নূরে হাবীবীতাহলে সেটার মাহফিল করতে হবে আলাদাভাবে। এভাবে কেউ সীরাতুন্‌ নবী, কেউ ছূরাতুন্‌ নবী, কেউ মিরাজুন্‌ নবী, কেউ হিজরতুন্‌ নবী, কেউ জিহাদুন্‌ নবী, কেউ রিসালাতুন্‌ নবী, কেউ রিহালাতুন্‌ নবী, কেউ বিছালুন্‌ নবী, কেউ নূরুন্‌ নবী-এর মাহফিল করবে অর্থাৎ প্রতিটি বিষয় আলাদা আলাদা হয়ে যাবে এবং আলাদা আলাদা নাম দিয়ে আলোচনা করতে হবে।

তাই শুধুমাত্র একটি বিষয় আলোচনার জন্য এই বিশেষ দিনকে ধার্য করা ঠিক হবে না। বরং সকল বিষয় নিয়েই আলোচনা করতে হবে। আর যেহেতু পবিত্র দিবসটি বিলাদত শরীফ উনার সাথে সংশ্লিষ্ট, তাই ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত অপর কোন নামে সম্বোধন করা ঠিক হবে না।




r  সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ নিয়ে কি কোন সন্দেহ আছে? আর সঠিক দিবস নিয়ে সন্দেহ হেতু কি পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা অনুচিত হবে?

জবাবঃ

ইখতিলাফ বা মতভেদ দুই রকমের হয়ে থাকে।
(১) শুধু হক্বের জন্য হক্ব তালাশীগণের ইখতিলাফ।
(২) হক্ব তালাশীগণের সাথে নাহক্বপন্থীদের ইখতিলাফ বা মতবিরোধ।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মতভেদ সম্পর্কিত বিষয় যদি পালন করা ঠিক না হয় তাহলে কি আল্লাহ পাক, আল্লাহ পাক উনার হাবীব, ঈমান-ইসলাম সব বাদ দিতে হবে? কস্মিনকালেও নয়। বরং আল্লাহ পাক যে নির্দেশ দিয়েছেন, যেখানে মতভেদ হবে সেখানে যে উলিল আমরের স্বপক্ষে কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর দলীল বেশি হবে, উনারটিই গ্রহণ করতে হবে। সুতরাং, যে ব্যক্তি বলবে মতভেদপূর্ণ বিষয় পালন করা ঠিক নয়, সে ব্যক্তি নিঃসন্দেহে মুরতাদ ও কাফিরের অন্তর্ভুক্ত।

বিস্তারিতঃ


r  পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবীছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি ঈদ হতো এবং সকল ঈদের সেরা ঈদ হতো, তবে কি এখানে ছলাত খুতবা থাকার কথা ছিল না?

জবাবঃ
স্মরণীয় যে, সব ঈদের হুকুম এক রকম নয়। যেমন ঈদুল ফিতরের বিশেষ আমল হলো ঈদের নামাযের পূর্বে ছদকাতুল ফিতর আদায় করা। আর ঈদুল আযহার বিশেষ আমল হলো ঈদের নামাযের পরে পশু কুরবানী করা। যার প্রত্যেকটি ওয়াজিব। এ দুঈদে কিন্তু রোযা রাখা হারাম। কিন্তু জুমুআর দিন ও আরাফার দিন মুসলমানদের এ দুঈদে রোযা রাখা হারাম নয় বরং অশেষ ফযীলতের কারণ। আর এ দুঈদের আমলের মধ্যে কুরবানী কিংবা ছদক্বাতুল ফিতর কোনটিই নেই।
ঈদ হলেই যে খুতবা ও ছলাত থাকতে হবে, তা নয়। বরং একেক ঈদের একেক হুকুম, যা আল্লাহ পাক- উনার কুদরতের অন্তর্ভুক্ত।



r  সাইয়্যিদুল আইয়াদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের রীতি কি খ্রিস্টান বা অমুসলিমদের কাছ থেকে এসেছে?

জবাবঃ

বিশ্ব সমাদৃত ও সুপ্রসিদ্ধ আন নিমাতুল কুবরা আলাল আলামকিতাবে বর্ণিত রয়েছে, হাবীবুল্লাহ হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালে স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার হুকুম বা নির্দেশে খুশি প্রকাশ করেছিলেন ফেরেশতাকুল, খুশি প্রকাশ করেছিলেন জান্নাতের অধিবাসীগণ, এমনকি খুশি প্রকাশ করেছিল বনের পশু-পাখিরাও। খুশি প্রকাশ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত বর্ণনা করেছিলেন এবং উনার প্রতি পাঠ করেছিলেন ছলাত-সালাত ও তাসবীহ তাহলীল।সুবহানাল্লাহ!

একইভাবে মহান আল্লাহ পাক এই উম্মতের প্রতিও নির্দেশ দিয়েছেন, তারা যেন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে।
ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলাম ও মুসলমানদের এ রহমত, বরকত, সাকীনা ও ফযীলতপূর্ণ আমলটি বিধর্মী-বিজাতীয়দের কালচারের সাথে তুলনা করা বা তুলনা দেয়াটা কাট্টা কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।



r  যদি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের জন্মবার্ষিকী পালনের দ্বার উমুক্ত করে, তাহলে কি সারা বৎসর বার্ষিকী পালন ব্যতীত অন্য কোন কাজের জন্য এক মুহূর্তও সুযোগ পাওয়া যাবে?

জবাবঃ

আল্লাহ পাক উনার প্রথম নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি, উনার যমীনে আগমন ও বিদায়ের দিন হওয়ার কারণে জুমুআর দিনকে আল্লাহ পাক এই উম্মতের জন্য ঈদের দিন হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। এমনকি জুমুআর দিনকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও মহান বলে ঘোষণা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে মুসলমানগণ সারা বছরই জুমুআর দিনকে ঈদের দিন হিসেবে পালন করছেন।

নবী-রসূল ও আওলিয়ায়ে কিরামগণ উনাদের এসব অনুষ্ঠান উম্মতের জন্য রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের কারণ। বিশেষ করে আখিরী রসূল, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার আগমন তথা বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করাটা আল্লাহ পাক উম্মতের জন্য ফরয করে দিয়েছেন।

মুসলমান সারা বছরেই ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করবে এটাই কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর নির্দেশ।




r  পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শরীয়তে কি ফযীলতপূর্ণ‌ বিশেষ দিবস ও বার্ষিকী পালনের প্রথা নিষিদ্ধ?

জবাবঃ

নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ, বিছাল শরীফ এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা সংঘটিত দিনসমূহ পালন করা বা তাতে খুশি প্রকাশ করাটা দ্বীন ইসলাম জারী রেখেছে। আদৌ বন্ধ করেনি। যেমনঃ পবিত্র আশুরা শরীফ।



r  পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনকারী ইরাকের ইরবাল শহরের বাদশাহ মুজাফফর আবূ সাঈদ ছিলেন কি মূর্খ বা যিন্দিক ছিলেন?

জবাবঃ

না। তিনি অত্যন্ত পরহেযগার ছিলেন। পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার জন্য উনার প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে উনাকে মূর্খ, যিন্দিক বললে তিনি যদি সেটা না হন, তবে যারা বলবে তাদের উপরই সেটা বর্তাবে।

হাফিযে হাদীছ হযরত ইমাম যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় বিশ্বখ্যাত ইতিহাসগ্রন্থ সিয়ারু আলাম আন নুবালা”-এর ২২তম জিঃ ৩৩৬ পৃষ্ঠায় লিখেন, “বাদশাহ হযরত মালিক মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি নম্র, ভদ্র, বিনয়ী ও উত্তম স্বভাবের অধিকারী ছিলেন। তিনি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের আক্বীদায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি ফক্বীহ ও মুহাদ্দিছগণকে অত্যন্ত ভাল বাসতেন।





r  ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু উপলক্ষে কি কি করা নাজায়িজ?

জবাবঃ

পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশার্থে লোকজন দলবেধে রাস্তায় বের হয়ে তাকবীর ধ্বনি দেওয়া, ছলাত-সালাম, হামদ শরীফ, নাত শরীফ, কাছীদা শরীফ পাঠ করা এসব অবশ্যই জায়িজ ও শরীয়তসম্মত। কিন্তু জশনে জুলুছ তথা রাস্তায় রাস্তায় মিছিল করে ছবি তোলা, ভিডিও করা, ফটকা ফোটানো, রঙ ছিটানো বাজনা বাজানো জায়িজ নয় ।।
কেননা এগুলো ছবি তোলা, ভিডিও করা, রঙ ছিটানো হারাম।






ইনশাআল্লাহ বাকি উত্তরগুলো পরবর্তীতে এবং অতি শীঘ্রই দেওয়া হবে ......